নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ ২১ দিন চিকিৎসার পর করোনা মুক্ত হয়ে বাড়ি ফিরল ৯ বছরের শিশু রাহাত ফরাজী। সোমবার (৫ মে) দুপুরে রাহাতকে হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র দেয়া হয়। এরপর বাবার হাত ধরে বড়ি ফিরে যায় সে।
রাহাত বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলার মধ্য রাকুদিয়া গ্রামের শিমুল ফরাজীর ছেলে। গত ২১ দিন ধরে সে পার্শ্ববর্তী উজিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আইসোলেশন ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন ছিল।
উজিরপর উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. শওকত হোসেন জানান, গত ১৩ এপ্রিল বাবা শিমুল ফরাজী ও দাদি রিজিয়া বেগমের সঙ্গে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিতে আসে রাহাত। এ সময় রাহাত জ্বর, সর্দি-কাশি, গলা ব্যাথা ও শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত ছিল। তাৎক্ষণিক তাকে ভর্তি করে আইসোলেশন ওয়ার্ডে রাখা হয়। ১৪ এপ্রিল রাহাতের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য ঢাকায় আইইডিসিআরে পাঠানো হয়েছিল। ঢাকা থেকে ১৬ এপ্রিল তার করোনা পজিটিভ রিপোর্ট আসে। এরপর হাসপাতালেই তার চিকিৎসা চলে। বয়স কম হওয়ায় বাবা শিমুল ফরাজী ও দাদি রিজিয়া বেগম তার সঙ্গে ছিলেন।
ডা. শওকত হোসেন জানান, প্যারাসিটামল, অ্যান্টি-হিস্টামিন, ভিটামিন সি ও অ্যাজিথ্রোমাইসিন জাতীয় ওষুধ দেয়া হয়েছিল রাহাতকে। এছাড়া প্রতিদিন গরম পানির বাষ্প এবং আদা ও লবণ দিয়ে গরম পানির গড়গড়া করানো হয়েছে তাকে। ধীরে ধীরে তার স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটে। ২৪ এপ্রিল রাহাতের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য পাঠালে ২৬ এপ্রিল রিপোর্ট নেগেটিভ আসে। এরপরও নিশ্চিত হতে ২ মে পুনরায় নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়। ৩ মে তার নেগেটিভ রিপার্ট আসে। এর প্রেক্ষিতে দুপুরে হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র দেয়া হয় রাহাতকে।
তিনি জানান, আইসোলেশন ওয়ার্ডে তার বাবা শিমুল ফরাজী ও দাদি রিজিয়া বেগম ২১ দিন রাহাতের সঙ্গে ছিলেন। বাড়ি ফেরার আগে তাদের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। তবে তাদের রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছে। এছাড়া রাহাতকে চিকিৎসা সেবা দেয়া চিকিৎসক ও নার্সদেরও নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। তাদেরও নেগেটিভ এসেছে। রাহাতের বাবা শিমুল ফরাজী বলেন, আমার ছেলে এখন সুস্থ। এই কয়দিন ডাক্তার স্যাররা অনেক কষ্ট করেছেন। তাদের জন্য দোয়া করি। তারা যেন সুস্থ থাকেন।
এদিকে শিশু রাহাতকে বিদায় জানাতে হাসপাতালে এসেছিলেন উপজেলা পরিষদর চেয়ারম্যান আব্দুল মজিদ সিকদার বাচ্চু, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা প্রণতী বিশ্বাস, পৌর মেয়র মো. গিয়াস উদ্দিন বেপারী, উজিরপুর থানা পুলিশের ওসি জিয়াউল আহসান, উপজেলা ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা অয়ন শাহা, সমাজসেবা কর্মকর্তা আবুল কালাম প্রমুখ। এ সময় রাহাতের পরিবারের জন্য এক মাসের চাল, ডাল দেয়া হয়। রাহাতের হাতে উপহার সামগ্রীসহ দেয়া হয় এক ঝুড়ি ফল।
Leave a Reply