বানারীপাড়া প্রতিবেদক ॥ ‘কাজীর গরু কেতাবে আছে, গোয়ালে নেই’ এমন অবস্থা হয়েছে বরিশালের বানারীপাড়ায়। গত ১৫ জুন এ উপজেলা রেড জোন ঘোষনা করা হলেও গত এক সপ্তাহেও নেই তার কোন বাস্তবায়ন। কোথাও দেওয়া হয়নি লকডাউন। এলাকাবাসীও মানছেন না স্বাস্থ্য বিধি। এ উপজেলায় খোদ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. এস এম কবির হাসানসহ ২৬ জন করোনা আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছেন। যার সিহংভাগই পৌর শহরে। এছাড়া বরিশাল ও ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে চিকিৎসাধিন অবস্থায় ৫ জন ও করোনাভাইরাসের উপসর্গ নিয়ে ২ জন ইতোমধ্যে মৃত্যুবরণ করেছেন। তাদের লাশ বানারীপাড়া পৌর শহরসহ উপজেলার বিভিন্ন স্থানে দাফন করা হয়েছে। এমনকি ওইসব মৃত ব্যক্তির বাড়িও লকডাউন করা হয়নি।স্বাস্থ্য কর্মকতা, নার্স ও কমিউনিটি ক্লিনিকের সিএইচসিপি করোনা আক্রান্ত হওয়ার পরেও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স লকডাউন করা হয়নি। প্রতি দিন প্রসূতিসহ নানা রোগে আক্রান্ত শত শত রোগী করোনা আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি নিয়ে সেখানে চিকিৎসা নিতে যাচ্ছেন । বানারীপাড়া পৌর শহরের প্রাণকেন্দ্রের বন্দর বাজারে প্রতিদিন কয়েক হাজার নারী-পুরুষ ক্রেতা-বিক্রেতা সামাজিক দূরত্ব বজায় না রেখে এবং কোন প্রকার স্বাস্থ্যবিধি না মেনে ভিড় করে থাকেন। এসব ক্রেতা বিক্রেতার সিংহভাগের মুখেই নেই মাস্ক।
অনেক নারী ক্রেতা সঙ্গে তার শিশু সন্তানদেরও নিয়ে আসেন। অন্তঃস্বত্ত্বা অনেক নারীকেও ঝুঁকি নিয়ে বাজার করতে আসতে দেখা যায়। শুধু পৌর শহরের বন্দর বাজারই নয় ইউনিয়ন পর্যায়ের হাট-বাজারগুলোতে উপচে পড়া ভিড় দেখা যায়। এদিকে স্থানীয় প্রশাসন সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খোলা রাখার নির্দেশ দিলেও তা মানছেন না অনেকেই। পৌর শহরের ১ নং ওয়ার্ডের উত্তরপাড় বাজারের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত খোলা রেখে বিকিকিনি করা হয় বলে অভিযোগ রয়েছে। অপরদিকে দিন যত গড়াচ্ছে এ উপজেলায় করোনা আক্রান্ত রোগির সংখ্যা ও মৃত্যুর মিছিল তত দীর্ঘ হচ্ছে। এ প্রসঙ্গে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ আব্দুল্লাহ সাদীদ জানান, গত ১৫ জুন বরিশাল সিভিল সার্জন বানারীপাড়া উপজেলাকে রেড জোনের প্রস্তাব করে তার কাছে চিঠি দিয়েছিলেন। তবে এখনি গোটা উপজেলা লকডাউন করার মতো পরিবেশ হয়নি। দু’একদিনের মধ্যে পৌর শহরের ১ ও ৯ নং ওয়ার্ড এবং উপজেলার ইলুহার ইউনিয়নের একটি গ্রামকে রেড জোনের আওতায় এনে লকডাউন করার প্রক্রিয়া চলছে।
এ বিষয়ে বানারীপাড়া উপজেলা চেয়ারম্যান আলহাজ্ব গোলাম ফারুক বলেন, সবার আগে মানুষের জীবন। আর সেই জীবন রক্ষার্থে সার্বিক দিক বিবেচনা করে পর্যায়ক্রমে লকডাউন সহ প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপই গ্রহণ করা হবে। এ ব্যপারে স্থানীয় সংসদ সদস্য মো. শাহে আলমের নির্দেশনায় ইউএনও সহ সংশ্লিষ্টদের নিয়ে বৈঠক করে দ্রুত সিন্ধান্ত নেওয়া হবে বলেও তিনি জানান। অপরদিকে সচেতন এলাকাবাসী মানুষের জীবন রক্ষার্থে কোভিড-১৯ প্রাণঘাতি নভেল করোনাভাইরাসের বিস্তৃতি রোধে প্রয়োজনে গোটা এলাকা লকডাউন করার দাবি জানিয়েছেন।
Leave a Reply