দখিনের খবর ডেস্ক ॥ সাংবাদিক রোজিনা ইসলামের অবিলম্বে মুক্তি দাবি করে বাম গণতান্ত্রিক জোটের নেতৃবৃন্দ বলেছেন, বর্তমান ভোট ডাকাতির সরকার পুলিশ ও আমলাদের মাধ্যমে ২০১৮ সালে দিনের ভোট রাতে করে ক্ষমতায় এসেছে। ফলে দেশে আমলা পুলিশের দৌরাত্ম সীমা ছাড়িয়েছে। যার প্রকাশ ঘটেছে সাংবাদিক রোজিনার উপর সচিবালয়ে নির্যাতনের ঘটনায়। মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দুর্নীতির ঘটনা সকলের জানা। এই মন্ত্রণালয়ের দুর্নীতি নিয়ে রোজিনা ইসলামের কয়েকটি অনুসন্ধানী রিপোর্ট প্রকাশ হওয়ায় দুর্নীতিবাজ আমলারা ক্ষিপ্ত হয়ে মিথ্যা অভিযোগে তার বিরুদ্ধে মামলা দিয়েছে। রোজিানার উপর নির্যাতনকারী অতিরিক্ত সচিবসহ জড়িত সকলের গ্রেপ্তার ও শাস্তি এবং ব্যর্থ স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও সচিবের পদত্যাগ দাবি করেন নেতৃবৃন্দ। নেতৃবৃন্দ সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতার কণ্ঠরোধকারী ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলের দাবি জানান। বিবৃতিদাতারা হলেন- বাম গণতান্ত্রিক জোট কেন্দ্রীয় পরিচালনা পরিষদের সমন্বয়ক বজলুর রশীদ ফিরোজ এবং জোটের কেন্দ্রীয় পরিচালনা পরিষদের সদস্য সিপিবি সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম ও সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ শাহ আলম, বাসদ সাধারণ সম্পাদক খালেকুজ্জামান, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, বাসদ (মার্কসবাদী)’র সাধারণ সম্পাদক মুবিনুল হায়দার চৌধুরী, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লীগের সাধারণ সম্পাদক মোশাররফ হোসেন নান্নু, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধারণ সম্পদক মোশরেফা মিশু, ওয়ার্কার্স পার্টি (মার্কসবাদী)’র সাধারণ সম্পাদক ইকবাল কবির জাহিদ, সমাজতান্ত্রিক আন্দোলনের আহ্বায়ক হামিদুল হক। বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি)’র সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম ও সাধারণ সম্পাদক কমরেড মো. শাহ আলম এক বিবৃতিতে সাংবাদিক রোজিনা ইসলামের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলা অবিলম্বে প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন। নেতৃবৃন্দ বলেন, এই করোনাকালে অনুসন্ধানী সাংবাদিকদের কল্যাণে দেশবাসী স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য বিভাগ, হাসপাতাল, মেডিক্যাল কলেজে সংঘটিত হাজার হাজার কোটি টাকার দুর্নীতির খবর জানতে পেরেছে। কোটিপতি পিয়ন, শত কোটি টাকার আমলা, হাজার কোটি টাকার ঠিকাদারের কাহিনী প্রকাশিত হয়েছে। নেতৃবৃন্দ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দুর্নীতি উন্মোচনের জন্য সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতির নেতৃত্বে স্বাধীন তদন্ত কমিশন গঠন করার আহ্বান জানান। তদন্তের মাধ্যমে দুর্নীতিবাজ আমলা-ঠিকাদারদের সকল স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করার আহ্বান জানান। বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ সাধারণ সম্পাদক খালেকুজ্জামান এক বিবৃতিতে সাংবাদিক রোজিনা ইসলামের নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করে বলেছেন, এ ঘটনা স্বাধীন সাংবাদিকতার স্বাধীনতার জন্য মারাত্মক হুমকী স্বরূপ। বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের দুর্নীতির বিশাল চিত্র জনসম্মুখে প্রকাশিত হয়েছে। ইতিমধ্যে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব জেবুন্নেসার অবৈধ সম্পদের বিবরণ স্যোসাল মিডিয়ায় প্রকাশিত হয়েছে; যেখানে কানাডায় তার ৩টি, সাউথ লন্ডনে ১টি, ঢাকায় ৪টি বাড়ী এবং গাজীপুরে ২১ বিঘা সম্পত্তি ও ব্যাংকে নামে বেনামে ৮০ কোটি টাকার এফডিআরের কথা উল্লেখ রয়েছে। তিনি ওই আমলার সম্পদ অর্জনের বিষয়ে যথাযথ তদন্তের মাধ্যমে ব্যবস্থা গ্রহণ ও রোজিনাকে নির্যাতনের অপরাধে তাকে গ্রেপ্তারের দাবি জানান। বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক পৃথক বিবৃতিতে বলেছেন, অনুসন্ধিৎসু সাংবাদিকতা বন্ধে ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দুর্নীতি ঢেকে রাখতেই রোজিনা ইসলামকে নিপীড়ন করে সাজানো হয়রানিমূলক মামলায় তাকে জেলে পাঠানো হয়েছে। রোজিনা ইসলামের গ্রেপ্তার ও জামিন নামঞ্জুরের ঘটনা স্বাধীন সাংবাদিকতার পরিপন্থী। তিনি রোজিনা ইসলামের মুক্তি ও তাকে হেনস্তাকারী কর্মকর্তাদেরকে আইনের আওতায় নিয়ে আসার দাবি জানিয়েছেন।
Leave a Reply