বুধবার, ২০ নভেম্বর ২০২৪, ০১:২৯ পূর্বাহ্ন

উপ-সম্পাদক :: দিদার সরদার
প্রধান সম্পাদক :: সমীর কুমার চাকলাদার
প্রকাশক ও সম্পাদক :: কাজী মোঃ জাহাঙ্গীর
যুগ্ম সম্পাদক :: মাসুদ রানা
সহ-সম্পাদক :: এস.এম জুলফিকার
প্রধান নির্বাহী সম্পাদক :: মামুন তালুকদার
নির্বাহী সম্পাদক :: সাইফুল ইসলাম
ব্যবস্থাপনা সম্পাদক :: আবুল কালাম আজাদ
সংবাদ শিরোনাম :
তারেক রহমানের বিজ্ঞ নেতৃত্বের কারণে শেখ হাসিনাকে পালিয়ে যেতে বাধ্য করেছি-এম. জহির উদ্দিন স্বপন গৌরনদীতে দৈনিক যুগান্তরের বিরুদ্ধে বিড়ি শ্রমিক ও ব্যবসায়ীদের প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ মিছিল দুষ্টামিটাও ছিল যেমন স্পর্শকাতর, খেসারাতটাও দিতে হল তেমনি ভয়ঙ্কর বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী সাংস্কৃতিক দলের ৫ সদস্যের বরিশাল মহানগরে আহ্বায়ক কমিটি গঠন গৌরনদীতে ইউএনওর নেতৃত্বে স্বেচ্ছাশ্রমে খালের কুচুরিপানা ও ময়লা পরিস্কার করল বৈষম্য বিরোধী ছাত্ররা বর্নাঢ্য র‌্যালি ও আলোচনা সভার মধ্যদিয়ে গৌরনদীতে জাতীয় সমবায় দিবস পালিত আমাদের নেতা তারেক রহমান একটি সাম্যের বাংলাদেশ গড়তে চান-জহির উদ্দিন স্বপন মেয়র হারিছ গ্রেপ্তারের খবরে গৌরনদীতে সাধারন মানুষের উল্লাস ফাঁসির দাবিতে বিএনপির বিক্ষাভ মিছিল গৌরনদীতে এইচপিভি টিকা দান ক্যাম্পেইনের শুভ উদ্বোধন কাশিপুরের ড্রেজার ব্যবসায়ী সুমনের অপকর্মে কেউ খুন হলে দায় নেবে না বিএনপি
সরকারি বরিশাল কলেজের নামকরন নিয়ে সংবাদ সম্মেলন

সরকারি বরিশাল কলেজের নামকরন নিয়ে সংবাদ সম্মেলন

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ সরকারি বরিশাল কলেজকে “মহাত্মা অশ্বিনী কুমার দত্ত সরকারি কলেজ” নামকরণ বাস্তবায়নের দাবিতে আজ রবিবার (১২ জুলাই) বেলা ১১টায় বরিশাল রিপোর্টার্স ইউনিটির হলরূমে মহাত্মা অশ্বিনী কুমার স্মৃতি সংসদের আয়োজনে এক সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। অশ্বিনী কুমার স্মৃতি সংসদের পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সভাপতি স্নেহাংকু বিশ্বাস । এসময় তিনি বলেন ‘হোয়াট বরিশাল থিঙ্কস্্ টু-ডে, ই-িয়া থিঙ্কস্্ টু-মরো’, এই অহঙ্কারি আপ্তবাক্য নির্মানে সবার আগে যার নাম উচ্চারিত হয়, তিনি অশি^নীকুমার দত্ত (১৮৫৬-১৯২৩); ‘মহাত্মা’ অশি^নীকুমার, ‘দেশবন্ধু’ অশ্বিনীকুমার ‘জননায়ক’ অশ্বিনীকুমার।অভিভক্ত ভারতের খ্যাতনামা রাজনীতিবিদ, মহান শিক্ষাব্রতী, সমাজসবী, লেখক, চিন্তাবিদ, সমাজ সংস্কারক, বরিশাল এর নবজাগরণের অগ্রদূত মহাত্মা অশ্বিনী কুমার দত্ত’র জন্ম ১৮৫৬ সালর ২৫শে জানুয়ারি পিতার কর্মস্থল পটুয়াখালীতে। তিনি বরিশাল পৌরসভার কমিশনার, ভাইস চেয়ারম্যান এবং পরবর্তীত চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। তিনিই প্রকৃত অর্থে আধুনিক বরিশাল এর নির্মাতা এবং ব্রিটিশ বিরাধী আন্দোলনের অন্যতম পুরাধা ব্যক্তিত্ব।
সত্য-প্রেম-পবিত্রতার প্রতীক মানুষটি অবিভক্ত ভারতবর্ষে বরিশালকে শিক্ষা, সংস্কৃতি ও রাজনীতির অন্যতম প্রধান পীঠস্থানে পরিণত করেন। তাঁর জন্যই ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনে বরিশাল ব্রিটিশ সরকারের মাথা ব্যথার কারণ হয়ে ওঠে। অসাম্প্রদায়িক চেতনার অধিকারী মানুষটি আজীবন সুখে-দুঃখে অসহায় মানুষের সহায় হয়ে, বিপদে-আপদে তাঁদের পাশে দাঁড়িয়ে আমজনতার মনের মণিকোঠায় স্থায়ী আসন লাভ করেছিলেন এবং একই সঙ্গে হয়ে উঠেছিলেন বরিশালবাসীর মুকুটহীন সম্রাট। পাশাপাশি অনন্য সাধারণ গুণের অধিকারী এই মানুষটি বরিশাল তথা পূর্ব বাংলার(বর্তমান বাংলাদেশ) মানুষের চেতনার উন্নয়নে সারাজীবন কাজ করে গেছেন। সে কারণে দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাস তাঁকে “ঙঁৎ ভৎরবহফ ঢ়যরষড়ংড়ঢ়যবৎ ধহফ মঁরফব” বলে উল্লেখ করেছেন। রাজনীতিবিদ-স্বাধীনতাসংগ্রামী বিপিন চন্দ্র পাল তাঁকে বাংলার একমাত্র লোকনায়ক” হিসাবে আখ্যায়িত করেছেন। আশ্বিনীকুমার দত্ত বরিশাল কালিবাড়ি রোডে নিজস্ব ভবনে বসবাস করতেন। ১৯২২-এর আগষ্ট মাসে অসুস্থ শরীর নিয়ে তিনি কলকাতা যান এবং ১৯১৩-এর ৭ নভেম্বর ডাক্তার নীলরতন দে-র চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। এই বাড়িটি ছিলো একটা বড়ো দোতলা বাড়ি যার উপরে চিলেকোঠা সংলগ্ন দুটি কক্ষ। দোতলার প্রতি তলায় ছিলো ছয়টি করে কক্ষ এবং একটি বড় হলঘর, সামনে পিছনে বারান্দা; পিছনের বারান্দার সাথে রান্নাঘর, স্নানঘর। বাড়ির প্রধান ফটকে ঢুকতে ডান দিকের স্তম্ভে ছোটো নাম ফলকে লেখা ছিলো ‘অশ্বিনী ভবন কালীবাড়ী রোড, বরিশাল’।
আশ্বিনীকুমার দত্তর মৃত্যুর পর তার ভাইয়ের ছেলে সরল দত্ত এই বাড়িতে বসবাস করতেন। সরল দত্ত দেশ থেকে চলে যাবার সময় এই বাড়িটি ব্রজমোহন কলেজ কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করে যান। ১৯৬৭ পর্যন্ত এটি ব্রজমোহন কলেজের ছাত্রাবাস হিসেবে ব্যবহৃত হতো। দুই তলায়ই ছাত্র থাকতো আর উপরে চিলেকোঠা সংলগ্ন কক্ষদ্বয় ব্যবহৃত হতো ছাত্রবাসের তত্বাবধায়কের আবাস হিসেবে। এই ছাত্রাবাসের তত্বাবধায়কের দায়িত্ব পালন করেছেন রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক আবুল কালাম এবং বাংলা বিভাগের আসাদুজ্জামান এবং আরও কয়েকজন শিক্ষক। ‘অশ্বিনী ভবন ছাত্রাবাস নামেই ছিলো এর পরিচিতি। ১৯৬৩ বরিশালের কিছু উদ্যোগী ব্যক্তি মূলত বরিশাল কালেক্ট্রটে (তখন জেলাপ্রশাসন কার্যালকে এ নামেই ডাকা হতো) কর্মরত কয়েকজন অফিস-সহকারী একটি নৈশ কলেজ প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেন। এদের একটি প্রতিনিধি দল ব্রজমোহন বিদ্যালয়ের প্রধানশিক্ষক জয়ন্তকুমার দাশগুপ্তে সাথে সাক্ষাত করে বিষয়টি জানান। জয়ন্তকুমার দাশগুপ্ত তাঁর বিদ্যালয়ে নৈশকলেজ শুরু করার সম্মতি দেন এবং শুরুতে ব্রজমোহন বিদ্যালয়েই নৈশ কলেজের ক্লাস হতো। কলেজের নামকরণ করা হয় ‘বরিশাল নৈশ কলেজ’ বা ‘বরিশাল নাইট কলেজ’। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জয়ন্তকুমার এই কলেজে বাংলা পড়াতেন। ব্রজমোহন কলেজের কয়েকজন শিক্ষক এই কলেজে শিক্ষাদান করতেন। নৈশকলেজে ছাত্রসংখ্যা বেড়ে গেলে পৃথক ক্যাম্পাসের প্রয়োজন হয়ে পরে। তখন সবাই মিলে (সবাই অর্থে জেলা প্রশাসন, নৈশকলেজ পরিচালনা পর্ষদ, ব্রজমোহন বিদ্যালয় ও কলেজ কর্তৃপক্ষ) নৈশকলেজ অশ্বিনী ভবনে স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত নেন। এরমধ্যে ১৯৬৬-তে প্রতিষ্ঠিত হয় সৈয়দ হাতিম আলী কলেজ। সম্ভবত ১৯৬৭-তে নৈশ কলেজ অশ্বিনীভবনে স্থানান্তরিত হয় এবং ব্রজমোহন কলেজ ছাত্রাবাস বন্ধ হয়ে যায়। এসময় কলেজের অধ্যক্ষ ছিলেন জনাব আবদুল হক। ১৯৬৮/১৯৬৯ সালে নৈশ কলেজে ‘দিবাভাগ’ খোলা হয়। তারই ধারাহিকতায় এর নাম ‘বরিশাল নৈশ কলেজ’ থেকে ‘নৈশ’ শব্দাট বাদ দিয়ে নামকরণ হয় ‘বরিশাল কলেজ’। জনাব আবদুল হকের পর অধ্যাপক সিরাজুল হক এবং অধ্যাপক মোহাম্মদ হোসেন আলী এই কলেজের অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৮৬ সালের নভেম্বর মাসের মাঝামাঝি সময় প্রেসিডেন্ট হোসেন মোহাম্মদ এরশাদ বরিশাল আসবেন নির্বাচনী সফরে। তাঁর নির্বাচনী সভায় বরিশালবাসীর পক্ষ থেকে একটি দাবীনামা উত্থাপনের সিদ্ধান্ত হয়। সেদিনের সেই সভায় তিনি একই সঙ্গে একই শহরের দুটি কলেজ, সৈয়দ হাতেম আলী কলেজ ও বরিশাল কলেজ, জাতীয়করণের ঘোষণা দেন। সেই ঘোষণার পরিপ্রেক্ষিতে ১৭.১১.১৯৮৬ জারিকৃত এক আদেশনামায় কলেজ দুটি জাতীয়করণ করা হয়। ফলে বরিশার কলজের নামের আগে যুক্ত হয় ‘সরকারি’ শব্দটি। এভাবেই সরকারি বরিশাল কলেজের সৃষ্টি।
আন্তর্জাতিক ওয়েবসাইড ‘ওয়াকিপিডিয়া’য় বরিশাল কলেজ প্রসঙ্গে উল্লেখ আছে:
এড়াঃ. ইধৎরংধষ ঈড়ষষবমব রং ড়হব ড়ভ ঃযব সড়ংঃ ৎবহড়হিবফ পড়ষষবমবং রহ ঃযব ফরারংরড়হ ড়ভ ইধৎরংধষ. ওঃ রং ধ পড়ষষবমব ড়ভ মষড়ৎু ধহফ ঃৎধফরঃরড়হ ধং রঃ ধিং বংঃধনষরংযবফ ধঃ ঃযব ৎবংরফবহপব ড়ভ গধযধঃসধ অংযধিহর কঁসধৎ উধঃঃধ. ওঃ নবধৎং ঃযব ঃবংঃরসড়হু ড়ভ ঃযব মষড়ৎরড়ঁং ঞধসধষ ঞৎবব ধহফ ফবসড়হংঃৎধঃরড়হ ড়ভ ঃযব মড়ষফবহ ঃড়ঁপয ড়ভ অংযধিহর কঁসধৎ. জবমধৎফরহম রঃং ংরমহরভরপধহপব ধহফ যবৎরঃধমব রঃ ধিং হধঃরড়হধষরংবফ রহ ১৯৮৬. এতে পরিষ্কার বলা আছে মহাত্মা অশ্বিনীকুমার দত্তের বাড়িতে এই কলেজ প্রতিষ্ঠিত। সেই সঙ্গে উল্লেখ আছে ঐতিহ্যবাহী তমাল গাছের। সে প্রেক্ষিতে সরকারি বরিশাল কলেজকে “মহাত্মা অশ্বিনী কুমার দত্ত সরকারি কলেজ” নামকরণের পক্ষে উপস্থিত সবাই মত প্রকাশ করেন।
উল্লেখ্য, ২০১২ সালে তৎকালিন সংসদ সদস্য বরিশাল জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তালুকদার মো: ইউনুস জাতীয় সংসদে সরকারি বরিশাল কলেজকে “মহাত্মা অশ্বিনী কুমার দত্ত সরকারি কলেজ” নামকরণের প্রস্তাব করেন। বরিশালের জেলা প্রশাসক গত ২৯/০২/২০২০ তারিখে সরকারি বরিশাল কলেজকে “মহাত্মা অশ্বিনী কুমার দত্ত সরকারি কলেজ” নামকরণের প্রস্তাব শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করেন। গত ২৯/০৬/২০২০ তারিখে শিক্ষা মন্ত্রণালয় বরিশাল শিক্ষাবোর্ডকে সরকারি বরিশাল কলেজকে “মহাত্মা অশ্বিনী কুমার দত্ত সরকারি কলেজ” নামকরণের যৌক্তিকতা উল্লেখ করে সুপারিশ প্রেরণের জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করে। মহাত্মা অশ্বিনী কুমার দত্ত’র স্মৃতি রক্ষার্থে মহাত্মা অশ্বিনী কুমার স্মৃতি সংসদ, বরিশাল তার জন্মলগ্ন থেকেই নি¤েœালিখিত দাবিসমূহ জানিয়ে আসছে :
১) মহাত্মা অশ্বিনী কুমার দত্ত’র বাসস্থানে প্রতিষ্ঠিত সরকারি বরিশাল কলেজের নামকরণ ‘সরকারি মহাত্মা অশ্বিনী কুমার দত্ত সরকারি কলেজ’ করতে হবে। ২) মহাত্মা অশ্বিনী কুমার দত্ত’র বাসস্থানে প্রতিষ্ঠিত কলেজের দৃশ্যমান স্থানে মহাত্মা অশ্বিনী কুমার দত্ত’র একটি প্রতিকৃতি (ম্যুরাল) স্থাপন করতে হবে। ৩) মহাত্মা অশ্বিনী কুমার দত্ত প্রতিষ্ঠিত সরকারি ব্রজমোহন কলেজের দৃশ্যমান স্থানে মহাত্মা অশ্বিনী কুমার দত্ত’র একটি প্রতিকৃতি(ম্যুরাল) স্থাপন করতে হবে। ৪) মহাত্মা অশ্বিনী কুমার দত্ত’র বাসস্থানে অবস্থিত কলেজের মৃতপ্রায় পুকুরটি সংস্কারসহ মানুষের ব্যবহার উপযোগী করার ব্যবস্থা করতে হবে।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..



Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




© All rights reserved © 2017 Dokhinerkhobor.Com
Desing & Developed BY ThemesBazar.Com