খুলনা বিএনপির নেতারা বলেছেন, শত বছরের ঐতিহ্যময় ও সম্ভাবনাময় পাটশিল্প বাংলাদেশে বন্ধ হলে বিশ্বে পাটের কর্তৃত্ব ভারতের হাতে চলে যাবার আশঙ্কা প্রবল। আর পাটকল বন্ধ করে সরকারপ্রধানের সাফল্য প্রচার করা বড়ই হাস্যকর। তারা পাটকল বন্ধের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার দাবি জানান।
রাষ্ট্রায়ত্ত্ব সব পাটকল বন্ধ করে দেয়ার ব্যাপারে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে শুক্রবার রাতে দেয়া এক বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ এসব কথা বলেন।
বিবৃতিতে বিএনপি নেতৃবৃন্দ বলেন, মাথা ব্যাথা সারতে মাথা কেটে বাদ দেয়ার মধ্যে কোনো কৃতিত্ব নেই। বরং জুট সেক্টরের বিদ্যমান সমস্যা চিহ্নিত করে বাস্তবসম্মত পদক্ষেপ নিলে পাটকল বন্ধ করে অর্ধলক্ষ মানুষকে বেকারসহ পাটখাতে উৎপাদক কৃষক, ফড়িয়া ব্যবসায়ী, পাট সেক্টরে কর্মরত শ্রমিকসহ শিল্পাঞ্চলে পাটশিল্পের সাথে জড়িত কয়েক লাখ মানুষের জীবনজীবিকা অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলে দেয়ার পদক্ষেপ কোনোভাবেই মধ্যম আয়ের দেশের কৃতিত্ব হতে পারে না। সরকারি দল নিজেদের শ্রমিকবান্ধব দল হিসেবে প্রচার করলেও মিল বন্ধ করার আত্মঘাতী সিদ্ধান্তের কারণে বেকার হলো লাখো পরিবার। তাদের এ পদক্ষেপে প্রমাণ হল আওয়ামী লীগের কথায় ও কাজে কোনো মিল নেই।
তারা বলেন, পাবলিক প্রাইভেট অংশীদারিত্বের মাধ্যমে কলকারখানা চালানোর পূর্বঅভিজ্ঞতা আমাদের ভালো নয়। আজকের সরকার রাষ্ট্রায়ত্ব পাটকল চালাতে ব্যর্থ হলেও, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান পাটকলে তিন শিফট চালু করেছিলেন।
নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, করোনাভাইরাসের কারণে যখন জনজীবন বিধ্বস্ত, নি¤œআয়ের মানুষ যখন বেঁচে থাকার বড় চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করছে, তখন পাটশিল্প বন্ধ করার সরকারি সিদ্ধান্ত বিনামেঘে বজ্রপাতের মতোই।
তারা পাটশিল্প ধ্বংসের জন্য সরকারি অব্যবস্থাপনা ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেয়াকে দায়ী করে বলেন, বিশ্বে নতুন করে পাটের চাহিদা বৃদ্ধি করে এবং দেশের শিল্পকে কাজে লাগিয়ে পাটশিল্পকে বাঁচিয়ে রাখার পদক্ষেপ না নিয়ে সরকার বরং পাটকল শ্রমিকদের উপর দায় চাপিয়ে তাদের পাওনা পরিশোধের আগাম ব্যবস্থা না নিয়ে জবরদস্তিমূলক সিদ্ধান্ত চাপিয়ে একতরফাভাবে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও সরকারি দলের মহড়ার মধ্যে মিল বন্ধের নোটিশ প্রদান করার অমানবিক ও স্বৈরাচারী পদক্ষেপ নিয়েছে।
বিএনপি নেতৃবৃন্দ সরকারকে অবিলম্বে পাটকল বন্ধের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার দাবি জানান।
বিবৃতিদাতারা হলেন, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টামন্ডলীর সদস্য ভাষাসৈনিক এম নুরুল ইসলাম, নগর বিএনপির সভাপতি সাবেক এমপি নজরুল ইসলাম মঞ্জু, সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক মেয়র মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান মনি, সাহারুজ্জামান মোর্ত্তজা, অধ্যক্ষ তারিকুল ইসলাম, মীর কায়সেদ আলী, শেখ মোশাররফ হোসেন, জাফরউল¬াহ খান সাচ্চু, জলিল খান কালাম, সিরাজুল ইসলাম, অ্যাড. ফজলে হালিম লিটন, স ম আব্দুর রহমান, শেখ ইকবাল হোসেন, শেখ জাহিদুল ইসলাম, শেখ আমজাদ হোসেন, অধ্যাপক আরিফুজ্জামান অপু, সিরাজুল হক নান্নু, মোঃ মাহবুব কায়সার, নজরুল ইসলাম বাবু, আসাদুজ্জামান মুরাদ, এসএম আরিফুর রহমান মিঠু ও ইকবাল হোসেন খোকন।
Leave a Reply