বরিশাল জেলার বাবুগঞ্জ উপজেলার ক্ষুদ্রকাঠি এলাকায় সুগন্ধা নদীর ভাঙনে একটি গুরুত্বপূর্ণ সড়ক বিলীন হয়ে গেছে। সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ায় বাহেরচর এলাকায় অবস্থিত বাবুগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যেকোনো যানবাহনে রোগী পরিবহন বন্ধ রয়েছে। আর নদীগর্ভে বিলীন সড়কের পাশের নালাজমি দিয়ে কোনোমতে পায়ে হেটে চলাচল করছেন স্থানীয়রা। এতে করে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন রোগী এবং সড়কে চলাচলকারীরা।
এমতাবস্তায় নদী ভাঙন রোধে জরুরি ভিত্তিতে জিও ব্যাগ ফেলার নির্দেশ দিয়েছেন বরিশাল সফররত পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী কর্নেল (অব.) জাহিদ ফারুক। সোমবার (৩০ আগস্ট) বরিশাল পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী দীপক রঞ্জন দাশ এ তথ্য জানিয়েছেন।
স্থানীয় বাসিন্দা মো. শাহজাহান হাওলাদার জানান, বাবুগঞ্জের রাকুদিয়া-আবুল কালাম ডিগ্রি কলেজ-বাহেরচর-চরসাধুকাঠী মাদরাসা-লাশঘাটা পর্যন্ত পাকা সড়কটি ৮ কিলোমিটার দীর্ঘ। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ (এলজিইডি) ওই সড়কের রক্ষাণাবেক্ষণ করে। এর আগেও ওই সড়কের ক্ষুদ্রকাঠী অংশ নদী ভাঙন কবলিত হলে পানি উন্নয়ন বোর্ড জিও ব্যাগ ফেলে জরুরি ভিত্তিতে ভাঙন রোধ করে। সর্বশেষ গত শুক্রবার বিকেলে ও পরদিন শনিবার সকালে দুই দফায় ওই সড়কের অন্তত ৫০০ ফুট জায়গা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। সড়কের আংশিক নদীগর্ভে চলে যাওয়ায় যেকোনো যানবাহনে বাবুগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ কেদারপুর ও জাহাঙ্গীরনগর ইউনিয়নের অর্ধলক্ষাধিক মানুষের সরাসরি সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।
ওই সড়কের পথচারী আবুল হোসেন জানান, সড়কের একাংশ নদীগর্ভে চলে যাওয়ার পর ওই এলাকা দিয়ে যাতায়াত বন্ধ। জরুরি প্রয়োজনে মানুষ পাশের নালাজমি দিয়ে পায়ে হেটে চলাচল করছেন। কিন্তু কোনো যানবাহন চলাচল করতে পারছে না। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রোগীদের অবাধ যাতায়াতসহ ওই সড়কের সকল যাত্রীদের নিরাপদ চলাচলের জন্য ক্ষুদ্রকাঠী এলাকায় সুগন্ধা নদীর ভাঙন রোধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান তিনি।
দেহেরগতি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. মশিউর রহমান বলেন, এর আগে সুগন্ধা নদীর ক্ষুদ্রকাঠী এলাকায় ভাঙন রোধে জরুরি ভিত্তিতে জিও ব্যাগ ফেলেও শেষ রক্ষা হয়নি। সুগন্ধা নদীর ভাঙনের কবল থেকে ওই এলাকা রক্ষায় স্থায়ীভাবে তীর সংরক্ষণের দাবি জানান তিনি।
বরিশাল স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী শরীফ মো. জামাল উদ্দিন বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ড সুগন্ধা নদীর ক্ষুদ্রকাঠী অংশে নদী ভাঙন প্রতিরোধে ব্যবস্থা নিলে সড়কের ক্ষতিগ্রস্ত অংশ পুননির্মাণের উদ্যোগ নেবে এলজিইডি। একইসঙ্গে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ ওইসব এলাকায় চলাচলের জন্য একটি বিকল্প সড়কও উন্নয়ন করা হবে।
এ বিষয়ে জেলার পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী দীপক রঞ্জন দাশ বলেন, সুগন্ধা নদীর ক্ষুদ্রকাঠী এলাকায় এর আগেও জিও ব্যাগ ফেলা হয়েছে। এখন নদীর ভাঙন তীব্র হয়েছে। এ কারণে সড়কের একটি অংশ নদীগর্ভে চলে গেছে। বিষয়টি পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রীকে অবহিত করা হয়েছে। বরিশাল সফররত প্রতিমন্ত্রী জরুরি ভিত্তিতে ক্ষুদ্রকাঠী এলাকায় জিও ব্যাগ ফেলে সুগন্ধা নদীর ওই অংশে ভাঙন প্রতিরোধের নির্দেশ দিয়েছেন। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে ওই কাজ শেষ হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
Leave a Reply