নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ বরিশাল সদর উপজেলার কড়াইতলা নদীতে নির্মিত ব্রিজটি আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধনের আগেই উভয়প্রান্তের সংযোগ সড়কে ধস নেমেছে। একাধিক স্থানে অধিক ধসে ব্রিজটি দিয়ে যানবাহন চলাচল ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। গত কয়েকদিনের টানা বর্ষণে ধস আরও বৃদ্ধি পাওয়ায় ব্রিজটিতে স্বাভাবিক যান চলাচল ব্যাহত হলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ অর্থাৎ এলজিইডির নীরব ভূমিকায় জনমনে তৈরি হয়েছে ক্ষোভ। যদিও সংস্থাটির দায়িত্বশীলরা বলছেন ইতিমধ্যে সরেজমিন পরিদর্শন পরবর্তী পদক্ষেপস্বরুপ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০ কোটি টাকা বরাদ্দে ২০১৪ সালের ফেব্রুয়ারি কড়াইতলা নদীর ওপর বিশ্বাসের হাট ব্রিজটি নির্মাণ কাজ শুরু হলে উচ্চতার প্রশ্নে নৌযান মালিকদের আন্দোলন সংগ্রামের কারণে দীর্ঘ এক বছর বন্ধ থাকে। পরবর্তীতে পাঁচ কোটি বরাদ্দ বাড়িয়ে ব্রিজটির উচ্চতা বৃদ্ধির পাশাপাশি উভয় পাশের সংযোগ সড়ক করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। অব্যশ সংযোগ সড়কটির স্থায়ীত্ব নিয়ে সেই সময় প্রশ্ন উঠলেও এলজিইডি কর্তৃপক্ষ কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। পরে ২০১৯ সালের শেষ দিকে কোন প্রকার আনুষ্ঠানিকতা ছাড়াই ব্রিজটির দুই দ্বার খুলে দিলে শুরু হয় যান চলাচল। স্থানীয় লোকজন জানায়, ব্রিজটি গত বছর উন্মুক্ত করে দেওয়ার পরপরই উভয়প্রান্তের সংযোগ সড়কের একাধিক স্থানে ধস নেমেছিলো। সেই সময় স্থানীয়দের দাবির প্রেক্ষিতে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় উদ্যোগ নিয়ে সংস্কার করে দেয়। কিন্তু বছর ঘুরতেই ফের উভয় পাশে অন্তত দশটি স্থানে বিশালাকার গর্তের সৃষ্টি হয়, ধসে যায় মাটিসহ সড়ক। বিশেষ করে দক্ষিণপ্রান্তে ব্রিজ লাগোয়া স্থানটি চারের তিন শতাংশ ধসে যাওয়ায় যানবাহন চলাচলে তৈরি হয়েছে ঝুঁকি। গত কয়েকদিনের টানা বর্ষণে ধস আরও বৃদ্ধি পাওয়ায় বৃষ্টিতে যান চলাচল ক্রমশই ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। বিষয়টি একাধিকবার এখানকার এলজিইডি কর্মকর্তাদের অবহিত করলেও কার্যকরি কোন পদক্ষেপ লক্ষ্যণীয় নয়, অভিযোগ পাওয়া যায়।
একাধিক পরিবহন মালিক ও চালক জানিয়েছেন, ঝুঁকি নিয়ে চলাচলের বিষয়টি ইতিপূর্বে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের অবহিত করা হলেও সমাধানে উদ্যোগ নেই। বরং প্রতিনিয়িত জীবন হাতে নিয়ে উঠতে হচ্ছে ব্রিজটিতে। সর্বশেষ বিষয়টি সমাধান চেয়ে সদর উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ নেতা অ্যাডভোকেট মাহাবুবুর রহমান মধুর কাছে আবেদন রাখেন।অবশ্য এই বিষয়টি জনপ্রতিনিধি মধুও স্বীকার করে বলছেন, এলজিইডির কর্মকর্তাদের বিষয়টি অবহিত করে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ করেন। কিন্তু তারা এতোদিনেও কেন ব্যবস্থা নিলেন না সেটা চিন্তার বিষয়। এদিকে কালবিলম্ব করার এই বিষয়টি অস্বীকার করেছেন বরিশাল এলজিইডি অফিসের নির্বাহী প্রকৌশলী শরীফ মো: জামাল উদ্দিন। কর্মকর্তার দাবি, দুদিন পূর্বে তিনি নিজেই সরেজমিন গিয়েছিলেন, নিয়েছেন অ্যাপ্রোচ সড়ক ধস রোধে উদ্যোগ। যা বাস্তবায়ন হতে সময়ের প্রয়োজন। কিন্তু পুরোপুরি ধস রোধ করে ব্রিজটি রক্ষা করতে কার্যকরি উদ্যোগ জরুরী মন্তব্য করে প্রকৌশলী বলেন- এক্ষেত্রে সময় ও বরাদ্দ দুটোই প্রয়োজন। নতুবা ফের ধসের আশঙ্কা রয়েছে।’
Leave a Reply