স্টাফ রিপোর্টার, বরিশাল ॥ স্থায়ী বেঁদে পল্লীর কথিত সর্দার মেনে না নেওয়াকে কেন্দ্র করে নিজ পল্লীর অপর বাসিন্দাদের বসত ঘরে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর, মারধর ও লুটপাটের ঘটনায় দায়ের করা মামলায় দুই দফায় অভিযান চালিয়ে ১৬ জনকে গ্রেফতার করেছে জেলার গৌরনদী মডেল থানা পুলিশ।এ ঘটনার পর গ্রেফতার আতঙ্কে জেলার গৌরনদী ও কালকিনি উপজেলার স্থায়ী বেঁদে পল্লীতে পুরুষ শুন্য হয়ে পরেছে। সোমবার সকালে গ্রেফতারকৃতদের আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়। গ্রেফতারকৃতরা হলো-গৌরনদী পৌরসভার ২নং ওয়ার্ড টরকীর চর এলাকার স্থায়ী বেঁদে পল্লীর বাসিন্দা ডালিম সরদার, বোরহান সরদার, জজ সরদার, কামরুল হাওলাদার, রুহুল আমীন ঘরামী, মন্টু সরদার, হেজবুল সরদার, পান্না মিয়া সরদার, অলি সরদার, বাগু সরদার, মামুন, ঠান্নু ঘরামী, জিয়া সরদার, ছাবেদ সরদার, টপি সরদার ও দুখু সরদার। পুলিশের গ্রেফতার আতঙ্কে আত্মগোপন করেছে হামলা চালিয়ে মারধরসহ লুটপাটের ঘটনার মূলহোতা স্থায়ী বেঁদে পল্লীর কথিত সর্দার নাসির সরদার ও তার সহযোগি জাহান্টার সরদার, পলাশ সরদার, দিপু সরদার ও পিকু সরদার। তাদেরও গ্রেফতারের জন্য পুলিশের অভিযান চলছে দাবি করে গৌরনদী মডেল থানার ওসি (তদন্ত) মোঃ তৌহিদুজ্জামান জানান, গত ৩০ এপ্রিল টরকীর চর স্থায়ী বেঁদে পল্লীর বসতঘর ভাঙচুর, মারধর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় ওই পল্লীর ক্ষতিগ্রস্থ বাসিন্দা ঝন্টু সরদার বাদি হয়ে থানায় মামলা দায়ের করেছেন। রবিবার দুপুরে প্রথম দফায় অভিযান চালিয়ে তিনজনকে ও পরবর্তীতে রাতে দ্বিতীয় দফায় অভিযান চালিয়ে মামলার ১৩জন আসামিকে গ্রেফতার করা হয়। উল্লেখ, টরকীর চর এলাকার স্থায়ী বেঁদে পল্লীর বাসিন্দা নাসির সরদার পল্লীর কতিপয় বাসিন্দাদের নিয়ে সংঘবদ্ধ একটি গ্রুপ তৈরি করে দীর্ঘদিন থেকে নিজেকে ওই পল্লীর কথিত সর্দার দাবি করে আসছে। তারা ওই পল্লীর সাধারণ বাসিন্দাদের কাছে মাসিক হারে চাঁদা দাবি করে আসছিলো। তাকে (নাসির) সর্দার মানতে অপরাগতা প্রকাশ করেন পল্লীর বাসিন্দা স্বপন সরদারসহ অন্যান্যরা। এনিয়ে কয়েক বছর থেকে নাসির সরদার ও স্বপন সরদারের গ্রুপের মধ্যে বিরোধ চলে আসছে। তারই ধারাবাহিকতায় প্রভাব বিস্তারের জন্য গত ৩০ এপ্রিল বেঁদে পল্লীর বাসিন্দা স্বপন সরদারের সমর্থকদের বসত ঘরে সশস্ত্র হামলা চালিয়ে ভাংচুর, মারধর ও লুটপাট করে কথিত সর্দার নাসির ও তার সহযোগিরা। অভিযোগ রয়েছে, নাসির সরদার ও তার সহযোগিরা স্থায়ী বেঁদে পল্লীতে দীর্ঘদিন থেকে মাদকের রমরমা বাণিজ্যসহ মানুষকে অচেতন করার বিষাক্ত দ্রব্য দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন চক্রের কাছে সরবরাহ করে হঠাত করে আঙুল ফুলের কলাগাছ বনে গেছেন। তারা একেকজনে আলাদাভাবে ওই পল্লীতে গড়ে তুলেছেন কোটি টাকা ব্যয়ে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত আলিশান বাড়ি। স্থানীয় কতিপয় রাজনৈতিক নেতার ফাঁয়দা হাসিলের জন্য কৌশলে ওই পল্লীর প্রায় পাঁচ শতাধিক বাসিন্দা গৌরনদী পৌরসভার ২নং ওয়ার্ডের ভোটারও হয়েছে। গৌরনদী মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ আফজাল হোসেন জানান, স্থায়ী বেঁদে পল্লীর একটি অংশ কালকিনি এবং অপর একটি অংশ গৌরনদীর মধ্যে রয়েছে। সেখানে হামলা ও সংঘর্ষের কোন ঘটনা ঘটলে নিকটবর্তী হওয়ায় আইন শৃঙ্খলা রক্ষায় গৌরনদী থানা পুলিশ সহযোগিতা করে আসছে। পরবর্তীতে এধরনের সংঘর্ষরোধে কালকিনি থানা পুলিশকে কঠোর অবস্থানে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। তিনি (ওসি) আরও জানান, গৌরনদীর শান্ত পরিবেশকে কেউ অশান্ত করার চেষ্টা করলে তাদেরকে কোনরকম ছাড় দেওয়া হবেনা।
Leave a Reply