কলাপাড়া প্রতিনিধি ॥ কলাপাড়া করোনা ভাইরাসের উপদ্রপে অন্যান্য সকল শ্রেনীর ব্যবসায়ীদের ব্যবসায় মন্দাভাব বিরাজ করলেও এখানে সুদি মহাজনদের ব্যবসা রয়েছে বেশ তুঙ্গে। এসব সুদি ব্যবসায়ীদের বেশীর ভাগই স্বর্ন ব্যবসার সাথে জড়িত। মাছ ও ধান নির্ভর এই এলাকায় বর্তমানে ক্ষেতে যেমন ধান নেই, তেমনি সাগরে ৬৫ দিনের অবরোধের কারনে জেলেরা সাগরে মাছ শিকারে যেতে পারছে না। অপরদিকে লকডাউনের কারনে অন্যান্য ব্যবসায়ীদের ব্যবসা দীর্ঘদিন বন্ধ থাকায় আর্থিক সংকটে রয়েছেন অনেকে। আর এ লকডাউনেও থেমে থাকেনি সুদি মহাজনদের ব্যবসা। তাদের দোকান বন্ধ থাকা অবস্থায়ও বাসা-বাড়ীতে চালিয়েছিল তাদের সুদ ব্যবসার কার্যক্রম। এরা করোনা ভাইরাসের আক্রমনকে কখনো আমলে নেয়নি। মানছে না স্বাস্থ্যবিধিও।
করোনা ভাইরাসের কারনে অনেক শ্রমজীবি মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়ায় তাদের অসহায়ত্বের সুযোগ নিয়েছে এ সুদি ব্যবসায়ীরা। এ ব্যবসা সাংকেতিক আকার ইঙ্গিতে করায় প্রমানও রাখছে না তারা। এদের অধিকাংশের কোন লাইসেন্স নেই । এরা সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দিচ্ছে অহরহ । অনেক স্বর্ন ব্যবসায়ী সামনে স্বর্নের গহনা সাজিয়ে রাখলেও অন্তরালে তাদের সুদ ব্যবসা । কেউ কেউ মাত্র কয়েক বছর আগেও দোকানের কর্মচারী হিসেবে থেকেও সে এখন এলাকায় কোটিপতি হিসেবে পরিচিত। বর্তমানে এ সুদি ব্যবসায়ীরা চরা সুদে কেড়ে নিচ্ছে সাধারন মানুষের টাকা পয়সা। তারা এখন রেকর্ডের ভয়ে মুখে এর রেট না বলে আঙ্গুল দিয়ে দেখাচ্ছে শতকরা পার্সেনটিসের হার। তাতে কারো কাছে শতকরা ৫ টাকা কারো কাছে ৬ টাকা কারো কারো কাছে ৭ থেকে ১০ টাকা পর্যন্ত নেয়া হচ্ছে বলে ভুক্তভোগীদের অনেকে নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছেন।
কলাপাড়া পৌরশহর সহ উপজেলার অন্তত: শতাধিক স্বর্ন ব্যবসায়ীরা ছাড়াও রয়েছে সমাজের বিত্তবানদের অনেকে এ ব্যবসার সাথে জড়িত। তবে ছোট ছোট স্বর্ন ব্যবসায়ীরা অপেক্ষাকৃত বড় বড় ব্যবসীয়দের উৎসাহে ও ছত্রছায়ায় এ ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে । তাদের অনেকে যৎ সামান্য পুজি নিয়ে নামলে মাত্র কয়েক বছরে তারাও এখন এলাকায় বিত্তশালীদের তালিকায় । অপরদিকে,এদের অধিকাংশের ব্যবসায় রয়েছে ভেজাল। যা বিশ্বাস করে নেয়া ছাড়া উপায় থাকে না। এসব ব্যবসায়ীরা কথায় কথায় সৃষ্টিকর্তার দোহাই দিয়ে চালিয়ে আসছেন তাদের ব্যবসা । এদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক কোন ঝক্কি ঝামেলা না থাকায়ও নীরবে তারা চালিয়ে আসছে এ সুদি ব্যবসা । সবচেয়ে আসল বিষয় এ সুদি ব্যবসায়ীদের অনেকে কলাপাড়ার স্থানীয় বাসিন্দা না হলেও রমরমা ব্যবসা করে বাসা-বাড়ী করে ঘাঁঁিট গেড়ে বসেছে এলাকায়।
Leave a Reply