ভোলা প্রতিনিধি ॥ ঈদ উদযাপন করতে পারছে না ভোলার ৫ লাখ জেলে পরিবারের সদস্যরা। মৌসুম শুরু না হওয়ায় নদীতে চলছে মাছের আকাল এছাড়া করোনার কারণে বিকল্প কর্মসংস্থানের অভাব আর সরকারের সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচিতে অন্তর্ভুক্ত হতে না পারায়, এবার ঈদ উদযাপন তো দূরের কথা সংসার পরিচালনা করাই তাদের পক্ষে অসম্ভব হয়ে পড়েছে। ২২লাখ জনগোষ্ঠী অধ্যুষিত দ্বীপজেলা ভোলায় পাঁচ লাখেরও বেশি মানুষ তাদের জীবিকা নির্বাহ করছে মাছ শিকার করে। নদীতে মাছ থাকলে চলে তাদের সংসারের চাকা। আর না থাকলে দিন কাটে খেয়ে না খেয়ে নিদারুণ কষ্টে। এবার এমনই এক ভয়াবহ পরিস্থিতির কবলে পড়েছেন ভোলার জেলেরা। জেলে পল্লীগুলোতে ঘুরে এমন চিত্রই দেখা গেছে। জেলেদের চোখে মুখে অভাবের তারনায় হতাশার ছাপ বিরাজ করছে। তাদের মতে গত ২০-২৫ বছরে এমন অভাব আগে আর কখনও দেখেননি তারা। মাত্র দুই সপ্তাহ গেলো নদী থেকে মাছ শিকারের নিষেধাজ্ঞা উঠেছে। কিন্তু তার ধকল কাটতে না কাটতেই আবার দেখা দিয়েছে প্রচণ্ড তাপদাহ এবং জলবায়ুর বিরূপ প্রভাব ও মৌসুম আসতে আরো কিছুটা সময় বাকি থাকায় নদীতে চলছে মাছের আকাল। এছাড়া করোনার প্রভাবে বিকল্প কর্মসংস্থানের সুযোগ পাচ্ছে না জেলেরা। সব মিলিয়ে অভাব এখন জেঁকে বসেছে জেলেদের জীবনে। সরকারের পক্ষ থেকে জেলেদের জন্য নেই কোনো প্রণোদনা। ফলে ঈদ উদযাপন এবার তাদের কাছে রীতিমতো এক দুঃস্বপ্ন। জেলে রুহুল আমিন মাঝি বলেন, দুই মাস বন্ধ থাকার পর মাছ ধরা শুরু করছি, এখন নদীতে কোন মাছ নাই। করোনার কারণে কোন কাজও নাই। ঈদে বউ, বাচ্চাদেরকে জামাকাপড় তো দূরের কথা একটু সেমাই কিনে দেওয়ার মত অবস্থা নাই। জেলে পরিবারের সদস্য ফাতেমা বেগম জানান, নদীতে মাছ থাকলে ঈদ ভালো কাটতো।নদীতে মাছ নাই এজন্য ঈদ তো দূরের কথা সংসারী তো ঠিকমত চলছে না। খেয়ে না খেয়ে দিন কাটাতে হচ্ছে। ভোলার জেলা মৎস্য কর্মকর্তা এস এম আজহারুল ইসলাম জানিয়েছেন, জেলেদের জন্য ঈদ উপলক্ষে কোন প্রণোদনার ব্যবস্থা রাখা হয়নি।তবে জাটকা ধরা থেকে বিরত থাকার জন্য এপ্রিল-মে মাসে জেলার ৮৬ হাজার জেলেকে ৮০ কেজি হারে যে চাল দেওয়া হয়েছে, তা দিয়ে জেলেরা ঈদ উদযাপন করতে পারবে। আগামী ঈদগুলো যাতে জেলেরা সঠিক ভাবে উদযাপন করতে পারে সেজন্য মৎস্য বিভাগ তাদের পাশে থাকবে -এমনটাই প্রত্যাশা ভোলার জেলে এবং মৎস্য ব্যবসায়ীদের।’’
Leave a Reply