মঙ্গলবার, ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১:৩২ অপরাহ্ন

উপ-সম্পাদক :: দিদার সরদার
প্রধান সম্পাদক :: সমীর কুমার চাকলাদার
প্রকাশক ও সম্পাদক :: কাজী মোঃ জাহাঙ্গীর
যুগ্ম সম্পাদক :: মাসুদ রানা
সহ-সম্পাদক :: এস.এম জুলফিকার
প্রধান নির্বাহী সম্পাদক :: মামুন তালুকদার
নির্বাহী সম্পাদক :: সাইফুল ইসলাম
ব্যবস্থাপনা সম্পাদক :: আবুল কালাম আজাদ
সংবাদ শিরোনাম :
গ্রেনেড হামলার মামলা থেকে তারেক রহমানসহ বিএনপি নেতারা খালাস পাওয়ায় গৌরনদীতে আনন্দ মিছিল বরিশালের বাকেরগঞ্জসহ চারটি থানা এবং উপজেলায় নাগরিক কমিটি গঠন   আওয়ামী লীগ ও শেখ হাসিনা বিহীন বাংলাদেশ শান্তিতে থাকবে, এটা অনেকেরই ভালো লাগেনা-এম. জহির উদ্দিন স্বপন তারেক রহমানের বিজ্ঞ নেতৃত্বের কারণে শেখ হাসিনাকে পালিয়ে যেতে বাধ্য করেছি-এম. জহির উদ্দিন স্বপন গৌরনদীতে দৈনিক যুগান্তরের বিরুদ্ধে বিড়ি শ্রমিক ও ব্যবসায়ীদের প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ মিছিল দুষ্টামিটাও ছিল যেমন স্পর্শকাতর, খেসারাতটাও দিতে হল তেমনি ভয়ঙ্কর বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী সাংস্কৃতিক দলের ৫ সদস্যের বরিশাল মহানগরে আহ্বায়ক কমিটি গঠন গৌরনদীতে ইউএনওর নেতৃত্বে স্বেচ্ছাশ্রমে খালের কুচুরিপানা ও ময়লা পরিস্কার করল বৈষম্য বিরোধী ছাত্ররা বর্নাঢ্য র‌্যালি ও আলোচনা সভার মধ্যদিয়ে গৌরনদীতে জাতীয় সমবায় দিবস পালিত আমাদের নেতা তারেক রহমান একটি সাম্যের বাংলাদেশ গড়তে চান-জহির উদ্দিন স্বপন
পালিত বাবার লালসার শিকার সন্তানসম্ভবা কিশোরী হাসপাতালে

পালিত বাবার লালসার শিকার সন্তানসম্ভবা কিশোরী হাসপাতালে

বরগুনা প্রতিনিধি ॥ অভাব-অনটন দূরে ঠেলে পরম যত্নে লালিত-পালিত হবে মেয়ে। পাবে নতুন বাবা-মা। স্কুল-কলেজে যাবে, যাবে বিশ্ববিদ্যালয়েও। সুশিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে দাঁড়াবে নিজের পায়ে। ভেবেছিলেন ঢাকা শহরের ইট-পাথরে ঘেরা সুবিশাল অট্টালিকার মধ্যে পরম সুখেই থাকবে তার কলিজার ধন। তাই অভাব অনটন থেকে দূরে রাখতে নিঃসন্তান দম্পতির কাছে নিজের সাত বছরের মেয়েকে লালন-পালন জন্য দিয়েছিলেন বরগুনার এক হতদরিদ্র মা। বর্তমানে মেয়েটির বয়স ১৪। কিশোরী বয়সেই পালিত বাবার ধর্ষণে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে সন্তান প্রসবের জন্য বরগুনা সদর হাসপাতালে ভর্তি মেয়েটি। আল্ট্রাসনোগ্রাম রিপোর্টে আগামী ৯ মে শিশুটির সন্তান জন্ম দেওয়ার তারিখ উল্লেখ করা হয়েছে। এ বিষয়ে নির্যাতিত কিশোরীর মা বলেন, স্বামীর সঙ্গে আমার বিচ্ছেদ হয়ে গেছে। এ কারণে আমি খুব অভাবে ছিলাম। ভিটেমাটি বলতে আশ্রয়ন প্রকল্পে সরকারি একটি ঘর। তিন সন্তানকে নিয়েই আমার সেই ঘরে বসবাস। দুবেলা দুমুঠো খাবারের জন্য অন্যের বাড়িতে কাজ করতাম আমি। তাই মেয়ের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ চিন্তা করে বরগুনার আনোয়ার হোসেন আর মোর্সেদা বেগম লায়লা নামের এক নিঃসন্তান দম্পতির কাছে আমার মেয়েকে লালন-পালনের জন্য দেই। মূলত ওই দম্পতি তাদের নিজেদের সন্তান পরিচয়ে আমার মেয়েকে লালন-পালনের জন্য নেন। তিনি আরো বলেন, ‘তারা নিজেদের সন্তানের পরিচয়ে আমার সন্তান লালন-পালনের কথা বলে নিয়ে মেয়ের সর্বনাশ করেছেন। আনোয়ারের ধর্ষণে আমার ১৪ বছরের মেয়ে এখন ৯ মাসের সন্তানসম্ভবা। সন্তান প্রসবের জন্য ওকে বরগুনা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। দরিদ্র হলেও আমারতো সম্মান আছে। লম্পট আনোয়ারের জন্য এখন আমি মানুষকে মুখ দেখাতে পারি না। নিজের সন্তানতুল্য ১৪ বছরের মেয়েকে যে ধর্ষণ করে সন্তানসম্ভবা করতে পারে, আমি তার ফাঁসি চাই। সেই সঙ্গে আমি ক্ষতিপূরণও চাই। ’ এ ঘটনায় মামলা হলে গত ১ ফেব্রুয়ারি আনোয়ার হোসেনকে গ্রেফতার করে আদালতে পাঠায় পুলিশ। পরে আদালত তাকে জেলহাজতে পাঠানোর আদেশ দেন। এরপর থেকে কারাগারেই আছেন আনোয়ার। আনোয়ার বরগুনা পৌরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডের থানাপাড়া এলাকার মরহুম নুর আলম মাস্টারের ছেলে। তিনি ঢাকায় একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ছিলেন। চাকরির সুবাদে স্ত্রী লায়লা এবং পালিত ওই শিশুকন্যাকে নিয়ে তিনি ঢাকায় বসবাস করতেন। এ ঘটনায় দায়ের করা মামলার বাদী নির্যাতিত শিশুটির নানি বলেন, ওর যখন সাত বছর বয়স তখন ওকে নিঃসন্তান দম্পতি আনোয়ার ও লায়লা নিজেদের সন্তান পরিচয়ে লালন-পালনের জন্য নেন। এরপর থেকে ও তাদের বাসায়ই ছিল। তবে মাঝে মাঝে আমাদের সঙ্গে ওর যোগাযোগ হতো। অভাব অনটনের কারণে ওর মা (শিশুটির মা) এখন সৌদি আরবে গৃহকর্ত্রীর কাজ করেন। নয় মাস আগে তিনি দেশে এসেছিলেন। পরে ঢাকা থেকে বরগুনা ফেরার সময় ওকে (শিশুটিকে) বরগুনা নিয়ে আসেন। ও (শিশুটি) যে সন্তানসম্ভবা তা তখনই আমরা বুঝতে পারি। তিনি আরো বলেন, কি হবে ওর ভবিষ্যৎ? কোথায় রাখবে ও এই সন্তান? কিভাবে লালন-পালন করা হবে এই সন্তান? কে নেবে ভরণপোষণের দায়িত্ব? কিছুই তো ভেবে পাচ্ছিনা। নির্যাতিত শিশুটির ভাই জানান, বিষয়টি জানার পর তারা মামলা দায়ের করার সিদ্ধান্ত নেন। পালিত বাবার ধর্ষণে বোনটি এখন নয় মাসের সন্তানসম্ভবা। বাবা পরিচয়ে দীর্ঘদিন ধরে আনোয়ার ওকে ধর্ষণ ও যৌন নির্যাতন করেছে। অথচ ভয়ে কাউকে কিছু বলেনি বা বলার সুযোগ পায়নি তার বোন। তিনি আরো বলেন, আমরা খুব গরিব ও অসহায়। এ জন্যই ওকে আনোয়ার এবং লায়লার কাছে লালন-পালনের জন্য দিতে রাজি হয়েছিলাম। আর কয়েকদিন পরেই আমার কিশোরী বোন সন্তান প্রসব করবে। সেই সন্তান লালন-পালন করার কোনো ক্ষমতাই আমাদের নেই। আদালতে মামলা করার পর খরচ দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে আমাদের। আসামিরা খুব প্রভাবশালী হওয়ায় এখনও আমাদের অনবরত হুমকি দিয়ে যাচ্ছে। এ বিষয়ে বরগুনা সদর হাসপাতালের নারী ওয়ার্ডের ওয়ার্ড ইনচার্জ মোসা. লাইজু আক্তার বলেন, সন্তান প্রসবের জন্য শিশুটিকে গত ২৭ এপ্রিল বরগুনার সদর হাসপাতালের প্রসূতি ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়েছে। আল্ট্রাসনোগ্রাম রিপোর্টে ওর সন্তান প্রসবের তারিখ ৯ মে উল্লেখ করা হয়েছে। শিশুটি এখন পর্যন্ত সুস্থ এবং স্বাভাবিক আছে জানিয়ে তিনি আরো বলেন, আমরা প্রথমে স্বাভাবিকভাবে সন্তান প্রসবের চেষ্টা করবো। কিন্তু তা যদি সম্ভব না হয়, তাহলে সিজার (অপারেশন) করা হবে। এ বিষয়ে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বরগুনা সদর থানায় কর্মরত উপ-পরিদর্শক (এসআই) নূরে জান্নাত কেয়া বলেন, বিভিন্ন সময়ে ধর্ষণের অভিযোগে মামলায় আনোয়ার হোসেনকে ও ধর্ষণে সহযোগিতা করার জন্য তার স্ত্রী মোর্সেদা বেগম লায়লাকে আসামি করা হয়েছে। ইতোমধ্যেই আমরা আনোয়ারকে গ্রেফতার করেছি। তিনি আরো বলেন, ওই শিশুটি সন্তান প্রসব করলে সেই সন্তানের ডিএনএ পরীক্ষা করা হবে। তারপর এ মামলার তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করা হবে। এরপর মামলার বিচার কাজ শুরু হবে।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..



Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




© All rights reserved © 2017 Dokhinerkhobor.Com
Desing & Developed BY ThemesBazar.Com