নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ রাতের নগরীতে তার চোরদের দৌরাত্ম্য থামছে না। বরং মহামারি করোনার মধ্যে এদের দৌরাত্ম্য আরও বেড়ে গেছে। প্রশাসনের টহল ব্যবস্থায় দুর্বলতার কারণে প্রায় রাতেই ঘটছে তারসহ মূল্যবান মালামাল চুরির ঘটনা। বিশেষ করে বেপরোয়া নিশি চোরদের কারণে সীমাহীন ক্ষতির সম্মুখীন হতে হচ্ছে কেবল্ অপারেটর ও ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট ব্যবসায়ীদের। প্রায় রাতেই তাদের হাজার হাজার টাকার ফাইবার কেবল্সহ বিভিন্ন মূল্যবান মালামাল চুরি করে নিচ্ছে চোরের দল। এর ফলে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে ইন্টারনেট এবং ডিস লাইন গ্রাহকদের। এদিকে দিনের পর দিন চুরির ঘটনা ঘটে চললেও তার চোরদের চিহ্নিতকরণ কিংবা তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারছে না পুলিশ। তবে পুলিশ না পারলেও রাতের তার চোর চিহ্নিত করতে সক্ষম হয়েছেন একজন ক্ষতিগ্রস্ত ইন্টারনেট ও কেবল্ অপারেটর ব্যবসায়ী। সিসি ক্যামেরার সহযোগিতায় খুঁজে পেয়েছেন চোর চক্রকে। এই ঘটনায় তিনি দু’জনকে নামধারী ও অজ্ঞাতনামা তিনজনকে অভিযুক্ত করে থানায় একটি মামলাও দায়ের করেছেন। গতকাল সোমবার নগরীর রূপাতলী উকিলবাড়ি সড়কের বাসিন্দা মো. শহীদুল ইসলাম বাদী হয়ে কোতয়ালী মডেল থানায় মামলাটি দায়ের করেন। এর পরপরই সিসি ক্যামেরার ফুটেজের সূত্র ধরে রাতের তার চোর চক্রের সদস্যদের গ্রেপ্তারে অভিযানে নেমেছেন পুলিশ সদস্যরা। এমনটিই জানিয়েছেন কোতয়ালী মডেল থানার অফিসার ইন-চার্জ (ওসি) মো. নুরুল ইসলাম।
মামলার বাদী মো. শহীদুল ইসলাম জানিয়েছেন, ‘তিনি ইউরোটেল বিডি অনলাইন লিমিটেড এর সাথে ব্রডব্যান্ড ও কেবল্ অপারেটরের ব্যবসা করছেন। সেই সুবাদে সাগরদী, রূপাতলী এবং দপদপিয়া এলাকায় বিভিন্ন বাড়ি ও প্রতিষ্ঠানে ইন্টারনেট এবং ডিস লাইনের সংযোগ দিয়ে ব্যবসা করেন। এই ব্যবসায়ী বলেন, ‘হাজার হাজার টাকা ব্যয় করে ব্যবসা করলেও নিরাপত্তা পাচ্ছেন না। প্রায় রাতেই সড়ক এবং মহাসড়কের পাশে থাকা ফাইবারসহ ইন্টারনেট সংযোগের বিভিন্ন মালামাল চুরি হয়ে যায়। সবশেষ গত ৯ জুলাই রাতে চোরের দল নগরীর আমতলার মোড় পুলিশ বক্সের সামনে থেকে সাগরদী ডোস্ট পাম্প ও রূপাতলী থেকে দপদপিয়া সড়কের পল্লীবিদ্যুৎ সমিতি কার্যালয়ের সামনে পর্যন্ত লক্ষাধিক টাকার ফাইবারসহ বিভিন্ন মালামাল চুরি করে নেয়। যার মধ্যে দুই কিলোমিটার অপটিক্যাল ফাইবার, ইন্টারনেট ডিজেবক্স, প্যাচকোট, ক্যাপকিট তার, মিডিয়া কনভার্টার, ইন্টারনেট স্যুইচ, ম্যানেজেবল স্যুইচসহ অন্যান্য মূল্যবান মালামাল রয়েছে। চুরি সংঘটিত হওয়ার ফলে ব্যবসায়িকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পাশাপাশি গ্রাহকদেরও ভোগান্তির শিকার হতে হয়।
এদিকে সিসি ক্যামেরায় দেখা যায়, নগরীর রূপাতলী আব্দুল লতিফ খান সড়কের বাসিন্দা আমির আলী সিকদারের ছেলে সোহান সিকদার সোহাগ ও তার সহযোগী একই এলাকার অনু’র ছেলে হাসান মিছিলে গভির রাতে ইন্টারনেট ও ডিসের তার কেটে নিয়ে যাচ্ছে। জানা যায়, সোহান সিকদার সোহাগ নিজেও ডিস এবং ইন্টারনেট ব্যবসা করেন। অন্য ব্যবসায়ীদের তার চুরি করে তা দিয়ে তিনি ব্যবসা করেন। এর আগেও তার চুরি নিয়ে এলাকায় মারামারির ঘটনা পর্যন্ত ঘটেছে। তাছাড়া সোহান সিকদার সোহাগের বিরুদ্ধে এলাকায় সন্ত্রাসী কর্মকান্ড সংগঠিত করণের অভিযোগও রয়েছে পূর্বে থেকে।
Leave a Reply