করোনা ভাইরাস বিশ্বজুড়ে মহামারী আকারে দেখা দিয়েছে এ কথা সত্য কিন্তু এ নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। করোনা আক্রান্ত রোগীর কাছাকাছি হলেই করোনা ছড়ায় না। করোনা আক্রান্তের সঙ্গে ১৫ মিনিটের বেশি তিন ফুটের কম দূরত্ব বা সংস্পর্শে এলে তবেই আক্রান্তের আশঙ্কা থাকে। তাই এ নিয়ে ভুল বোঝাবুঝির অবসান হোক।
পৃথিবীতে মানুষকে যে রোগগুলো বেশি ভোগায়, তার মধ্যে ক্যানসার অন্যতম। এ রোগ শরীরে একবার বাসা বেঁধে ফেললে এবং প্রাথমিক অবস্থায় নির্ণীত হলে রোগীকে বাঁচিয়ে রাখা সম্ভব। তাই রোগের শুরুতেই চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ জরুরি। যে কয়েকটি লক্ষণ ও উপসর্গ দেখা দিলে সতর্ক হওয়া জরুরি এবং চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ জরুরি তা হলোÑ
দীর্ঘস্থায়ী ক্লান্তি : অনেকেই অবসাদে ভোগেন, ক্লান্তিবোধ করেন দীর্ঘদিন। এটা সাধারণ কিছু ভাবার যুক্তি নেই। মলাশয় বা রক্তে ক্যানসার হলে সাধারণত ক্লান্তিবোধ হয়। যদি স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি ক্লান্তিবোধ করেন অথবা দীর্ঘসময় ধরে ক্লান্ত থাকেন, অবিলম্বে চিকিৎসাসেবা নিন।
আকস্মিক ওজন হ্রাস : কোনো কারণ ছাড়া হঠাৎ করেই দ্রুতগতিতে যদি ওজন কমতে থাকে ক্যানসারের কারণে। তাই শরীরের ওজনের দিকে খেয়াল রাখা জরুরি।
দীর্ঘদিনের ব্যথা : কোনো কারণ (যেমন- জখম আঘাত) ছাড়া যদি দীর্ঘদিন ধরে শরীরের কোনো স্থানে ব্যথা থাকে, যা ওষুধে কাজ হচ্ছে না, তা হলে ক্যানসারের কারণে বলে ধরে নিতে পারেন। শরীরের কোন জায়গায় ব্যথা করছে, তার ওপর নির্ভর করে রোগী ব্রেইন টিউমারে আক্রান্ত, নাকি ডিম্বাশয়, পায়ুপথ বা মলাশয়ের ক্যানসারে আক্রান্ত।
অস্বাভাবিক মাংসপিন্ড : শরীরের কোনো অংশে অস্বাভাবিক মাংসপি- বা মাংস জমাট হতে থাকলে কিংবা পরিবর্তন বুঝতে পারলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
ঘন ঘন জ্বর : ক্যানসারের কারণে স্বাভাবিক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা আর থাকে না। এতে ঘন ঘন জ্বর দেখা দেয়। কিছু ক্যানসারের শেষ পর্যায়ের উপসর্গ ঘন ঘন জ্বর। তবে ব্লাড ক্যানসারসহ এ ধরনের কিছু ক্যানসারে প্রাথমিক পর্যায়েই ঘন ঘন জ্বর দেখা দেয় শরীরে। ঘন ঘন জ্বর ক্যানসারের উপসর্গ।
ত্বকে পরিবর্তন : ত্বকে অস্বাভাবিক পরিবর্তনই এ ক্যানসার শনাক্তের সহজ উপায়। ত্বকে অতিরিক্ত তিল বা ফ্রিকেল অথবা আঁচিল খেয়াল করুন। যদি এর রঙ, আকার অস্বাভাবিক মনে হয়, চিকিৎসা নিন। ত্বক লালচে হয়ে যাওয়া, ফুসকুড়ি পড়ে যাওয়া এবং রক্তক্ষরণও অন্যান্য ক্যানসারের উপসর্গ।
দীর্ঘস্থায়ী কাশি : ওষুধ সেবনের পরও কাশি না কমলে, এই কাশির কারণে যদি বুক, পিঠ বা কাঁধ ব্যথা করে, চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
মলমূত্রত্যাগের অভ্যাসে পরিবর্তন : ক্যানসারের কারণে মল বা মূত্রত্যাগের জন্য ঘন ঘন শৌচাগারে যেতে হয়। ডায়রিয়া বা কোষ্ঠকাঠিন্যও মলাশয়ের ক্যানসারের লক্ষণ। মূত্রত্যাগের সময় অন্ত্রে ব্যথা বা রক্তক্ষরণ মূত্রথলির ক্যানসারের উপসর্গ।
অকারণে রক্তক্ষরণ : যদি কাশির সময় রক্তক্ষরণ হয়, তবে তা ক্যানসারের লক্ষণ। এ ছাড়া যৌনাঙ্গ বা মলদ্বার থেকে রক্তক্ষরণ ও এ ধরনের অন্য অস্বাভাবিকতা ক্যানসারের উপসর্গ।
খাদ্য গ্রহণে সমস্যা : পেট, কণ্ঠনালি বা গলার ক্যানসারের কারণে খাবার খেলেই নিয়মিত বদহজম হতে পারে।
অন্যান্য উপসর্গ : পা ফুলে যাওয়া, শরীরের আকার বা অনুভূতি অস্বাভাবিক মনে হওয়াও ক্যানসারের লক্ষণ বলে ধরে নিতে হবে।
Leave a Reply