স্টাফ রিপোর্টার :
‘দি বরিশাল চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি’ (বিসিসিআই) এর সচিব মোঃ ইলিয়াস হোসেন লাভুর বাসা থেকে জোরপূর্বক রেজিস্ট্রার খাতা ছিনিয়ে নেয় আ.লীগ সমর্থিত ব্যবসায়ী শেখ আব্দুর রহিম। ডাক চিৎকারে স্থানীয় জনতার রোষাণলে পড়ে ওই ব্যবসায়ী। দেয়া হয় উত্তম মাধ্যম। চলমান মাসের গত ৬ অক্টোবর রাত সাড়ে ১১ টার সময় দি বরিশাল চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সচিব মোঃ ইলিয়াস হোসেন লাভুর বাসভবনে এ ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যান ‘দি বরিশাল চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি’ এর সাবেক সভাপতি এবায়দুল হক চাঁন।
তিনি বলেন, ঘটনার দিন রাত সাড়ে ১১ টায় লাভুর স্ত্রী আমার মুঠোফোনে কল দিয়ে বসতঘরে চলমান ঘটনা সম্পর্কে জানায়। ঘটনাস্থলে গিয়ে আমি রেজিস্ট্রার খাতা উদ্ধার করি। এ প্রতিষ্ঠানে আমি পূর্বে তিন বার সভাপতি পদে ছিলাম। কিন্ত গত ১৫ বছর ধরে এ প্রতিষ্ঠানে কোন সচ্ছতা ছিল না। রেজিস্ট্রার খাতায় ‘বিসিসিআই’ সকল তথ্য লিপিবদ্ধ।
সচিব মোঃ ইলিয়াস হোসেন লাভু বলেন, মদ্যপান করে গত ৬ সেপ্টেম্বর রাত সাড়ে ১১ টার সময় আমার বাসায় গিয়ে ব্যবসায়ী শেখ আব্দুর রহিম চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির রেজিস্ট্রার খাতা দেখতে চায়। ব্যবসায়ী শেখ আব্দুর রহিম এ প্রতিষ্ঠানের সদস্য হওয়ায় সরল মনে আমি রেজিস্ট্রার খাতা তার হাতে তুলে দেই। কিন্তু কোন কিছু না বলেই হঠাৎ খাতা নিয়ে চলে যেতে চায় শেখ রহিম। আমি বাঁধা দিলে রহিম আমাকে মারতে আসে। আমি ডাক চিৎকার দিলে এলাকাবাসী শেখ রহিমকে ধরে গণধোলাই দেয়। জনতার চাপের মুখে রেজিস্ট্রার খাতা ফেলে দিয়ে পালিয়ে যায় রহিম। এ সময়ই ঘটনাস্থলে আসে ‘দি বরিশাল চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি’ এর সাবেক সভাপতি এবায়দুল হক চাঁন। তিনিই রেজিস্ট্রার খাতাটি আমার হাতে তুলে দেন। বিষয়টি জানাজানি হলে ‘দি বরিশাল চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি’ এর সদস্যদের মধ্যে তোলপাড় শুরু হয়।
শেখ রহিম হলেন- বরিশাল নগরীর চকবাজার ময়ূরী ডিপার্টমেন্টাল স্টোর এর স্বত্বাধিকারী। ঘটনা সম্পর্কে জানতে চাইলে- তার ব্যবহৃত মুঠোফোন (০১৭১৫ ০৪৪ ৯২৩) নম্বরে সন্ধ্যা ৬টা থেকে সোয়া ৭টা পর্যন্ত ৮ বার কল দিলেও রিসিভ করেননি তিনি। জানা গেছে, ব্যবসায়ী শেখ রহিম এক সময় বরিশাল সদর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। এসময় তিনি ত্রাণের ভালো ভালো শাড়ী দোকানে নিয়ে বিক্রি করতেন। বিনিময়ে সংখ্যা অনুযায়ী কম দামের শাড়ী মানুষের মাঝে বিতরণ করতো। এভাবে রাতারাতি তিনি বিত্ত বৈভবের মালিক বনে যান। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসলে তিনি রাতারাতি ভোল পাল্টে আওয়ামী লীগ বনে যান। অভিযোগ রয়েছে দীর্ঘ ১৫ বছর আওয়ামী লীগের সাথে ব্যালেন্স করেন। এই সময়ে বিএনপি নেতাকর্মীদের শেখ রহিম এড়িয়ে চলেন। ফলে তার কর্মকান্ডে বরিশাল সদর উপজেলা বিএনপি সাংগঠনিকভাবে ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছিল।
উল্লেখ্য, ছাত্র জনতার আন্দোলনে স্বৈরাচার শেখ হাসিনা সরকারের গত ৫ আগস্ট পতন ঘটলেও ব্যবসায়ী সাইন বোর্ডের অনুকূলে পরিকল্পনা অনুযায়ী রেজিস্ট্রার খাতা ছিনিয়ে নেয়ার ষড়যন্ত্র করে রহিম।
Leave a Reply