নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ করোনাভাইরাসের সঙ্কটময় পরিস্থিতিতে বেতন-ভাতা না দিয়ে বরিশাল নগরীর অলিম্পিক সিমেন্ট কারখানার শ্রমিক ছাঁটাইয়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এমনকি বকেয়া বেতনের টাকা চাওয়ায় দুই শ্রমিককে মারধরের অভিযোগ রয়েছে।
এর প্রতিবাদে রোববার (০৭ জুন) সকাল ১১টায় নগরীর সদর রোডস্থ অশ্বিনী কুমার টাউন হলের সামনে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছে অলিম্পিক সিমেন্ট খারখানা থেকে ছাড়াই হওয়া দেড়শ শ্রমিক-কর্মচারী ও তাদের পরিবারের সদস্যরা। কারখানার ছাঁটাই হওয়া স্টোর কিপার মেজবাহ উদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশে সংহতি জানিয়ে বক্তব্য রাখেন বরিশাল জেলা বাসদের আহ্বায়ক প্রকৌশলী ইমরান হাবিব রুমন, সদস্য সচিব ডা. মনীষা চক্রবর্তী, সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের সাংগঠনিক সম্পাদক শহীদুল ইসলাম, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের বিজন শিকদার ও সুজন আহমেদ। এছাড়াও ছাঁটাই হওয়া শ্রমিকদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন মো. ইউসুফ, শাহবুজ্জামান, সাইদ মোল্লা, মো. মেহেদী ও মো. শহীদুল, মো. জাহাঙ্গীর হোসেন, মো. হাফিজুল ইসলাম, মো. সোহেল হাওলাদার, মো. রাকিব, রায়হান হাওলাদার, খুশি বেগম, শাহ আরজুমান প্রমুখ। সভাপতির বক্তব্যে মেজবাহ উদ্দিন বলেন, ১ জুন থেকে আমাদের কাজে যোগদান করার কথা ছিল। কিন্তু ৩১ মে রাতে আমাদের কোন ধরনের পূর্ব নোটিশ ছাড়াই টেলিফোন করে কারখানায় যেতে নিষেধ করা হয়। ১ জুন কারখানায় এ বিষয়ে কথা বলতে গেলে আমাদের আন্দোলন না করার জন্য হুমকি দেয়া হয় এবং ভয়ভীতি দেখানো হয়। কারখানা কর্তৃপক্ষ শ্রম আইন লঙ্ঘন করে প্রায় দেড়শ শ্রমিককে ছাঁটাই করেছে। সেই সঙ্গে আমাদের বকেয়া বেতন, বোনাস, ওভারটাইমের মজুরি কিছুই দেয়া হয়নি।
মেজবাহ উদ্দিন বলেন, আমাদের তিন মাসের বেতন বকেয়া রয়েছে। তাছাড়া ঈদ বোনাসাও ও প্রাপ্ত ইনক্রিমেন্ট পাইনি। তার মধ্যে করোনাভাইরাসের কারণে শুরু থেকেই ওভারটাইম ডিউটি করতে হয়েছি। কিন্তু আমাদের প্রাপ্য বুঝিয়ে না দিয়েই এই করোনা পরিস্থিতির মধ্যে অমানবিকভাবে ছাঁটাই করা হয়েছে। তিনি বলেন, ছাঁটাই হওয়ার পরে চাকরিতে পুন. বহাল হওয়ার জন্য কর্তৃপক্ষের বরাবর লিখিত আবেদন করেছি, কিন্তু কোন কাজ হয়নি। তাছাড়া বকেয়া বেতন চাইতে গেলে কোম্পানির প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. সুজাদ অটোমোবাইল শ্রমিক মাসুদ হাওলাদার ও শাহজাহান গাজীকে মারধর করের অভিযোগ করেন শ্রমিকরা। হালওাদার, শাহজাহান গাজী অটোমোবাইল শ্রমিককে
জেলা বাসদের সদস্য সচিব ডা. মনীষা চক্রবর্তী বলেন, করোনার দুর্যোগে মালিকদের উচিত ছিল শ্রমিকদের পাশে দাঁড়ানো, কিন্ত তা না করে উল্টো শ্রমিকদের ছাঁটাই করছে তারা। বিষয়টি অমানবিক। এমনকি এই শ্রমিকদের প্রাপ্য বকেয়া বেতন, বোনাস কিছুই দেয়া হয়নি। অবিলম্বে তাদের সমস্ত বকেয়া পরিশোধের দাবি জানাই। তা না হলে শুধু অলিম্পিকের শ্রমিক নয়, বরিশালের সব শ্রমিকদের যুক্ত করে কঠোর আন্দোলনের মাধ্যমে দাবি আদায় করা হবে। ছাঁটাই এবং মারধরের অভিযোগ সম্পর্কে বক্তব্য জানতে অলিম্পিক সিমেন্ট কোম্পানির প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. সুজাদ এর মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি তা রিসিভ করেননি।
Leave a Reply