সোমবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:৪০ পূর্বাহ্ন

উপ-সম্পাদক :: দিদার সরদার
প্রধান সম্পাদক :: সমীর কুমার চাকলাদার
প্রকাশক ও সম্পাদক :: কাজী মোঃ জাহাঙ্গীর
যুগ্ম সম্পাদক :: মাসুদ রানা
সহ-সম্পাদক :: এস.এম জুলফিকার
প্রধান নির্বাহী সম্পাদক :: মামুন তালুকদার
নির্বাহী সম্পাদক :: সাইফুল ইসলাম
ব্যবস্থাপনা সম্পাদক :: আবুল কালাম আজাদ
সংবাদ শিরোনাম :
গৌরনদীতে দৈনিক যুগান্তরের বিরুদ্ধে বিড়ি শ্রমিক ও ব্যবসায়ীদের প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ মিছিল দুষ্টামিটাও ছিল যেমন স্পর্শকাতর, খেসারাতটাও দিতে হল তেমনি ভয়ঙ্কর বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী সাংস্কৃতিক দলের ৫ সদস্যের বরিশাল মহানগরে আহ্বায়ক কমিটি গঠন গৌরনদীতে ইউএনওর নেতৃত্বে স্বেচ্ছাশ্রমে খালের কুচুরিপানা ও ময়লা পরিস্কার করল বৈষম্য বিরোধী ছাত্ররা বর্নাঢ্য র‌্যালি ও আলোচনা সভার মধ্যদিয়ে গৌরনদীতে জাতীয় সমবায় দিবস পালিত আমাদের নেতা তারেক রহমান একটি সাম্যের বাংলাদেশ গড়তে চান-জহির উদ্দিন স্বপন মেয়র হারিছ গ্রেপ্তারের খবরে গৌরনদীতে সাধারন মানুষের উল্লাস ফাঁসির দাবিতে বিএনপির বিক্ষাভ মিছিল গৌরনদীতে এইচপিভি টিকা দান ক্যাম্পেইনের শুভ উদ্বোধন কাশিপুরের ড্রেজার ব্যবসায়ী সুমনের অপকর্মে কেউ খুন হলে দায় নেবে না বিএনপি এতিম শিশুর অধিকার নিশ্চিতে দ্বারে দ্বারে ঘুরে বেড়াচ্ছেন বিধবা মা
রাঙ্গাবালীতে আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘরগুলো দীর্ঘদিনেও সংস্কার নেই

রাঙ্গাবালীতে আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘরগুলো দীর্ঘদিনেও সংস্কার নেই

চালের টিন জরাজীর্ণ। সামান্য বৃষ্টি হলেই ঘরের মেঝেতে পানি জমে যায়। তখন পানিবন্দি থাকতে হয়। অন্যদিকে সিমেন্টের খুঁটি খসে খসে পড়ছে। নাট-স্ক্রু ও লোহার উপকরণ জীর্ণশীর্ণ। একারণে বাতাস এলেই ঘর দুলতে থাকে। দুর্যোগকালে ঝড়ো হাওয়ায় ঘর উড়িয়ে নেয়ার আতঙ্কে নির্ঘুম রাত কাটে বাসিন্দাদের। এমন অবস্থা পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলার ১৬টি আশ্রায়ণ প্রকল্পে বসবাসরত দেড় হাজার পরিবারের।

জানা গেছে, ভূমিহীন জনগোষ্ঠির বাসস্থানের জন্য ১৯৯৭ সাল থেকে পর্যায়ক্রমে রাঙ্গাবালী উপজেলায় আশ্রয়ণ প্রকল্পগুলো তৈরি করে সরকার। এতে বিভিন্ন এলাকার ছিন্নমূল পরিবারকে পুনর্বাসন করা হয়। কিন্তু ঘরগুলো দীর্ঘ দিনেও সংস্কার না হওয়ায় চালের টিন, নাট-স্ক্রু, লোহার উপকরণ ও সিমেন্টের পিলার খসে পড়ে ঘরগুলো বসবাসের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। সরকারিভাবে সেগুলো সংস্কারের কোনো উদ্যোগ নেয়া হয়নি। এসব ঘরে এখন ঝুঁকি নিয়ে বসবাস করতে হচ্ছে হতদরিদ্র লোকদের। রাঙ্গাবালী উপজেলার ১৬টি আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতায় ১ হাজার ৬শ’ ৮৫ পরিবারে প্রায় সাড়ে ৮ হাজার নারী-শিশু ও পুরুষের বসবাস।

স্থানীয়রা জানায়, আশ্রয়ণ নির্মাণ করায় হতদরিদ্র ভূমিহীন পরিবারের মাথা গোজার ঠাঁই হয়েছিল। সরকারের এই পরিকল্পনায় উপকূলের হাজারো হতদরিদ্র ও ভূমিহীন পরিবার আশার আলো দেখছিল। কিন্তু তা খুব স্থায়ী হয়নি। তা ছিল ক্ষণস্থায়ী। কারণ পরিকল্পনা ছাড়াই অধিকাংশ আশ্রয়ণ নির্মাণ করা হয়েছিল দুর্গম, নির্জন ও যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন এলাকায়। বিশেষ করে বেশির ভাগ আশ্রয়ণ নির্মাণ করা হয় নদীর র্তীরবর্তী কিংবা বেড়িবাঁধের বাইরে। যেখানে নেই দোকনপাট, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, সামাজিক ও সভ্যতার কলরব। এছাড়াও অধিকাংশ আশ্রয়ণের কবুলিয়ত রেজিস্ট্রি বাসিন্দদের নামে না থাকায় সমাজসেবা অধিদফতর ও পল্লী উন্নয়ন ব্যাংকসহ সরকারি বেসরকারি কোন প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ গ্রহণ করতে পারছেন না সেখানকার বাসিন্দারা। সামাজিক ও প্রতিষ্ঠানিক শিক্ষা না থাকায় নারী ও শিশুরা আবদ্ধ হয়ে আছে কুসংস্কারের করাল গ্রাসে। মেধা বিকশিত না হওয়ার ফলে দারিদ্র্যমুক্ত হতে পারছেন না ভূমিহীন এ জনগোষ্ঠী।

বাহেরচর আশ্রয়ণের বাসিন্দা, কমেলা বেগম বলেন, ‘ঘরের চালের টিন নাই। পলিথিন দিয়া জোড়া-তালি দিয়ে থাহি। বাতাস আইলেই চাল উড়াইয়া নিয়া যায়। তহন বৃষ্টির পানিতে ঘর তলাইয়া যায়। এমনও সময় আছে, যহন তিন চার দিন পানির মধ্যে থাকতে হয়। রান্নাবান্না করার সুযোগও হয় না। অনেক সময় না খেয়ে থাকতে হয়।’

একই আশ্রয়ণের বাসিন্দা বৃদ্ধ দম্পত্তি হাচন ভানু ও তারা মিয়া বলেন, ‘পোলাপানে আমাগোরে জিগায় না। ঘর বাড়ি নাই। আমরা অসহায়। এই লাইগ্গা আমরা আশ্রয়ণে আইয়া উঠছিলাম। ১৫-২০ বছর ধইরা এইহানে থাহি। এ্যাহন এইহানের ঘরও নষ্ট অইয়া গ্যাছে। একটু বৃষ্টি অইলেই ঘর পানিতে ভাইরা যায়। সরকার আমাগো ঘর ঠিক কইরা দেয় না। আমরা নিজেরা যে ঠিক করমু, তাও টাহা না থাহায় পারছি না। আমাগো দুই মুঠ ভাত খাওয়ার টাহা জোগাড় করতেই সমস্যা অয়। এর মধ্যে আবার মাঝে মাঝে জোয়ারের পানিতেও ঘর তলাই যায়। সবদিক দিয়াই আমাগো দুর্ভোগ। আমগো দিগে কেউ ফিরা তাকায় না’।

তিল্লা আশ্রয়ণের কালাচান খাঁ বলেন, ‘এমনেতেই সংস্কার না হওয়ায় আমাগো ঘর নষ্ট হয়ে গেছে। এরমধ্যে আবার একের পর এক বন্যা আমাদের ঘর বাড়ি তছনছ করে ফেলছে। সরকার এখনও তা সংস্কার করে দিচ্ছে না। অর্থ সংকটে আমরাও সংস্কার করতে পারছি না। কারণ আমাদের আয়ের ভাল কোন উৎস নেই। এখানকার বাসিন্দাদের অনেকেই দিনমুজুর। এদিকে আশ্রয়ণের জমি বসবাসকারীদের নামে কবুলিয়ত রেজিস্ট্রি না থাকায় সরকারি বা বেসরকারি সংস্থাও ঋণ দেয় না। যার কারণে এখানকার মানুষ বহুমুখি সমস্যার মধ্যে আছে।’

রাঙ্গাবালী উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো: হুমায়ুন কবির জানান, দীর্ঘ দিন সংস্কার না হওয়া ও বিভিন্ন ঘূর্ণিঝড়ের তাণ্ডবে রাঙ্গাবালী উপজেলার আশ্রয়ণের ঘরগুলো এখন জরাজীর্ণ হয়ে গেছে। যার কারণে ওখানকার মানুষদের থাকতে কষ্ট হচ্ছে। এব্যাপারে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বরাবর লিখিতভাবে জানানো হয়েছে।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..



Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




© All rights reserved © 2017 Dokhinerkhobor.Com
Desing & Developed BY ThemesBazar.Com