বরগুনা প্রতিনিধি ॥ বরগুনার ভারানি খালের উচ্ছেদ অভিযান বন্ধ করতে হুমকি দিয়েছেন যুবলীগ নেতা ইমাম হোসেন রোকন। রোকন বরগুনা জেলা যুবলীগের সহ-সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন। রোকনের এমন হুমকির ভিডিও ধারণ করায় মুশফিক আরিফ নামে এক সাংবাদিককে অশ্লীল ভাষায় গালমন্দ করার পাশাপাশি তাকে ধাওয়াও দেন তিনি। এ সময় দৌড়ে নিজেকে রক্ষা করেন ওই সাংবাদিক। আইনি জটিলতা ও নানা আন্দোলন-সংগ্রামসহ দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর রোববার (২৩ মে) বরগুনার ভারানি খালের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে অভিযান শুরু করে বরগুনা জেলা প্রশাসন। অভিযান চলাকালে বেলা পৌনে ১১টার দিকে অভিযানস্থলে যান বরগুনা পৌরসভার মেয়র ও জেলা যুবলীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট কামরুল আহসান মহারাজ। সময় যুবলীগ নেতা রোকন পৌর মেয়র কামরুল আহসান মহারাজকে খালের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ বন্ধের জন্য চেষ্টা চালাতে বলেন। এ সময় কামরুল আহসান মহারাজ বলেন, ‘আমি চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছি। এখন আর কোনো সুযোগ নেই। কোনোভাবেই এটা বন্ধ করা সম্ভব নয়। আমি এক ঘণ্টা সময় চেয়েছিলাম তাও তারা দিতে রাজি নয়। ‘তখন যুবলীগ নেতা রোকন উত্তেজিত হয়ে বলেন, ‘থামাতে বাধ্য তারা। দেখবেন? থামাবো? এখানে ১০টা লাশ পড়বে দেখবেন? আপনারা আছেন বলে সেটা করতে চাইনি। এ সময় রোকন বরগুনা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি মো. জাহাঙ্গীর কবিরকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘জাহাঙ্গীর মিয়া বলে ঘর নিয়ে যাওনি কেন এখনো। আর এই খালের খনন কাজের ঠিকাদার মো. হুমায়ুন কবিরকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘হুমায়ূন দা বলে- খালের মাটি রাখবো কোথায়?’ এরপর বরগুনা জেলা প্রশাসক হাবিবুর রহমানকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘ডিসি কয়- আইন মানি না। ওটা সুপ্রিম কোর্টে গিয়ে বোঝেন। অর্ডার দেখতে চাইবে না উনি। অর্ডার বুঝবে না। অর্ডার মানতে চাইবে না। কেন? কারণটা কি? এ বিষয়ে সাংবাদিক মুশফিক আরিফ বলেন, ‘এই খালের উচ্ছেদ অভিযানের আন্দোলন যারা সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন আমি তাদের মধ্যে একজন। খাল দখল করে যুবলীগ নেতা রোকন আটটি ঘর তুলেছিলেন। এই ঘর ভাড়া দিয়ে তিনি মোটা অংকের টাকা আদায় করতেন। পৌর মেয়রের সামনে তিনি যখন এসব হুমকি দিচ্ছিলেন তখন আমি ভিডিও করায় তিনি আমাকে গালমন্দ করার পাশাপাশি ধাওয়া দেন। মুশফিক আরিফ আরো বলেন, শুধু আমার একার উপর ক্ষুব্ধ নন রোকন। এই খাল দখলমুক্ত করার জন্য সামনে থেকে যারা নেতৃত্ব দিয়েছেন, তাদের সবার প্রতি ক্ষুব্ধ যুবলীগ নেতা রোকন। একটি সামাজিক কাজে অংশগ্রহণ করে সেসব মানুষ রোকনের মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে বলেও ধারণা এই সাংবাদিকের। এ বিষয়ে যুবলীগ নেতা ইমাম হোসেন রোকনের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি। এ বিষয়ে বরগুনার জেলা প্রশাসক হাবিবুর রহমান বলেন, এ ধরনের হুমকি ধমকি কিংবা কথোপকথনের কোনো বিষয়ে আমি অবগত নই। খোঁজ নিয়ে দেখছি। যদি কেউ এমন কথা বলে থাকেন তাহলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
Leave a Reply