কাউখালী প্রতিনিধি ॥ কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার অধিকাংশ ঘরবাড়ি ভেরি বাধ না থাকায় ইতিমধ্যেই নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। ঘূর্ণিঝড় ইয়াস এর কারনে অতিরিক্ত পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় নদীর তীরবর্তী পঞ্চাশটি বাড়ি এখন অধিক ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে। যেকোনো সময়ে ঘটতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা, এমনকি হারাতে হতে পারে অনেকের জান ও মাল। নদীবেষ্টিত কাউখালীর উপজেলার ২ নং আমড়াজুড়ি ইউনিয়নের একটি গ্রামের নাম সোনাকুড়। যেখানে বসত করেন বিভিন্ন পেশার মানুষ, রয়েছে মাটির থালা, বাসন, হাঁড়ি,কলসি তৈরি করার কারিগর পালদের বসবাস, এক পাশে রয়েছে বেদে পরিবার ও জেলেদের ঘরবাড়ি। এ ছাড়াও এখানে রয়েছেন বীর মুক্তিযোদ্ধা পরিবার ও সাধারণ মানুষের বাসস্থান। সন্ধ্যা নদীর পাড় ঘেঁষে গ্রামটিতে ভেরি বাধ না থাকায় দীর্ঘ কয়েক যুগ ধরে আস্তে আস্তে নদীর গর্ভে বিলীন হয়েছে গ্রামের দুই-তৃতীয়াংশ। যার ফলে গৃহহীন হয়ে গ্রাম ও উপজেলা ছাড়া হয়েছেন শত শত মানুষ। নদী ভাঙ্গনে সবকিছু হারিয়ে আশ্রয়হীন এই মানুষগুলো যে যার মতো করে এক এক জায়গায় গিয়ে তৈরি করে নিয়েছেন মাথা গোঁজার ঠাঁই। আবার অনেকে অর্থ অভাবে সরকারি গুচ্ছগ্রাম, আবাসন এই সমস্ত জায়গায় বসবাস করার স্থান পেয়েছেন। বর্তমানে যে কয়টি বাড়ি অবশিষ্ট ছিল তাহা ঘূর্ণিঝড় ইয়াস এর প্রভাবে নদীগর্ভে বিলীন হওয়ার পথে। যেকোনো সময় বাড়ীঘরগুলো নদী ভাঙ্গনের কবলে পড়ে জনো কূন্য হয়ে যাবে। অতি দ্রুত সময়ের মধ্যে এই সমস্ত পরিবারগুলোকে অন্যত্র বসতির ব্যবস্থা করে পূর্ণবাসন করা না হলে হারাতে হতে পারে অনেকের জান ও মাল। সরেজমিনে ঘুরে এমনই চিত্র দেখা গিয়েছে। কথা বলছিলাম স্থানীয়ে ঝুঁকিপূর্ণ বাড়ির মালিকদের সাথে একে একে বীর মুক্তিযোদ্ধা মরহুম আব্দুস সালাম এর সন্তান মোহাম্মদ জসিম জানান, তাদের ঘরটি এখন নদী থেকে মাত্র পাঁচ গজ দূরে রয়েছে রাতের বেলা পানির শব্দ ঘুমাতে পারেন না তার মনে হয় যেন এখনই বুঝি তাদের ঘর বাড়ির সকলকে নিয়ে নদীর গর্ভে হারিয়ে যেতে হবে এই ভয় আর আতঙ্কে সময় পার করতে হয়। স্থানীয় জেলে বেলায়েত হোসেনের স্ত্রী মর্জিনা বেগম জানান, তার স্বামী নদীতে মাছ ধরে তাদের কোন জায়গা জমি নেই নদী ভাঙ্গনের কবলে পড়ে আজ যেকোনো সময় তাদের ঘর বাড়ি টুকু বিলীন হয়ে যেতে পারে। এমনকি ঘুমের মধ্যে যদি নদীগর্ভে তাদের ঘরবাড়ি চলে যায় হয়তো তারাও বেঁচে থাকবেন না। অর্থ অভাবে জায়গা বা ঘর ক্রয় করতে পারছেন না তারা। সরকারের কাছে দাবি সরকার যেন তাদের পূর্নবাসনের ব্যবস্থা করে দেন। সানি, আবুল কালাম জানান, এই জায়গায় বর্তমানে যেভাবে নদী ভাঙছে তাতে করে দু-এক মাসের মধ্যেই গ্রাম নিশ্চিহ্ন হয়ে যেতে পারে তবে এখানে বসবাসরত সবাই গরীব খেটে খাওয় মানুষ তাদের নতুন কোন জায়গায় গিয়ে ঘরবাড়ি তৈরি করা অথবা জায়গা ক্রয় করে বসবাস করার মত অর্থ সম্ভব টাকা পয়সা কিছুই তাদের নেই। সরকার যদি পূর্নবাসনের ব্যবস্থা করেন তাহলেই তারা নতুন জীবন নিয়ে বেঁচে থাকতে পারবেন। অধিক ঝুঁকিতে এখানে রয়েছেন পালেদের কয়েকটি পরিবার অতুল, বিমল, সানাল পাল সহ অনেকেই যাদের ঘরবাড়ি কিছু অংশ ইতিমধ্যেই নদীর গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে বাকি ঘরগুলো নদী ও স্থথল মিলে ঝুলে বেকে আছে। যেকোনো সময় দিনে কিংবা রাতে এই সমস্ত বাড়ি ঘর সম্পূর্ণ নদীর গর্ভে বিলীন হয়ে যেতে পারে। এ ব্যাপারে ২ নং আমড়াজুড়ি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শামসুদ্দোহা চাঁন জানান, যে পরিবারগুলো ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে তাদের পূর্নবাসনের জন্য চেষ্টা অব্যাহত আছে।
Leave a Reply