দখিনের খবর ডেস্ক ॥ বর্তমান সময়ে অনলাইনে কেনাকাটা জনপ্রিয় হওয়ায় এ সংশ্লিষ্ট পণ্য পরিবহনসহ আধুনিক পরিবহন ব্যবসায় ডাক বিভাগকে মনোযোগী হতে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, যেহেতু অনলাইন ক্রয়-বিক্রয় জনপ্রিয় হয়েছে, এতে ডাক বিভাগ পিছিয়ে থাকলে হবে না, ডাক বিভাগের এ ব্যাপারে আরও দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে। এ ব্যবসা করতে হবে। বৃহস্পতিবার ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ডাক অধিদপ্তরের নবনির্মিত সদরদপ্তর ‘ডাক ভবন’ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি গণভবন থেকে এ অনুষ্ঠানে সংযুক্ত হন। রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নবনির্মিত দৃষ্টিনন্দন অত্যাধুনিক ডাক ভবনে দুটি বেজমেন্টসহ ১৪তলা ভবনটি নির্মাণে সরকারের ব্যয় হয়েছে ৯১ কোটি ৭৩ লাখ টাকা। ভবনটিতে সুসজ্জিত ও সমৃদ্ধ লাইব্রেরি, আধুনিক পোস্টাল মিউজিয়াম, সুপরিসর অডিটোরিয়াম, ক্যাফেটেরিয়া, ডে-কেয়ার সেন্টার, মেডিকেল সুবিধা, অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা ও সার্বক্ষণিক ওয়াইফাইসহ অন্যান্য তথ্যপ্রযুক্তিগত সুবিধা রয়েছে। এ উপলক্ষে একটি বিশেষ স্মারক ডাকটিকিট প্রকাশ করা হয়, যেটি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অবমুক্ত করেন। শেখ হাসিনা বলেন, অনলাইনে বাজার করাসহ যাবতীয় সেবা পাওয়া যায়। ডাক বিভাগ থেকেও যেন এসব আধুনিক সেবা দেয়া যায়, সে ব্যবস্থা করতে হবে। আধুনিক পরিবহন ব্যবস্থা করতে হবে যাতে ফলমূল, সবজি ও খাবার ওই গাড়িতে ভালো থাকে। কুলিং সিস্টেম রাখতে হবে; গাড়ির সঙ্গে সঙ্গে ডাকঘরগুলোতে চেম্বারও করতে হবে, যাতে পণ্য ভালো রাখা যায়। রান্নাকরা খাবারও যেন এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় পাঠানো যায়। এ জন্য কুলিং ও ফ্রিজিং সিস্টেম করে দেয়ার ব্যবস্থা নিতে হবে। ‘এখন তো ছোট ছোট পোর্টেবল বক্স পাওয়া যায়। যেহেতু অনলাইন ক্রয়-বিক্রয় জনপ্রিয় হয়েছে, এতে ডাক বিভাগ পিছিয়ে থাকলে হবে না, ডাক বিভাগের এ ব্যাপারে আরও দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে। এ ব্যবসা করতে হবে।’ প্রধানমন্ত্রী বলেন, লেটারবক্স অনেকে ভুলে গেছে। সবাই এসএমএস ও মেইল দেয়। কিন্তু দৃষ্টিনন্দন এই লেটারবক্স সদৃশ ভবন দেখলে চিঠি পাঠানোর কথা মনে পড়বে। ভবনে চিঠিপত্র ঝুলছে, চিঠি যাচ্ছে আসছে, এমন কিছু চিত্র যোগ করারও পরামর্শ দেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, আগে ডিজিটাল সেন্টার থেকে যেসব সুবিধা পেত, ডাকঘরগুলোতেও একই সেবা পাওয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। ডাকঘর সেবার মানুষের দোরগোড়ায় আরও পৌঁছে দিতে ১১৮টি মেইল গাড়ি সংযুক্ত করেছি। গাড়ি চালানোর জন্য নারীদেরও তৈরি করছি। এ সময় ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার এবং ডাক ও টেলিযোগাযোগ সচিব আফজাল হোসেন বক্তব্য দেন। টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেন, সাবমেরিন ক্যাবল সিবিবি-৫ থেকে আমরা এখন সৌদি আরবে ৬০০ সিবিপিএস ব্র্যান্ডউইথ রপ্তানি করি। এখন পর্যন্ত ৩০৬ মিলিয়ন ডলার আয় করেছি। সিবিবি-৬ পাইপলাইনে আছে। তিনি বলেন, করোনাকালে ব্র্যান্ডউইথ ব্যবহার দ্বিগুণ হয়েছে, অনেকে ব্র্যান্ডউইথ সংকট হবে কি না প্রশ্ন করছেন। আমি বলেছি, এ নিয়ে শঙ্কার কোনো কারণ নেই। কোনো সংকট হবে না। ডাকমন্ত্রী বলেন, ডাকের সমস্ত কর্মকাণ্ড ডিজিটাল করার উদ্যোগ নিয়েছি। জনগোষ্ঠীকে ডিজিটাল দক্ষতা না দিতে পারলে কেবল প্রযুক্তি দিয়ে ডিজিটাল ডাকঘর করতে পারব না। অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি একেএম রহমতউল্লাহ, মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউসসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
Leave a Reply