চরফ্যাসন (ভোলা) প্রতিনিধি ॥ চরফ্যাসনে ১০ বছরের শিশু কেফায়েত উল্যাহ রাইহান হত্যা মামলায় চার আসামীর যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ড এবং প্রত্যেককে এক লক্ষ টাকা করে জরিমানা অনাদায়ে প্রত্যেককে আরও তিন বৎসরের কারাদন্ডাদেশ দিয়েছেন অতিরিক্ত দায়রা জজ আদালত। দীর্ঘ শুনানির পর গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে অতিরিক্ত দায়রা জজ চরফ্যাসন আদালতের বিজ্ঞ বিচারক মো. নুরুল ইসলাম দন্ডবিধির ৩০২/২০১/৫০৬/৩৪ধারায় দোষী সাব্যস্ত করে আসামীদের উপস্থিতিতে এদন্ডাদেশ দেন। দন্ডিতরা হলেন, শশীভূষণ ২নম্বর ওয়ার্ডের জামাল উদ্দিন চৌকিদারের ছেলে মো. মোস্তফা ও মো. ইকবাল, মৃত আজাহার আলী চৌকিদারের ছেলে জামাল উদ্দিন চৌকিদার এবং শশীভূষণ ১নম্বর ওয়ার্ডের মৃত নজির আলী গাজীর ছেলে জয়নাল আবেদীন গাজী। অতিরিক্ত দায়রা জজ চরফ্যাসন আদালত সুত্রে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। আদালতের দেয়া আদেশ সুত্রে জানাগেছে, আসামীদের বিভিন্ন মেয়াদে পূর্বের হাজতবাস কাল বাদ দিয়ে ১৭ আগষ্ট ২০২১ থেকে প্রত্যেক আসামীর অবশিষ্ট সাজা গননা করা হবে।
মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণে জানাগেছে, মামলার বাদী মাওলানা আবদুল্লাহ আল নোমানের শশুড় বাড়ির ৩২ শতাংশ জমি আসামীরা অবৈধভাবে দখলের চেষ্টা করে আসিলেন। এনিয়ে ২০১৩সনের ২১মার্চ স্থানীয় ভাবে শালিস বৈঠক হয়। ওই সময় আসামীরা শালিসের উপস্থিতিতে বাদীকে এবং তার স্বজনদের মারধর করে গুরুতর আহত করেন। মারধরের ঘটনায় ওই দিনই শশীভূষণ থানায় লিখিত অভিযোগ করা হয়। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে আসামীরা আক্রোস বশত পূর্ব পরিকল্পিত ভাবে ২০১৩ সনের ২০মে বাদীর ১০বছরের শিশু পুত্র কেফায়েত উল্যাহ রাইহানকে হত্যা করে। ওই হত্যা ঘটনাকে অন্য দিকে প্রবাহিত করতে আসামীরা কেফায়েত উল্ল্যাহ রাইহানের লাশ তার শশুর আবদুল মতিনের ঘরের দক্ষিণ প¦ার্শের ধান খোলার পশ্চিমে বাঁশের আড়ার সঙ্গে শুকাতে দেয়া লুঙ্গির সাথে ঝুলিয়ে রেখে পালিয়ে যায়। বাদীর শাশুড়ি ফজিলাতুন নেছা ঝুলন্ত লাশ দেখেন। খবর পেয়ে শশীভূষণ থানা পুলিশ নিহত শিশুর লাশ উদ্ধার করে থানা নেন। ময়না তদন্তের জন্য ভোলা মর্গে পাঠান।
ময়না তদন্ত প্রতিবেদন হাতে পেয়ে শশীভূষণ থানায় মামলা করতে গেলে প্রভাবশালী আসামীদের চাপে থানায় মামলা করতে না পেরে পরবর্তীতে ২০১৩ সনের ২৪জুন তিনি বাদী হয়ে ৪ জনকে আসামী করে আদালতে হত্যা মামলা দায়ের করেন।
এদিকে ৯ বছর পর বিজ্ঞ আদালত শিশু পুত্র হত্যার প্রকৃত আসামীদের যাবজ্জীবন কারাদন্ড দেয়ায় রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন মামলার বাদী মাওলানা আবদুল্লাহ আল নোমান । মামলার রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবি মো. মোজাম্মেল হক জানান, বিজ্ঞ বিচারক যে রায় দিয়েছেন তাতে আমরা সন্তষ্ট। এ রায়ে বাদী ন্যায় বিচার পেয়েছেন। আসামী পক্ষের আইনজীবি মো. ছালেহ উদ্দিন আসামীদের বরাত দিয়ে জানান, রায়ে তারা ন্যায় বিচার পায়নি। রায়ের বিরুদ্ধে তারা উচ্চ আদালতে যাবেন।
Leave a Reply