বেতাগী প্রতিনিধি ॥ ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে গত কয়েক দিন ধরে দমকা বাতাস ও বর্ষণ এবং পূর্ণিমার জোয়ারে উঠতি রবি মৌসুমে শাকসবজি এবং আউশ ধানের ক্ষেত পানিতে ডুবে গেছে। ফসলের মাঠ নদীতে পরিণত হয়েছে। দীর্ঘ সময় ধরে ডুবে থাকায় আউশ ধানের বীজতলাগুলো নষ্ট হয়ে ব্যাপক ক্ষতি হতে পারে এমন শঙ্কায় কৃষকরা। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর বেতাগী উপজেলার ১টি পৌরসভাসহ ৭টি ইউনিয়নে সাড়ে ৯ হাজার হেক্টর জমিতে আউশ ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে চাষাবাদ শুরু হয়েছিল। ইতিমধ্যে অর্ধেক জমিতে বীজতলা থেকে চারা তুলে আউশ ধানে মাঠে রোপণ করেছে কৃষক। যার মধ্যে ৭৭৫ হেক্টর জমির আউশ ধানের বীজতলা ও সদ্য রোপণকৃত আউশ ধানের ক্ষেত পানিতে ডুবে গেছে। এ ছাড়াও ৫২০ হেক্টর জমিতে শাক-সবজি ও ৪০০ হেক্টর জমিতে বীজ বাদাম, ১০৫ হেক্টর কলা, ১১০ হেক্টর জমিতে পান, ৫৫ হেক্টর জমিতে পেঁপে, ৪৫ হেক্টর জমিতে ঢেড়শ, ৫৭ হেক্টর জমিতে মিষ্টি কুমাড় এবং ৭০ হেক্টর জমিতে পটল ডুবে আছে পানির নিচে। এরই মধ্যে এসব গ্রীষ্মকালীন ফসলের এক তৃতীয়াংশ তুলে নিলেও বেশির ভাগ ফসল মাঠে ছিল। হঠাৎ ঘূর্ণিঝড় ‘ইয়াস’ ও পূর্ণিমা জোয়ারে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় কৃষকের স্বপ্ন শেষ হয়েছে। পৌরসভার ৩নম্বর ওয়ার্ডের কৃষক রফিকুল ইসলাম জানান, আর দুই সপ্তাহ আবহাওয়া ভালো থাকলে আমরা অধিকাংশ ফসল ঘরে তুলতে পারতাম। এখন আর সেই স্বপ্ন দেইখ্যা লাভ অইব না। বিশেষজ্ঞদের মতে, বীজতলা ও শাক-সবজির ক্ষেতে এক সপ্তাহের বেশি পানি জমে থাকলে ফসলের পঁচন ধরে ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে। এ বিষয় পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সদ্য কোর্স সম্পন্নকারী কৃষিবিদ লিটন কুমার ঢালী বলেন, গ্রীষ্মকালীন মৌসুমের ফসলে এক সপ্তাহের বেশি পানি জমে থাকলে ক্ষতিকর ছত্রাক ও ব্যবটেরিয়ায় আক্রান্ত করে ফসল নষ্ট করে দেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যানতত্ত্ব বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. সন্তোষ কুমার বসু বলেন, বীজতলা ও গ্রীষ্মকালীন সবজিতে দীর্ঘসময় পানি জমে থাকলে পঁচন ধরবে। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. ইকবাল হোসেন মজুমদার বলেন, ইতোমধ্যে এ উপজেলার ফসলের আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনার উপর প্রতিবেদন সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছি।
Leave a Reply