করোনাভাইরাস নিয়ে উপহাস করেছিলেন তিনি, উপহাস করেছিলেন করোনায় মারা যাওয়া নিয়েও। করোনায় মৃত্যু নিয়ে ‘কিছু মানুষ মরবেই, এটাই জীবন’ বলে মন্তব্য করেছিলেন ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট জাইর বোলসোনারো। তবে করোনা নিয়ে উপহাস করে পার পেলেন না তিনি, প্রাণঘাতী এ ভাইরাসে আক্রান্ত হতেই হলো তাকে।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির খবরে বলা হয়, ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট জাইর বোলসোনারো জ্বরসহ বিভিন্ন উপসর্গে গতকাল সোমবার তিনি চতুর্থবারের মতো তার নমুনা পরীক্ষা করান। তাতে তার করোনাভাইরাস পজিটিভ আসে।
ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট জাইর বোলসোনারো করোনাভাইরাস সংক্রমণের শুরু থেকেই নানা নেতিবাচক মন্তব্য করে আসছিলেন। বিশ্বজুড়ে এ কারণে তাকে সমালোচিত হতে হয়েছে।
জাইর বোলসোনারো করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে মাস্ক পরা, সামাজিক দূরত্বের নিয়ম মানা এবং লকডাউনের বিরোধিতা করে আসছিলেন। এ নিয়ে তিনি ব্রাজিলের বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যের গভর্নরদের সঙ্গেও দ্বন্দ্বে জড়িয়েছেন।
উগ্র ডানপন্থী নেতা জাইর বোলসোনারো গতকাল সোমবারও মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করার একটি প্রচেষ্টা ভেটো ক্ষমতা প্রয়োগ করে আটকে দেন।
গত এপ্রিলে ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট বলেছিলেন, করোনাভাইরাস তাকে মোটেও কাবু করতে পারবে না। তিনি করোনাকে সাধারণ সর্দি-জ্বরের সঙ্গেও তুলনা করেন। এপ্রিলেই তিনি কাশতে কাশতে লকডাউন-বিরোধী বিক্ষোভে হাজির হন। মুখে কোনো মাস্ক না পরে, হাতে গ্লাভস না পরেই বিক্ষোভ-সমাবেশে অংশ নেন তিনি।
গত এপ্রিলে জাইর বোলসোনারো যখন লকডাউন বিরোধী আন্দোলনে শামিল হন তখন ব্রাজিলে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৪০ হাজারের কাছাকাছি, মৃত্যুর সংখ্যা ছিল তিন হাজারের নিচে। আর গতকাল তার যখন করোনা শনাক্ত হলো তখন দেশটিতে ১৬ লাখেরও বেশি মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়েছে, মারা গেছে ৬৫ হাজারেরও বেশি।
সরকারি তথ্য অনুযায়ী, করোনা শনাক্তের সংখ্যায় ব্রাজিল বিশ্বে দ্বিতীয়। করোনা শনাক্তে ব্রাজিলের চেয়েিএগিয়ে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। তবে পরীক্ষার পর্যাপ্ত ব্যবস্থা না থাকায় ব্রাজিলে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ও মৃতের প্রকৃত সংখ্যা আরও অনেক বেশি বলে ধারণা করছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।
আর ব্রাজিলের এই ভয়ঙ্কর পরিস্থিতিতেও জাইর বোলসোনারো বলে আসছেন, ভাইরাস ঠেকানোর জন্য লকডাউন দেশের অর্থনীতির জন্য ভাইরাসের চেয়েও বেশি ক্ষতিকর। আর সংবাদমাধ্যমগুলো এ ভাইরাস ও মহামারি নিয়ে অযথা আতঙ্ক ছড়াচ্ছে বলেও অভিযোগ করেছেন তিনি।
Leave a Reply