ভান্ডারিয়া প্রতিবেদক ॥ বৃষ্টি ও ভরা মৌসুমে নদীনালা-খালবিল আর নীচু জমির ভরা পানিতে শুরু হয় মৎস্য নিধনযজ্ঞ। আর এতে ব্যবহার করা হচ্ছে বিভিন্ন উপকরণ। এতে এক দিকে যেমন পানির স্বাভাবিক গতি ও স্রোত বাধাগ্রস্থ্য হচ্ছে, তেমনি হারাচ্ছে মৎস্য ও জলজ প্রাণীসম্পদ। বিশেষ করে চাই, বুছনা, খুচন, বাধাজাল, ছান্দিজাল, ফান্দিজাল, ফেরিজাল, ধর্মজাল, জাকিজাল, বেশনা জাল, চরগড়া, কারেন্টজালের ব্যবহারে বাগদা ও চিংড়ি রেনুসহ অন্যান্য সকল জাতের দেশিও মাছের রেনু হুমকির মুখে পড়েছে। এনকি এরই মধ্যে বিলুপ্তি হয়েছে কিছু কিছু প্রজাতির মাছ। শুধু মাত্র মাছ নিধন নয় সাথে জলজ প্রানী কৃটপতঙ্গ, পোকা মাকড়, সাপ, ব্যাঙ, কুচেসহ অন্যান্য প্রাণী অকালে প্রান হারাচ্ছে। তাই এমনি রেনু পোনা নিধন চলতে থাকলে ভবিষ্যতে দেশ হারাবে দেশীয় মাছের একটি বড় অংশ।
খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, ‘বর্তমান সময়ে বাজারগুলোতে দেশীয় প্রজাতীর মাছের আকাল দেখা দিয়েছে। যাওয়া পাওয়া যাচ্ছে তার মূল্য রাখা হচ্ছে দ্বিগুন। এর প্রধান কারণ হিসেবে অবাধ্যে মৎস্য শিকারকেই দায়ি করছেন সংশ্লিষ্টরা। মৎস আড়ৎ সমিতির সভাপতি মাহবুব উল আলম স্বীকার করে বলেন, বর্তমানে মৎস্য আহরন অর্ধেক নেমে এসেছে। আরো কমার সম্ভাবনা রয়েছে। এর থেকে দেশীয় মৎস্য সম্পদ রক্ষায় অবাধে রেনুপোনা নিধন বন্ধ করতে হবে। সরেজমিনে ভান্ডারিয়ার বিভিন্ন হাটবাজার ঘুরে দেখা গেছে, ‘মাছ ধরার উপকরনে ছেয়ে গেছে গোটা বাজার। বর্ষা মৌসুম বিধায় গ্রামের মানুষের মাঝে এর চাহিদাও বেশি রয়েছে। বিভিন্ন দামে মাছ শিকারের ফাদ কিনে নিচ্ছেন ক্রেতারা। মুঠোফোনে উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা বলেন, রেনু পোনা নিধন রোধে ইতিমধ্যেই আমরা মোববাইল কোর্ট এর মাধ্যমে সচেতনতা বৃদ্ধির আহবান ও জরিমানা করা হয়েছে। তবে বর্তমানে করোনা পরিস্থিতির কারণে সেই কার্যক্রম কিছুটা ব্যাহত হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘প্রয়োজনীয় সচেতনতার অভাব ও অতিরিক্ত লোভের কারণে প্রতিনিয়ত ভেদা, কৈ, শিং, মাগুর, পাবদা, বাইন, শোল, টাকী, পুটি, মলা-ঢেলা, ফলি, চিতলসহ বিভিন্ন প্রজাতীর দেশীয় মাছ হারিয়ে যাওয়ার অপেক্ষায় আছে। তাই সকল মহলে এখন থেকেই প্রয়োজনীয় সচেতনতা ও আইনের কড়াকড়ি বিধিনিষেধ আরোপ না করলে জীববৈচিত্র ও জলজ প্রানীর বিন্যাস হুমকি মুখ থেকে রক্ষা করা যাবে না। ইতিহাস হয়ে যাবে ‘মাছে ভাতে বাঙ্গালী’র সেই গল্প।
Leave a Reply