নিজস¦ প্রতিনিধি ॥ ১৯৬৩ সালে বরিশাল অঞ্চলে শিক্ষা বিস্তারে অশ্বিনী কুমার দত্ত প্রতিষ্ঠা করেন আজকের সরকারি বরিশাল কলেজ। নিজ হাতে গড়া এবং নিজের দানকৃত জমিতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি গড়ে উঠলেও কোথাও ছিটেফোঁটা নাম নেই তাঁর। এমন বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ ছিল বরিশালের সাংস্কৃতিক ও সচেতন মহলে। দীর্ঘদিন ধরে অনেকে চেয়ে আসছিলেন যেন প্রতিষ্ঠানটির নামের সঙ্গে যুক্ত করা হয় এই মহাত্মার নাম। অবশেষে গত ফেব্রুয়ারি থেকে স্থানীয় জেলা প্রশাসন কলেজটির নাম পরিবর্তনের জন্য চিঠি চালাচালি শুরু করেন উপর মহলে। গত ২৯ জুন শিক্ষা মন্ত্রণালয় কলেজটির বর্তমান নাম পরিবর্তন করে ‘মহাত্মা অশ্বিনী কুমার দত্ত সরকারি কলেজ’ নামে রাখার জন্য সুপারিশসহ মতামত চায় বরিশাল শিক্ষা বোর্ডের কাছে। আর এই সিদ্ধান্তের মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া যাচ্ছে কলেজটির নতুন নাম পাওয়া এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র।
বরিশালের সংস্কৃতিজনেরা দীর্ঘদিন ধরে দাবি জানিয়ে আসছেন বরিশাল কলেজের নামের সঙ্গে মহাত্মা অশ্বিনী কুমার দত্তের নাম যুক্ত করা হোক। তাদের মধ্যে অগ্রগণ্য ছিলেন নগরীর অন্যতম সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব কাজল ঘোষ। তিনি জানান, পুরো বরিশাল কলেজ প্রাঙ্গণ মহাত্মার স্মৃতি বহন করে। বরিশালের শিক্ষা বিস্তার ও সাংস্কৃতিক উত্থানে এই মানুষটির নাম ওতোপ্রোতভাবে জড়িত।
তার নিজ বাসভবনের জায়গায় আজকের বরিশাল কলেজ দাঁড়িয়ে আছে। মহান এই মানুষটাকে প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে স্মরণ করা উচিত। আর এজন্য আমরা দীর্ঘদিন ধরে চেয়ে এসেছি যেন বরিশাল কলেজের নামের সঙ্গে অশ্বিনী কুমার দত্তের নাম যুক্ত করে দিয়ে আধুনিক প্রজন্মকে মহান এই মানুষটির সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেয়া হয়। বরিশাল নগরীর পরিচিত আরেক সংস্কৃতিজন ড. বাহাউদ্দীন গোলাপ জানান, বরিশাল সরকারি কলেজ যে জায়গায় স্থাপিত সেই মাটির সঙ্গে ঐতিহাসিকভাবে মহাত্মা অশ্বিনী কুমার দত্তের নাম জড়িত। কলেজটির স্থাপনাগুলো এই মহান মানুষটির পৈত্রিক সম্পত্তিতে প্রতিষ্ঠিত। তাই আমরা দীর্ঘদিন যাবত চেয়ে আসছিলাম যেন কলেজটির নামের সঙ্গে এই মহান মানুষটির নাম যুক্ত করা হয়। অবশেষে বর্তমান জেলা প্রশাসকের ব্যক্তিগত তদারকিতে নাম পরিবর্তনের কার্যক্রম শুরু হয়েছে। তিনি বলেন, গত ফেব্রুয়ারি মাসে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে নাম পরিবর্তনের প্রস্তাবনা পাঠান আমাদের বর্তমান জেলা প্রশাসক মহোদয়। তাঁর ঐকান্তিক প্রচেষ্টার ফলাফল হিসেবে আমাদের দীর্ঘদিনের দাবি বাস্তবে রূপ লাভ করতে যাচ্ছে। এজন্য তাকে বরিশালবাসীর পক্ষ থেকে ধন্যবাদ। আর এ ব্যাপারে বরিশালের জেলা প্রশাসক এস এম অজিয়র রহমান জানান, যতটুকু শুনেছি আমাদের প্রস্তাবনার প্রেক্ষিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে বরিশাল বোর্ডের কাছে উক্ত প্রতিষ্ঠানটির নাম পরিবর্তনের ব্যাপারে মতামত চাওয়া হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করে দ্রুতই হয়তো নাম পরিবর্তনের কাজ সম্পন্ন হবে। তবে এখনই সন্তুষ্টি প্রকাশ করতে পারছেন না জানিয়ে তিনি বলেন, বরিশালবাসীর দীর্ঘদিনের একটি যৌক্তিক দাবি আমাদের মাধ্যমে বাস্তবে রূপ নেওয়ার ঘটনায় আমি আনন্দিত। তবে পুরো প্রক্রিয়া সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত সন্তোষ প্রকাশ করতে পারছি না।
Leave a Reply