ইথিওপিয়ায় জনপ্রিয় এক সংগীতশিল্পী হত্যার জেরে শুরু হওয়া টানা দুদিনের বিক্ষোভ ও সহিংসতায় ৮১ জনের প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ইতোমধ্যেই দেশটির রাজধানী আদ্দিস আবাবায় সেনা মোতায়েন করা হয়েছে।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসিসহ একাধিক আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম জানিয়েছে, গত সোমবার রাতে দুর্বৃত্তদের গুলিতে নিহত হন দেশটির জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী হাকালু হান্দিসা। দুর্বৃত্তরা পূর্বপরিকল্পিতভাবে তাকে হত্যা করেছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
জানা গেছে, আদ্দিস আবাবার গেলান কনদোমিনিয়ামস এলাকায় গুলিবিদ্ধ হন হাকালু। আহত অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে তিনি মারা যান। তার মৃত্যুর সংবাদ ছড়িয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালের সামনেই জড়ো হতে থাকে বিক্ষোভকারীরা। সেখানে পুলিশের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ হয়।
এ ঘটনার পরদিন মঙ্গলবার সকাল থেকেই দেশটির রাজধানী ও ওরোমিয়া অঞ্চলে হাজার হাজার মানুষ প্রতিবাদ-বিক্ষোভে ফেটে পড়ে। পরে ওই বিক্ষোভ আরও তীব্র আকারে ছড়িয়ে পড়ে।
ওরোমিয়ার পুলিশ প্রধান বেদাসা মারদাসা বলেন, বিক্ষোভ-সহিংসতায় এ পর্যন্ত অন্তত ৮১ জন নিহত হয়েছেন। এদের মধ্যে ওরোমিয়া স্পেশ্যাল পুলিশ ফোর্সের তিন সদস্যও রয়েছেন।
এদিকে, হাকালুকে হত্যাকাণ্ডের জন্য প্রতিদ্বন্দ্বী গোষ্ঠীকে দায়ী করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে হত্যাকারী হিসেবে সন্দেহভাজন কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
ইথিওপিয়ার বৃহত্তম জাতিগোষ্ঠী ওরোমোর প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব ছিলেন হাকালু। সরকার বিরোধী বিক্ষোভে অংশ নিয়ে অল্প বয়সেই জেল খেটেছিলেন তিনি। রাজনৈতিক অধিকার নিয়ে গান গেয়ে সাড়া ফেলে দিয়েছিলেন এই সংগীতশিল্পী। তার বহু গান বিপুল জনপ্রিয়তা লাভ করে।
শিল্পী হাকালু হান্দিসা ইথিওপিয়ার তরুণ প্রজন্মের কাছে ব্যাপক জনপ্রিয় ছিলেন। আজ বৃহস্পতিবার দেশটির জনপ্রিয় এই শিল্পীর শেষকৃত্য হওয়ার কথা রয়েছে।
এদিকে, দেশটির প্রেসিডেন্ট আবি আহমেদ সংগীতশিলী হাকালুর প্রাণহানিতে শোক প্রকাশ করেন এবং সহিংসতা বন্ধে সব পক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
Leave a Reply