বাকেরগঞ্জ প্রতিনিধি ॥ বাকেরগঞ্জের পাদ্রীশিবপুর ইউনিয়নের রঘুনাথপুর, দুর্গাপুর এবং গাজীর হাটসহ বেশ কয়েকটি এলাকায় আইনশৃঙ্খলার ব্যাপক অবনতি ঘটেছে। এতে সৃষ্টি হয়েছে ভূতুরে পরিস্থিতির। উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায় স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। গত ১০দিনে এ পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। এপর্যন্ত কমপক্ষে ৬টি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এসব রক্তাক্ত সংঘর্ষের ঘটনায় গুরতর আহত হয়েছেন অর্ধশতাধিক মানুষ। প্রায় সবগুলো সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় স্থানীয় থানায় অভিযোগ জমা পড়লেও কোনো সুরাহার আলামত পাওয়া যাচ্ছে না। একারণে সংঘাত সৃষ্টিকারী সন্ত্রাসীরা আশঙ্কাজনক বেপরোয়া হয়ে ওঠায় প্রায় সকল শ্রেণি-পেশার মানুষের স্বাভাবিক জীবন-যাপন হারিয়ে গেছে। অনেকে আত্মরক্ষার জন্য পাল্টা আক্রমন করে প্রতিবাদ-প্রতিরোধের পথ বেছে নেয়ার পরিকল্পনা করছেন। এতে ভয়াবহ রক্তক্ষয়ি সংঘর্ষ ছাড়াও খুনোখুনির আশঙ্কা করা হচ্ছে। স্থানীয় সূত্রমতে, উপজেলার পাদ্রীশিবপুর ইউনিয়নের দুর্গাপুর গ্রামের সোহরাব মুন্সির পুত্র উজ্জ্বল মুন্সি (২০) একাধিক মামলা এবং আদালতের ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি। এই দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় মাদক ব্যবসা করে আসছে। মাদক ব্যবসা এবং সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের অন্যতম সহযোগী হচ্ছে উজ্জ্বলের ছোট ভাই শাকিল মুন্সি। এছাড়া ৪টি গ্রামের কমপক্ষে অর্ধশত শিশুশিক্ষার্থীকে মাদকাসক্ত বানানো হয়েছে। এসব শিশুদের দিয়ে মাদক পরিবহন এবং বিকিকিনি করতে কৌশলে এই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হয়েছে। এমতাবস্থায় পিতা-মাতা ছাড়াও সংশ্লিষ্ট এলাকার সুশীল ব্যক্তিদের মধ্যেও লক্ষ্য করা গেছে ত্রাহিদশা। সূত্রের দাবী অনুযায়ি, এই চক্রটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে মাদক বিক্রি এবং সেবনের নিরাপদ আস্তানা গড়ে তুলেছে। এম. এ মালেক কলেজ, ছোট রঘুনাথপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়, আব্দুল গণি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং বেগম জহির উদ্দিন সরকারি প্রথমিক বিদ্যালয় মাঠপ্রাঙ্গণে প্রতিদিনই বসে সন্ত্রাসীদের মেলা। সন্ধ্যা থেকে শুরু করে গভীর রাত পর্যন্ত চলে মাদক সেবন, বিক্রিসহ নানা অপকর্ম। এছাড়া এই আস্তানা টর্চারসেলের মতো ব্যবহার করছে এই ভয়ঙ্কর চক্রটি। ওই টচার্রসেলে নির্মম নির্যাতন করা নূর মোহাম্মদ মুন্সির পুত্র শাহাবুদ্দিন মুন্সি, নূর আলম হাওলাদারের পুত্র মিজান হাওলাদার ও মজিবর মুন্সির পুত্র ইমরান মুন্সিসহ অন্তত ৫০জন আহতের ঘটনা ঘটেছে। তাদেও প্রত্যেকের অবস্থা গুরুতর মাদক ব্যবসায় শিশুদের ব্যবহারের প্রতিবাদ করায় সন্ত্রাসী উজ্জ্বলবাহিনী বর্বরতার এই উদাহরণ সৃষ্টি করে। প্রাণভিক্ষা চাওয়ার পর কুপিয়ে ও পিটিয়ে মাথা এবং পা ভেঙ্গে ছেড়ে দেয়া হয় ভুক্তভোগীদের। শিশু-কিশোরসহ সাধারণ মানুষের মধ্যে এলাকাজুড়ে আতঙ্কের পাশপাশি উত্তেজনা বিরাজ করছে। এ বিষয়ে বাকেরগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ আলাউদ্দিন মিলন অভিযোগ পাওয়ার কথা উল্লেখ করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানান।
Leave a Reply