‘আব্বু আমাকে এরা মারছে, তুমি এসে আমারে নিয়ে যাও। না হলে এরা আমারে জানে মেরে ফেলবে’-কথাগুলো মারা যাওয়ার আগে মোবাইল ফোনে বাবা মুনছুর আলী সরদারকে গত রবিবার বিকালে জানান গৃহবধূ আসমা খাতুন। এ কথা শুনে অসহায় বাবা মেয়ের বাড়িতে গিয়ে দেখেন সব শেষ। মেয়ের নিথর দেহ পড়ে আছে বাড়ির বারান্দায়। মেয়ের স্বামী ও শ্বশুরসহ পরিবারের লোকজন আগেই বাড়ি থেকে সটকে পড়ে। শোকে পাথর হয়ে কান্নাজড়িত কণ্ঠে রবিবার সন্ধ্যায় এসব কথা সাংবাদিকদের জানান নিহত গৃহবধূ আসমার অসহায় বাবা। এ ঘটনায় থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে।
নিহত আসমা খাতুন (২০) উপজেলার গোবিন্দপুর গ্রামের হাবিবুল্লাহর স্ত্রী। গত রবিবার বিকালে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য যশোর আড়াইশ শয্যা হাসপাতালে পাঠিয়েছে। নিহত গৃহবধূর শ্বশুরবাড়ির লোকজন এটিকে আত্মহত্যা বলে দাবি করছে। তবে নিহত আসমার বাবাসহ পরিবারের দাবি, স্বামীসহ শ্বশুরবাড়ির লোকজন আসমাকে পিটিয়ে শ্বাসরোধ করে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে। পরে এটিকে আত্মহত্যা বলে প্রচার করছে।
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, গত বছরের প্রথম দিকে কেশবপুর উপজেলার আড়–য়া পাঁজিয়া গ্রামের মুনছুর আলী সরদারের মেয়ে আসমা খাতুনের সঙ্গে মনিরামপুর উপজেলার গোবিন্দপুর গ্রামের আব্দুল মাজিদের ছেলে হাবিবুল্লাহর পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে যৌতুকসহ নানা কারণে সংসারে শুরু হয় অশান্তি।
নিহত গৃহবধূর ভাই বজলুর রহমান জানান, বিয়ের পর থেকে যৌতুকসহ নানা কারণে তার বোনকে শারিরীক নির্যাতন করত। এ নিয়ে বোন কয়েকবার তাদের বাড়িতে চলে আসে। পরে নানা কথা বলে ভগ্নিপতি হাবিবুল্লাহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধিকে নিয়ে এসে তার বোনকে নিয়ে যান।
স্থানীয় ইউপি সদস্য আব্দুল আজিজ গোলাম জানান, ঘটনার দিন স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে কোন্দলের পর এ ঘটনা ঘটে।
থানার ওসি রফিকুল ইসলাম বলেন, মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য যশোর আড়াইশ শয্যা হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট এলে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
Leave a Reply