নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ করোনার জ্বরে কাঁপছে গোটা নগরী। তার মধ্যে সন্ধ্যা নেমে আসলেই পুলিশের কড়াকড়ি। অকারণে কাউকে বাইরে ঘোরাফেরা করতে দিচ্ছে না তারা। কিন্তু পুলিশ আর করোনার ভয় আটকে রাখতে পারছে না চোর চক্রকে। বরং নিঝুম নীরবতার সুযোগেই কাজ সেরে নিচ্ছে চক্রটি। এমনি একটি ঘটনা ঘটেছে বরিশাল মহানগরীর কাউনিয়া থানা এলাকায়। সংঘবদ্ধ মোটরসাইকেল চোর চক্র ওই এলাকায় এক রাতে তিনটি বাড়িতে হানা দিয়েছে। কিন্তু দুই বাড়িতে ব্যর্থ হলেও একটি বাড়ির মোটরসাইকেল চুরি করতে সক্ষম হয়েছে তারা। ঘটনাটি ঘটেছে গত রোববার দিবাগত রাত ৩টা থেকে সোয়া ৪টার মধ্যে। তবে এই ঘটনায় এখনো পর্যন্ত থানায় কোন অভিযোগ বা ডায়েরী হয়নি বলে জানিয়েছেন কাউনিয়া থানার ওসি।
প্রত্যক্ষদর্শী এবং ভুক্তভোগী কাউনিয়া এলাকার বাসিন্দা নাইমুল ইসলাম রাজু দাবি করেছেন, করোনা পরিস্থিতিতে ওই এলাকায় মোটরসাইকেল চোর চক্র সক্রিয় হয়েছে। রাতভর তারা এলাকায় ঘুরে ঘুরে মোটরসাইকেল চুরির মিশনে যাচ্ছে। শেষ রাতে টহল পুলিশ যখন ক্লান্তিলগ্নে পৌঁছে তখনই মিশন সম্পন্ন করে কেটে পড়ে চক্রের সদস্যরা। নাইমুল ইসলাম রাজু বলেন, ‘রোববার রাত তখন ৩টার কাছাকাছি। সংঘবদ্ধ মোটরসাইকেল চোর চক্র কাউনিয়ায় তাদের বাড়ির কলাপসিবল গেট কেটে ভেতরে প্রবেশ করে। পরে ভেতরে থাকা মোটরসাইকেলের সাথে থাকা পাঁচটি তালা কেটে চুরির চেষ্টা করে। কিন্তু গাড়ি নামিয়ে রাস্তা থেকে যাওয়ার সময় স্থানীয় একজন চোরদের একজনকে দেখে ফেলেন। এসময় ওই ব্যক্তির ধাওয়া খেয়ে চোর মোটরসাইকেল রেখে পালিয়ে যায়।
এদিকে নাইমুল ইসলাম রাজুদের বাড়িতে চুরিতে ব্যর্থ হলেও চেষ্টা থেমে থাকেনি চক্রটির। বরং ওই রাতেই দ্বিতীয় দফায় হানা দেয় পার্শ্ববর্তী বাসিন্দা ও স্থানীয় একটি পত্রিকার মালিক এস. আলাল এর বাড়িতে। কিন্তু ওই বাড়িতে গিয়েও সুবিধা করতে পারেনি তারা। আলালের ঘরের গেট কাটার সময় দ্বিতীয় দফায় ধাওয়া খেয়ে পালিয়ে যায়। এরপর রাত সোয়া ৪টার দিকে চক্রটি তৃতীয় দফায় হানা দেয় কাউনিয়া জানুকিসিংহ রোডের পার্শ্ববর্তী তায়ীমদের বাড়িতে। কেউ কিছু টের পাওয়ার আগেই তার একটি সুজুকি এক্স.আর মোটরসাইকেল চুরি করে পালিয়ে যায় চক্রটি। কিন্তু টানা সোয়া এক ঘণ্টা ধরে চোরের চুরি প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকলেও এ সময়ের মধ্যে চোখে পড়েনি পুলিশের টহল টিম। যদিও ঘটনার পরে খবর পেয়ে কাউনিয়া থানা পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। এসময় সেখান থেকে চোর চক্রটির ফেলে যাওয়া একটি চাপাতি, একটি রেইঞ্জ, একটা সাঁড়াশি ও একটা গামছা জব্দ করেছে তারা। এদিকে ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীরা দাবি করেছেন চুরি হওয়া মোটরসাইকেলে তিনজন ব্যক্তি উঠেছিল। এর মধ্যে দু’জন ওই রাতেই মোটরসাইকেল থেকে নেমে গলির মধ্যে ঢুকে পড়ে। কিন্তু তাদের দু’জনকে কেউ চিনতে পারেনি দাবি স্থানীয়দের। তবে পুলিশের ধারণা চোর চক্রের যে দু’জন সদস্য পথিমধ্যে নেমে গেছে তারা একই এলাকার বাসিন্দা হতে পারে। এ প্রসঙ্গে কাউনিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আজিমুল করিম বলেন, জানুকিসিংহ রোডে মোটরসাইকেল চুরির ঘটনা শুনেছি। সেখানে আমাদের পুলিশের টিম পরিদর্শন করেছে। তবে এই ঘটনায় এখনো কোন অভিযোগ বা মামলা হয়নি। ক্ষতিগ্রস্তরা মামলা করলে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
Leave a Reply