উজিরপুর প্রতিনিধি ॥ বরিশালের উজিরপুরে চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রীকে ঘরে একা পেয়ে জোরপূর্বক ধর্ষণ করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ধর্ষকের দৃষ্টান্তমুলক শাস্তির দাবীতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে এলাকাবাসী। পুলিশ ধর্ষককে গ্রেফতার করেছে। ভুক্তভোগী সুত্রে জানা যায় উজিরপুর পৌরসভার ৭নং ওয়ার্ড হানুয়া বারপাইকা গ্রামের জয়নাল হাওলাদারের ছেলে ৪ সন্তানের জনক লম্পট জালাল হাওলাদার(৩৫) একই গ্রামের হতদরিদ্র কাইয়ুম সরদার(৪০) এর নাবালিকা মেয়ে চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ুয়া ছাত্রীকে ১৮ মে মঙ্গলবার বেলা ১১টায় ঘরে একা পেয়ে প্রথমে পানি খাওয়ার কথা বলে বসতঘরে প্রবেশ করে সুযোগ নিয়ে ওই ছাত্রীকে মোবাইল ফোনে অশ্লিল ভিডিও দেখায় এবং বিভিন্ন ভয়ভীতি ও হুমকী দিয়ে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। এসময় ছাত্রীর ডাকচিৎকার শুনে স্থানীয়রা ঘটনাস্থলে আসার টের পেয়ে বিষয়টি কাউকে জানালে ছাত্রীকে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে সটকে পড়ে ওই লম্পট। জানা যায়, ছাত্রীর পরিবার সরকারি ভূমিহীনদের প্রাপ্ত জমিতে বসবাস করছে। এমনকি হতদরিদ্র বাবা রাজমিস্ত্রির কাজ করে থাকে। মাতা অন্যের বাড়ীতে বাড়ীতে গিয়ে ঝিয়ের কাজ করে কোন রকম স্বামী-স্ত্রী মিলে দুমুঠো আহার যোগাচ্ছে। এ ঘটনা একটি প্রভাবশালী মহল ধামাচাঁপা দেয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু পরিশেষে মিশন ব্যর্থ হয়। বিষয়টি এলাকায় চাউর হলে বিক্ষোভে উত্তাল হয় এলাকা। ১৯ মে দুপুর ১টায় ভিকটিমের বসতবাড়ীর সম্মুখে মাঠে স্থানীয় মিরাজ হাওলাদারের নের্তৃত্বে অভিযুক্ত ধর্ষকের দৃষ্টান্ত মুলক শাস্ত্রির দাবীতে ঘন্টা ব্যাপী বিক্ষোভ মিছিল করেছে শতাধিক নারী-পুরষ। এসময় উপস্থিত ছিলেণ রিয়াজ হাওলাদার, যুবায়ের মোল্লা, সজিব সিকদার, ইলিয়াস সিকদার, শাহিন মোল্লা, রেবা বেগম, শারমিন আক্তার, রেশমা বেগম, বকুল বেগম, ভুক্তভোগী ছাত্রীর পিতা কাইয়ুম সরদার, মাতা শাহানাজ বেগম, দাদী ফরিদা বেগমসহ শতাধিক মানুষ। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন উজিরপুর মডেল থানার ওসি তদন্ত মাইনুল ইসলাম, সহকারি পুলিশ সুপার উজিরপুর সার্কেল আবু জাফর মোঃ রহমত উল্লাহ। ব্যপক অভিযান চালিয়ে বিকেলে দাসেরহাট থেকে পুলিশ ধর্ষক জালালকে গ্রেফতার করেছে। ছাত্রীর পিতা কাইয়ুম সরদার সাংবাদিকদের কান্নার কন্ঠে বলেন- আমার নাবালিকা মেয়ের সর্বনাশ করেছে নারীলোভী জালাল হাওলাদার ওই নরপিশাচের বিচার চাই। তারা প্রভাবশালী হওয়ায় আমাদের বিভিন্ন ভয়ভীতি ও হুমকী দিচ্ছে। এমনকী ওই লম্পটের মাতা আমাদের বাড়ীতে এসে হুমকী দিয়ে বলে বিষয়টি নিয়ে বেশী বাড়া-বাড়ি করলে ফল বেশী ভাল হবেনা। প্রয়োজনে আমার ছেলের সাথে তোর মেয়ের বিয়ে দিবো। তাদের হুমকীর মুখে আমার পরিবারের সদস্যদের নিয়ে আতঙ্কে রয়েছি। মিছিলে অংশগ্রহনকারীরা জানান অভিযুক্ত নারীলোভী জালাল হাওলাদার ১৫ বছর পূর্বে নাবালিকা মেয়ের সাথে অবৈধ মেলামেশা করতে গিয়ে জনতার কাছে হাতেনাতে ধরা পরে এবং বিয়ে করতে বাধ্য হন। এছাড়াও এলাকায় একাধিক শিশুকে মোবাইল ফোনে অশ্লিল ভিডিও দেখিয়ে যৌন হয়রানির চেষ্টা করে থাকে। অফিসার ইনচার্জ মোঃ জিয়াউল আহসান জানান- অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং মামলার প্রস্তুতি চলছে। ওই ধর্ষকের দৃষ্টান্ত মুলক শাস্ত্রির দাবী জানিয়ে প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সু-দৃষ্টি কামনা করেন ছাত্রীর পরিবার ও এলাকাবাসী।
Leave a Reply