নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ সুদের টাকা পরিাশেধ না করতে পারায় নগরীর রুপাতলী হাউজিং এলাকায় ব্যবসায়ী তারিকুলের দোকানে তালা ঝুলছে প্রায় ১৭দিন যাবত। এতে মানবেতন জীবন যাপন করছে ব্যবসায়ী তারিকুল ইসলাম ও তার পরিবার। তারিকুল পটুয়াখালী জেলা মির্জাগঞ্জ থানার আলম সিকদারের ছেলে। সে দির্ঘ দিন যাবত ওই এলাকায় তারিকুল স্টিল হাউজ নামে একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করে আসছে। ব্যবসার সুবাদে তারিকুল বাকেরগঞ্জের কালেঙ্গা উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক এনায়েত হোসেন পান্নার কাছ থেকে সুটে টাকা ধার নেয়। আর তারিকুলের দোকানে ম্যানেজারের চাকুরি নেয় খান মাসুদ। তবে এরা দুজনেই একই স্কুলে শিক্ষকতা করেন বলে জানান তারিকুল। খোজ নিয়ে জানাগেছে, স্কুল শিক্ষক হওয়া সত্বেও তারা দুজনেই বরিশাল নগরীতে বাসা ভাড়া নিয়ে থাকেন। কেউই স্কুলে যাননা। তারা বরিশালে বিভিন্ন ব্যবসায়ীর সাথে সুদে ব্যবসা করতেন। সুদের টাকার জন্য তারিকুলকে মারধরের অভিযোগে স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমে সংবাদ প্রচার হলে সুদ ব্যবসায়ীরা আরো ক্ষিপ্ত হয়ে যায়। তারা তারিকুলকে শালিশ মিমাংশার কথা বলে বিভিন্ন স্থানে ডেকে পাঠায়। জীবন বাঁচানোর ভয়ে তারিকুল তাদের নিধারিত স্থানে যেতে অপরগতা প্রকাশ করে।
জানাগেছে, তারিকুলের কাছ থেকে টাকা হাতাতে ওই এলাকার বেশ কয়েকজন মিলে তারিকুলের কাছ থেকে টাকা হাতাতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। তারা তারিকুলকে জিন্মি করে অর্থ লোপাটের চেষ্টা করছে। নগরীর রুপাতলী হাউজিং এলাকায় মেসার্স তারিকুল স্টিল হাউজের স্বত্তাধিকারী তারিকুল ইসলাম দির্ঘ দিন যাবত ওই এলাকায় ব্যবসা পরিচালনা করে আসছে। ব্যবসার জন্য তিনি নগরীর সাগরদী এলাকার এনায়েত হোসেন পান্নার কাছ থেকে ২০১৯ সালে ৫০ হাজার টাকা সুদের বিনিময়ে নেন। এর জন্য তারিকুল প্রতিমাসে এনায়েত হোসেন পান্নাকে ৫ হাজার টাকা করে লাভ দিতেন। গত তিন মাস করোনার মহামারির কারনে তারিকুল লাভের টাকা দিতে না পারায় সুদ ব্যবসায়ী এনায়েত হোসেন পান্না ও তারই দোকানের ম্যনেজার খান মাসুদ ও অজ্ঞাত বেশ কয়েকজন মিলে গত ২১ জুন তারিকুলকে মারধর করে। পরে স্থানীয়রা তারিকুলকে উদ্ধারি করে বরিশাল শের ই বাংলা মেডিকেল করেজ হাসপাতালে ভর্তি করে। তরিকুলের হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার সুযোগে এনায়েত হোসেন পান্না ও তার দোকানের ম্যনেজার খান মাসুদ দোকানের তালা ভেঙে বেশ কয়েকটি চেক বই ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিয়ে যায়। খবর পেয়ে তারিকুল দোকানে ছুটে গেলে এনায়েত হোসেন পান্না ও তার সহযোগীরা রাতের আঁধারে তারিকুলকে ধরে নিয়ে জোর পূর্বক একটি ফাঁকা স্ট্যাম্পে সাক্ষর করান। এছাড়াও তার দোকানের উপরে থাকা বড় একটি সাইনবোর্ড খুলে নিয়ে যায়। এঘটনায় তারিকুল বরিশাল কোতয়ালী থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন।
এবিষয়ে ভুক্তভোগী তারিকুল বলেন, এনায়েত হোসেন পান্নার কাছ থেকে আমি ব্যবসা পরিচালনার জন্য ৫ হাজার টাকা সুদে ৫০ হাজার টাকা ধার নেই। আর খান মাসুদ আমার দোকানে ম্যনেজার হিসেবে কাজ করতো। পরে আমি জানতে পেরেছি এনায়েত হোসেন পান্না ও খান মাসুদ বাকেরগঞ্জের একটি স্কুলে শিক্ষকতা করেন। বর্তমানে খান মাসুদ এনায়েত হোসেন পান্নার সাথে নিয়ে আমার দোকানের পার্টনার দাবি করছে। এনায়েত হোসেন পান্না আমার কাছে টাকা পাবে এটা সত্যি তবে তারা এখন আরো অনেক টাকা দাবি করছে। এমনকি খান মাসুদও আমার কাছে টাকা দাবি করছে। এবিষয়ে খান মাসুদ হোসেন মোবাইল ফোনে জানান, খান মাসুদ বলেছেন, ‘ঘটনা একেবারেই মিথ্যা এবং বানোয়াট। বরং ও আমার বন্ধুর কাছ থেকে পাঁচ পার্সেন্ট লাভে সাড়ে ছয় লাখ টাকা সুদ নিছে। এমনকি পরে বিভিন্ন কৌসলে আমার কাছ থেকেও টাকা ধারা নিছে। টাকা পরিশোধ করতে না পেরে আমাকে তার ব্যবসার পার্টনার করেছে। আমি নিজের টাকা খরচ করে প্রতিষ্ঠান মাল উঠাই, আর সেই মালামাল বিক্রি করে টাকা নিজেই হজম করে। তার কাছে আয় ব্যায়ের হিসাব চেয়েছি। এতেই সে ক্ষুব্ধ হয়েছে। শুধু আমিই নই, বরং মার্কেটের অনেক লোক ওর কাছে টাকা পাবে। এমনকি বেশ কয়েকটি এনজিও থেকেও সে ঋন নিয়ে পরিশোধ করতে পারছে না। এখন পাওনা পরিশোধ না করতে মারধর এবং লুটপাটের নাটক সাজিয়েছে বলে দাবি করেন এই শিক্ষক। তাছাড়া কোন ধরনের সুদ-ঘুষ এর সাথে জড়িত নন বলেও যোগ করেন তিনি।
Leave a Reply