ইউসুফ আলী সৈকত, মেহেন্দিগঞ্জ ॥ মেহেন্দিগঞ্জে কাজের মেয়ে ধর্ষণ ও ৬/৭ মাসের ব্রুন হত্যা, কথিত সাংবাদিক কর্তৃক শালিস মিমাংসা ও পুলিশের হস্তক্ষেপে মামলা দায়ের করার ঘটনা ঘটেছে।
সুত্র জানায়, বরিশাল জেলার মেহেন্দিগঞ্জ উলজেলার ৩ নং চর এককরিয়া ইউনিয়নের চরলতা গ্রামের মোঃ আক্কাছ আলীর মেয়ে সীমা (১৪) কে বিগত ৭/৮ মাস পূর্বে জুয়েল শাহ, পিতা: তোফাজ্জেল হোসেন হিরু শাহ ৫ নং সদর ইউনিয়নের চরহোগলা গ্রামে কাজের ভূয়া হিসেবে যোগদান করান। জুয়েল শাহ কাজে যোগদানের কয়েকদিন পরেই সীমা (১৪) কে নানা রকম ভয়ভীতি দেখিয়ে জোরপূর্বক শারিরীক সম্পর্ক করতে বাধ্য করে। কিন্তু সীমা বাঁধা দেওয়ার চেষ্টা করলে জুয়েল ক্ষিপ্ত হয়ে সুযোগ বুঝে সীমাকে বাসার রুমের মধ্যে আটকে জোরপূর্বক ধর্ষন করে। এরপর প্রতিনিয়ত সীমা’কে ব্লাক মেইল করে ও বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে একাধীকবার অবৈধ সম্পর্ক তথা শারিরীক সম্পর্ক করেন। এরই ফলশ্রুতিতে সীমার জানুয়ারী মাসে গর্ভে সন্তান চলে আসে। কিন্তু সীমা কিশোরী থাকার কারনে বুঝতে পারে নাই সে গর্ভবতি হয়ে গেছে। গর্ভাবস্থায় বেশ কয়েকবার জুয়েল শাহ সীমার সাথে শারিরীক সম্পর্ক করেন। গর্ভে সন্তান আসার পর নানা রকম শারিরীক অসুস্থ্যতার জের ধরে জুয়েল শাহ’র স্ত্রী মোসাঃ লীয়া’র কাছে ঘটনা খুলে বলেন। তখন জুয়েল শাহ’র স্ত্রী লীয়া সীমা কে বলেন, তোর কিচ্ছু হয় নি। এভাবে চলতে থাকে ৩ মাস, যখন ধীরে ধীরে সীমা বেশি অসুস্থ্য হয়ে পড়ে, তখন জুয়েল শাহ বিষয়টি বুঝতে পেরে, সীমাকে সরাসরি বরিশাল শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গাইনী ওয়ার্ডে নিয়ে যান। সেখানের ডাক্তার ও নার্স এ অবস্থায় বাচ্চা নষ্ট না করার পরামর্শ দিলে জুয়েল শাহ তার এক বন্ধুর বাসায় নিয়ে যায়। সেখানে নিয়ে এক নার্স ও আয়াকে দিয়ে ৬ মাসের মেয়ে বাচ্চা প্রসব করান। এক পর্যায় মেয়েটি বৃহস্পতিবার সন্ধায় মেহেন্দিগঞ্জ থানায় মামলা করতে আসলে দালাল খ্যাত কথিত সাংবাদিক ভিকটিমকে থানা থেকে নিয়ে উভয় পক্ষকে উপস্থিত রেখে একটি শালিস মিমাংসায় বসেন। সেখানে অভিযুক্তের সাড়ে ৩ লাখ টাকা জরিমানা করেন। এর মধ্যে মেয়ের পরিবারকে দেড় লাখ টাকা দিয়ে বাকি টাকা দালালচক্র আত্মসাৎ করেন।
এভাবে একটি নবজাতককে জন্মের সাথে সাথে হত্যা ও মেয়েকে ধর্ষন করে অর্থ বিত্তের মালিক জুয়েল শাহ পার পেয়ে যাওয়ায় সংবাদ পেয়ে মেহেন্দিগঞ্জ থানা পুলিশের হস্তক্ষেপে শনিবার অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে মেয়ের বাবা আক্কাছ আলী বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলা নং ১০। এই ঘটনায় দালালদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও বলেন পুলিশ। এ নিয়ে এলাকায় তীব্র ক্ষোভ ও নিন্দার ঝড় ওঠে। এই বিষয়ে ভিকটিমের বাবা বলেন আমরা থানায় মামলা করতে গেলে এক সাংবাদিকসহ কয়েক ব্যাক্তি থানায় গিয়ে আমাদের নিয়ে আসেন ফয়সালা করে দিবেন বলে। পরে বলে আপনি দেড় লাখ টাকা নিয়ে চুপ থাকেন। অভিযুক্ত জুয়েল শাহ ফোন রিসিভ না করায় তার বক্তব্য নেওয়া যায়নি। এবিষয়ে ওসি আবিদুর রহমান জানান, আসামীদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
Leave a Reply