বেতাগী প্রতিনিধি ॥ বরগুনার বেতাগীতে ন্যায্যমূল্যের টিসিবির পন্য সাধারণ মানুষ ক্রয়ের আগেই এক আ.লীগ নেতা ক্ষমতার দাপটে ডিলারের কাছ থেকে সংগ্রহ করে দোকানে দোকানে বাজারের পাইকারি দামে বিক্রি করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। ইতোমধ্যে সেই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুক ম্যাসেঞ্জারে ভাইরাল হয়েছে। ওই নেতা বেতাগী উপজেলার হোসনাবাদ ইউনিয়ন আ.লীগের ত্রান বিষয়ক সম্পাদক মতিউর রহমান লিটন(লেটোয়ার মৃধা)। তার বিরুদ্ধে প্রাকৃতিক দূর্যোগ সিডরের সময়ে ত্রান আত্মসাৎ, সরকারি পাবলিক টিওবয়েল নিজের ঘরের মধ্যে বসানো, রেকর্ডীয় খাল দখল করে পুকুর খনন সহ দলীয় প্রভাব খাটিয়ে সরকারি নানা বরাদ্দ ব্যাক্তিগত কাজে লাগানোর একাধিক অভিযোগ রয়েছে। জানা যায়, গত ১০মে রোজ সোমবার উপজেলার জলিশাবাজের টিসিবির পন্য ভ্রাম্যমান ভাবে বিক্রিয় করেন সরদার এন্টারপ্রাইজ এর স্বত্বাধিকারী মো. রবিউল ইসলাম ও তার দুই সহযোগী। বিক্রির শুরুতেই ওই আ.লীগ নেতা গিয়ে তার ক্ষমতার দাপট! দেখিয়ে একের পর এক ৫লিটার ওজনের তৈলের বোতল নেয়া শুরু করেন। বাঁধা দিলে বলেন উপজেলার সব নেতা তার আত্মীয়স্বজন এবং তিনি ওই ইউনিয়নের বড় নেতা। প্রায় ডিলারের সাথে জোর করে ৭৫ লিটার তৈল ও ৩০ কেজি চিনি সহ ইচ্ছেমতো পন্য নিয়ে যায় টাকা চাইলে অনেক কথার পর প্রতি গ্ল্যান বাবদ ৫০০ টাকা দেন। একটু পর সেই তৈল ও চিনি স্থানীয় কয়েক ব্যবসায়ীর কাছে বাজার দামে প্রতি গ্ল্যান ৬০০টাকা মূল্যে ও চিনি বাজার মূল্যে বিক্রি করেন। যা গোপনীয়তা রক্ষা করে স্থানীয় লোক মোবাইল ফোনে ছবি ও ভিডিও ধারণ করেন এবং কিছুদিন পর তা ভাইরাল হয় ও প্রতিবেদকের হাতে পরে। এমন ঘটনায় টিসিবির পন্য নিতে আসা একাধিক লোক পন্য ক্রয় করতে না পেরে ক্ষোভ প্রকাশ করেন এবং বলেন, ‘ওই নেতা ক্ষমতার দাপটে পন্য ক্রয় করে আবার বেশি দামে বিক্রি করে লাভও করেছে। আর আমরা পন্য ক্রয়ই করতে পারলাম না।’ টিসিবির ডিলার ‘সরদার এন্টারপ্রাইজ, এর স্বত্বাধিকারী মো. রবিউল ইসলাম বলেন, “আমি ওই নেতাকে বাঁধা দেই এবং বলি আপনি একটার বেশি নিতে পারবেন না পওে সে আমাকে ধমক দিয়ে বলেন, আমার যা যা লাগবে না দিলে তোর লাইসেন্স বাতিল করে দিবো। আওয়ামীলীগের বড় বড় নেতা আমার আত্মীয়স্বজন। কথা বারানোর কারনে আমাকে টাকাও দিতে চায়নি পরে পাশের লোকজন বলে সরকারি জিনিস টাকা দিয়ে দেন পরে আমাকে টাকা দেয়। সে ইচ্ছেমতো পন্যগুলো নিয়ে যাওয়ায় সাধারণ মানুষের কাছে বিক্রি করার মতো পন্য না থাকায় খালি গাড়ি নিয়ে চলে আসি।” স্থানীয় বাসিন্দা সাদ্দাম হোসেন বলেন,ওই নেতা টিসিবির পন্য নিয়ে স্থানীয় ব্যবসায়ী আশ্রাফ আলী, জাফর সহ বেশ কয়েকজনের দোকানে বিক্রি করেন।অনেকেই পন্য পায়নি,মধ্য দিয়ে তিনি লাভ করেন। অভিযুক্ত মতিউর রহমান লিটন(লেটোয়ার মৃধা) বলেন,কোন সময় এয়া হইছে ? আমি তো আমার যা লাগছে তা আনছি। আমি কোন পন্য বিক্রি করিনি। ভিডিওর কথা বললে তিনি বলেন ওই দিন বাজারে কোন সাংবাদিক ছিলো না তো ভিডিও করবে কে ? এসব মিথ্যা কথা। বেতাগী উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি এবিএম গোলাম কবির বলেন, “লিটন আওয়ামীলীগের ত্রান বিষয়ক সম্পাদক, তার কাজ মানুষকে ত্রান দিয়ে সহায়তা করার ব্যবস্থা করা আর সে যদি করে ভোগ! যদি কোন দলীয় লোক দুর্নীতি করে এবং তা প্রমানিত হয় তবে তাকে কোন ছাড় দেয়া হবেনা। জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি সম্পাদকের সাথে আলোচনা করে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।” এ ব্যাপরে বেতাগী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো.সুহৃদ সালেহীন বলেন, “সে যে দলের নেতাই হোক না কেনো,সরকারের কাজে অনিয়ম ও দুর্নীতি করলে তাকে অবশ্যই আইনের আওতায় আনা হবে। অতিশিগ্রই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
Leave a Reply