নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ বাঁশের কয়েকটি খুঁটির উপর দাঁড় করানো ছোট্ট একটি ঝুপরি ঘর। পুরনো ঢেউটিন আর পলিথিন দিয়ে মোড়ানো নড়বড়ে এ ঘরটিতে মানবেতর দিন কাটছে মানসিক প্রতিবন্ধী বৃদ্ধা নিলুফা বেগমের। প্রায় ৬০ বছর বয়সী এ বৃদ্ধা স্বামী-সন্তানসহ সব হারিয়ে বর্তমানে মানবেতর জীবনযাপন করছে। বরিশাল সদর উপজেলার ১০ নং চন্দ্রমোহন ইউনিয়নের ৮নং টুমচর গ্রামের নিলুফার ভাগ্যে এখনো পর্যন্ত জোটেনি বয়স্ক, বিধবা অথবা সরকারি কোনো ভাতা। পায়নি প্রধানমন্ত্রীর বরাদ্দের ঘর। মঙ্গলবার (৩০ জুন) সকালে নিলুফা বেগমের খোঁজ নিয়ে জানা গেছে- তার জীবনের দুর্বিষহ কষ্টের ইতিহাস। তিনি জানান, প্রায় ১৫ বছর আগে স্বামী আজাহার আলী মারা যান। হতদরিদ্র স্বামী নিলুফার জন্য শুধুমাত্র বসত ভিটেটুকু ছাড়া অন্য কোনো সহায়-সম্পদ রেখে যাননি। বৃদ্ধ নিলুফা কোনো কাজই এখন আর করতে পারেন না। তাই কোনো উপায় না দেখে বর্তমানে মানুষের দ্বারে দ্বারে হাত পেতে জীবন চালাচ্ছেন। নিলুফা বেগম কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, পৃথিবীতে আমার কেউ নাই। ঘর নাই। খাবার নাই। আমাকে দেখার মতো কেউ নাই। সরকারি কোনো কার্ডও নাই। তাই সরকার যেন একটি ঘর তৈরি করে দিয়ে এবং একটি বয়স্ক অথবা বিধবা ভাতার কার্ড করে দিয়ে শেষ জীবনের নিরাপত্তা দেয় সে জন্য তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুদৃষ্টি কামনা করেন।
এ নিয়ে নিলুফার প্রতিবেশী যুবক সুজন সাথে কথা হলে তিনি জানান, নিলুফা বেগম সত্যি চরম অসহায় ও মানবেতর জীবন কাটাচ্ছেন। যে ঝুপরি ঘরটিতে নিলুফা বাস করছেন যে কোনো সময় ঝড়-তুফানে সে ঘরটিকে উড়ে যেতে পারে। এ অসহায় বৃদ্ধা কোনো সরকারি ত্রাণ বা কোনো বয়স্ক ভাতা বা বিধবা ভাতার আওতায়ও আসেননি। আমরা সংশ্লিষ্টদের অনুরোধ করছি, তাকে দ্রুত সরকারি ভাতার একটি কার্ড এবং নিরাপদভাবে থাকার মতো সরকারি একটি ঘর করে দেয়ার ব্যবস্থা করে দেন। এ বিষয়ে ৮ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মামুন সন্নামত বলেন, জাতীয় পরিচয়পত্র না থাকায় তাকে কোন সহায়তা দেয়া হচ্ছে না। প্রধানমন্ত্রীর বরাদ্দের ঘর দেয়ার জন্য চেষ্টা করতেছি। এ বিষয়ে স্থানীয় ১০ নং চন্দ্রমোহন ইউনিয়ন পরিষদের একেএম আবদুল আজিজ বলেন, নিলুফা কোনোদিন আমার কাছে আসেন নি। তবে স্থানীয় মেম্বারের মাধ্যমে তাকে সহায়তা করা হবে।
Leave a Reply