কাজী আঃ হালিম ॥ গত কয়েক দিনের টানা দাবদাহে অতিষ্ঠ বরিশাল নগরীর জনজীবন। প্রচণ্ড রোধ আর ভ্যাপসা গরমে হাঁসফাঁস হয়ে পড়েছে জনজীবন। আবহাওয়া বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বৈশ্বিক উষ্ণায়নের প্রভাবে লঘুচাপ কমেছে বঙ্গোপসাগরে। তাই বৈশাখেও দেখা নেই বৃষ্টির। গত মার্চ মাস থেকে দেশে বৃষ্টি হচ্ছে খুবই কম। এপ্রিলে ছিটেফোঁটা বৃষ্টি হয়েছে। সপ্তাহখানেক ধরে বরিশাল নগরীর তাপমাত্রা থাকছে ৩৫ থেকে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে। এই তাপমাত্রাতেও সমস্যা হতো না যদি স্বাভাবিক বৃষ্টিপাত হতো। বৃষ্টিপাত না হওয়ায় ভূপৃষ্ঠে পুঞ্জীভূত তাপ বাড়িয়ে দিয়েছে গরমের অনুভূতি। করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে দেশব্যাপী লকডাউন চলায় বরিশাল নগরীর অধিকাংশ মানুষ বাসাতেই থাকছেন। তবে শ্রমজীবী মানুষের কষ্ট হয়ে উঠেছে অসহনীয়। যেমন রিকশাচালক, ভ্যান বা ঠেলাগাড়ি চালক তীব্র রোদ আর গরমের কারণে স্বাভাবিক কাজ করতে পারছেন না। নগরীর আমতলা মোড়ের সিটি পার্ক এলাকায় গাছের ছায়ায় বিশ্রামরত অবস্থায় কথা হয় রিকশাচালক জুয়েল এবং আনোয়ারের সাথে। তারা জানান, এই গরমে রিকশা একটু চালালেই শরীর ক্লান্ত হয়ে যায়। বেশি দূরের ভাড়া মারা যায় না। একটা ভাড়া নেওয়ার পর অনেক সময় ধরে রেস্ট না নিলে রিকশা চালানো কষ্ট হয়ে যায়। আগে যে সময়ে ৩০০ থেকে চারশো টাকার ভাড়া মারা যেত এখন সেই সময়ে ১০০ টাকা আয় করাই কঠিন হয়ে পড়েছে। প্রচণ্ড দাবদাহ থেকে বাঁচতে করণীয় জানতে চাইলে শেবাচিমের বিশেষজ্ঞ ডাক্তার বলেন, প্রচণ্ড গরম তার উপরে রোজার সময় চলছে। গরমে আমাদের দেশের মানুষ অনেক ঘামে, শরীর থেকে অনেক পানি বের হয়ে যায়। তাই বেশি করে পানি খাওয়া উচিত। তবে অধিকাংশ মানুষ রোজা থাকায় পানি খেতে পারেন না। লকডাউন থাকায় বাইরে যাওয়া হচ্ছে না, এই গরমে এটা একটা ভালো বিষয়। ‘যারা শ্রমজীবী এবং খেটে খাওয়া মানুষ তারা যেন কাজের মাঝে বিশ্রাম নেয়। টানা বেশি সময় যেন রোদে না থাকে। যারা রোজা রাখতে পারছে না তারা যেন পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান করেন। খুব বেশি খারাপ লাগলে খাবার স্যালাইন খাবে, দ্রুত গাছের ছায়া বা ঠাণ্ডা স্থানে চলে যাবে। যেহেতু গরমে শরীর খুব ঘামে তাই খাবার স্যালাইন এই সময় খুব উপকারী। কয়েকটা দিন যথা সম্ভব রোদ না যাওয়া আর যারা রোজা রাখছেন তাদের সরাসরি রোদে না যাওয়াই ভালো। ’
Leave a Reply