মো: লুৃৎফুল হাসান রানা, কলাপাড়া প্রতিনিধি ॥ কুয়াকাটায় রাখাইন মহিলা মার্কেটের আদিবাসি রাখাইন নারী ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের অর্থ উপার্জন কোভিড-১৯ এর প্রভাবে বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে রাখাইন নারী প্রধান কেন্দ্রীক পরিবারের সদস্যদের জিবন-জীবিকা বিপদাপন্ন হয়ে পড়েছে। দেখা দেিয়ছে তীব্র অর্থ সংকট। চরম হতাশায় দিনপার করছে এখানকার ৯০ভাগ ক্ষুদ্র রাখাইন নারী ব্যবসায়ীরা। মূলধন হারিয়ে ভূগছে পুজি সংকটে। জিবন জীবিকার তাগিদে কারো কারো আবার আত্বীয় স¦জন কিংবা শুভাকাঙ্খিদের কাছ থেকে নিতে হয়েছে ঋণ। সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, কুয়াকাটার জিরো পয়েন্ট থেকে ১০০ গজ দূরে ২০০৩ সালে বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক বরাদ্দ দেয়া ১৪টি দোকান কুয়াকাটা রাখাইন মহিলা মার্কেট। পর্যটকের পছন্দের তালিকায় প্রথম এই রাখাইন মহিলা মার্কেট। করোনার আগে ছিল পর্যটকের উপচেপড়া ভীড়। রাখাইন নারী ব্যবসায়ীদের ছিল ব্যস্থতা। সকাল থেকে রাত অবধি ছিল বেচা কেনার ধুম। এখন করোনার প্রভাবে সারি সারি দোকানে ঝুলছে তালা। কোথাও নেই কোন মানুষের আনাগোনা। চারিদিকে সুনশান নিরবতা। এক মৃত্যপুরিতে পরিনত হয়েছে গোটা পর্যটন কেন্দ্র কুয়াকাটা। কাজে ব্যস্থ থাকা নারী ব্যবসায়ীরা বাড়িতে বসে পার করছে অলস সময়। মাঝে মাঝে দোকান খুলে ময়লা পরিস্কার করার পাশাপাশি দেখে যায় মালামালাগুলো ঠিক আছে কিনা। মার্কেটে উপস্থিত চামেন স্টোরের স্বত্তাধীকারী চামেন বলেন, করোনার আগে বন্ধের দিনগুলোতে আমার লক্ষ টাকার উপরে বেচা বিক্রি হত আজ সেখানে বসে বসে জমানো টাকা খেয়ে ফেলছি। জমানো টাকা অনেক আগেই শেষ হয়ে গেছে এখন পুজিও শেষ হওয়ার পথে। তার দাবি সরকার যেন কম সুদে ব্যাংক লোন দিয়ে আবার ঘুরে দাঁড়াতে সাহায্য করে। একই মার্কেটের আরেক রাখাইন ব্যবসায়ী মাচান স্টোরের মালিক মাচান বলেন, আমার পুরো পরিবার এই দোকানের আয়ের উপর নির্ভরশীল। উপার্জনের ক্ষেত্রটি পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় পরিবারের সদস্যদের নিয়ে খুব কষ্টে দিন কাটাচ্ছি। আমরা কোন ধরনের সরকারী সহায়তা পাইনা। শুনছি সরকার নাকি আমাদের অনেক কিছুই দেয়, আমরাতো কিছুই পাইনা। এবারে সরকার যদি আমাদের দিকে না তাকায় তাহলে আমরা নতুন করে ব্যবসা শুরু করতে পারবোনা। কুয়াকাটা রাখাইন মহিলা মার্কেট ও মন্দির কমিটিরি সম্পাদক লুমা রাখাইন বলেন, রাখাইন নারী ব্যবসায়ীরা বর্তমানে খুব কষ্টে দিন পার করছে। এখানকার অধিকাংশ পরিবারই নারীদের আয়ের উপর নির্ভর। আয়ের একমাত্র পথটি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় পথে বসে গেছে তারা। রাখাইন নারীদের পূর্বের অবস্থানে ফিরিয়ে নিতে হলে সরকারী প্রণোদনার আওতায় নিয়ে আসতে হবে। না হয় বন্ধ হয়ে যেতে পারে কুয়াকাটা রাখাইন মহিলা মার্কেটের অনেক দোকান। শিল্প সহায়ক কেন্দ্র-বিসিক, পটুয়াখালীর সহকারী মহাব্যবস্থাপক মোহাম্মাদ মনির হোসেন বলেন, করোনা ভাইরাস প্রাতুর্ভাবজনিত পরিস্থিতিতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন কুয়াকাটার নারী ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা। তাদেরকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ৪% লোনের ব্যবস্থা করা হবে।
Leave a Reply