বিনোদন ডেস্ক ॥ ভারতের পশ্চিমবঙ্গে তৃতীয়বারের মতো সরকার গঠন করতে চলেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই খুশিতে তৃণমূল কংগ্রেসকে অভিনন্দন জানালেন এই দলের সাংসদ ও টালিউড তারকা মিমি চক্রবর্তী। বললেন সেই প্রবাদ, ‘হোয়াট বেঙ্গল থিংকস টুডে, ইন্ডিয়া থিংকস টুমরো। আনন্দবাজারকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে মিমি বললেন, ‘বাংলা আজ যা ভাবে, ভারত তা ভাবে আগামীকাল। মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী (মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়) সেটিই আবার প্রমাণ করলেন।’ বিজেপিকে খোঁচা দিতেও ভোলেননি তিনি। বলেছেন, ‘কেন্দ্রের প্রথম সারির নেতা, মন্ত্রী, আমরা, ক্রিকেটার, প্রশাসনের হর্তাকর্তারা নিজেদের দায়িত্ব ভুলে দিনের পর দিন বাংলায় থেকেছে, নির্বাচনী প্রচারণা চালিয়েছে একজন নারীকে হারাতে। পারেনি।’ টালিউড তারকা ও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব মিমি চক্রবর্তী, দেব আর নুসরাত নির্বাচনে না দঁড়িয়েও তৃণমূলের হয়ে প্রচারণা চালিয়েছেন। তাঁদের পরিশ্রম সফল। যে জলপাইগুঁড়িতে কখনো তৃণমূল জিততে পারেনি, এবার সেটাও হলো। পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা নির্বাচনে বড় জয় পেয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। তবে নন্দীগ্রামে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই করেও হেরে গেছেন দলটির নেত্রী মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে মুখ্যমন্ত্রী হতে বাধা নেই তাঁর। কিছু নিয়মের মধ্য দিয়ে যেতে হবে। হেরে গেছেন বাবুল সুপ্রিয়, শ্রাবন্তী চট্টোপাধ্যায়, সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়, পায়েল সরকার, রুদ্রনীল ঘোষ, অঞ্জনা বসু, সায়নী ঘোষ, পার্নো মিত্র, দেবদূত ঘোষ, তনুশ্রী চক্রবর্তী, পাপিয়া অধিকারী বা যশ দাশগুপ্ত—তালিকায় রয়েছে সব শিবিরের তারকা প্রার্থীরই নাম। তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী হয়ে জয়ী হয়েছেন বারাসাতে চিরঞ্জিৎ চক্রবর্তী, চণ্ডীপুরে সোহম চক্রবর্তী, উত্তরপাড়ায় কাঞ্চন মল্লিক, মেদিনীপুরে জুন মালিয়া, বারাকপুরে রাজ চক্রবর্তী, দমদমে ব্রাত্য বসু আর বিজেপির হয়ে লড়ে জয় পেয়েছেন খড়গপুর সদর থেকে হিরণ চট্টোপাধ্যায় এবং আসানসোল দক্ষিণ থেকে অগ্নিমিত্রা পাল। কলকাতার বেহালা পশ্চিমে তৃণমূল কংগ্রেসের ‘হেভিওয়েট প্রার্থী’ পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের কাছে হেরে গেছেন বিজেপির শ্রাবন্তী। তৃণমূল কংগ্রেসের বর্ষীয়ান নেতা শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়ের কাছে ২৮ হাজারের বেশি ভোটের ব্যবধানে পরাজিত হয়েছেন রুদ্রনীল। একই দলের টিকিটে ভোটে লড়াইয়ে নেমে পায়েল সরকার বেহালা পূর্বতে হেরে গেছেন। জিতেছেন তৃণমূলের আরেক প্রার্থী সোহম চক্রবর্তী। এগিয়ে রয়েছেন তৃণমূল প্রার্থী কাঞ্চন মল্লিকও। শ্রীলেখা জানিয়েছেন, দল হারলেও তিনি বামের সমর্থক ছিলেন, আছেন আর থাকবেন। বিজেপি প্রার্থী প্রবীর ঘোষালের চেয়ে ৩৮ হাজার ভোট বেশি পেয়ে জয়ী হয়েছেন অভিনয়শিল্পী কাঞ্চন মল্লিক। উত্তরপাড়া এখন অভিনেতা-বিধায়ক কাঞ্চন মল্লিকের দখলে। অভিনেতা থেকে নেতা বনে যাওয়া কাঞ্চনের তাই রাজ্যের সবার কাছে কৃতজ্ঞতার শেষ নেই। অকপটে এই অভিনয়শিল্পী সংবাদমাধ্যমের কাছে বলেছেন, ‘এত দিন আপনারা আমাকে শুধু একজন অভিনেতা হিসেবে দেখেছেন। অনেক ভালোবেসেছেন। জানি, আগামী দিনেও একইভাবে ভালোবাসবেন। ২০২১-এ আমার নতুন জীবন। মা-মাটি-মানুষের হাত ধরে রাজনীতিতে পা রেখেছি। সেখানে সফল হতে সবার ভালোবাসা ও আশীর্বাদের প্রয়োজন ছিল। জনগণ আমাকে ফেরায়নি।’ পরিচালনায় নাম কুড়োনো রাজ চক্রবর্তী রাজনীতিতে এসেও বাজিমাত করেছেন। লড়াইটা অবশ্য মোটেও সহজ ছিল না। বিজেপির হেভিওয়েট প্রার্থী চন্দ্রমনি শুক্লাকে হারিয়ে জয়ী হয়েছেন রাজ চক্রবর্তী। জয় প্রসঙ্গে তিনি বলেছেন, ‘বাংলার মানুষ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেই চায়। সেটাই আবার প্রমাণ হয়ে গেল।’
Leave a Reply