নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ আগামী ২৫ জুলাই থেকে বরিশালে শুরু হচ্ছে কোরবানির পশুর হাট। তবে এ বছর হাটের সংখ্যা অর্ধেকে নেমে এসেছে নগরীতে। আবেদন জমা না পড়ায় হাটের সংখ্যা কমাতে বাধ্য হয়েছে বিসিসি। হাটের সংখ্যা কমেছে জেল-উপজেলায়ও। আর এর কারণ হিসেবে দায়ী করা হচ্ছে করোনা প্রাদুর্ভাবকেই। তবে যেহেতু এখনও সময় হাতে আছে, এসময়ের ভিতরে আবেদনের প্রেক্ষিতে বাড়তে পারে পশুর হাট। এদিকে হাটের সংখ্যা কমে গেলে পশুর দাম বৃদ্ধি পাওয়ার আশঙ্কা করছেন ক্রেতারা।
জানা গেছে, গত বছর নগরীতে স্থায়ী হাট বসেছিল ৪ টি। অপরদিকে জেলার ১০ উপজেলায় হাটের সংখ্যা ছিল ৬৬। তবে উদ্যোক্তার অভাবে এ বছর এই সংখ্যা কমেছে উল্লেখযোগ্য হারে। জেলা প্রশাসক কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, বরিশাল জেলার ১০ উপজেলায় এবার কোরবানির পশুর হাটের সংখ্যা ৩৫ টি। গত বছরের তুলনায় যা প্রায় অর্ধেক। তাছাড়া উপজেলাগুলোর কেবল স্থায়ী হাটগুলোকেই এবার অনুমোদন দেয়া হয়েছে। স্বাস্থ্যবিধিকে অগ্রাধিকার দেয়ায় হাটের সংখ্যা কমাতে বাধ্য হয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। অপরদিকে বরিশাল নগরীর স্থায়ী হাট দুটো হল বাঘিয়া এবং হাটখোলা এলাকার কসাইখানা। প্রতিবছর এই স্থায়ী হাট দুটো ছাড়াও একাধিক অস্থায়ী হাটের অনুমোদন দিত বিসিসি। তবে এখন পর্যন্ত কোন আবেদন জমা না পড়ায় স্থায়ী হাট দুটোকেই সরাসরি পরিচালনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের হাটবাজার শাখার পরিদর্শক আবুল কালাম আজাদ জানান, বৃহস্পতিবার পর্যন্ত অস্থায়ী হাটের কোন আবেদন তাদের কাছে আসেনি। সে হিসেবে এখন পর্যন্ত নগরীর হাটের সংখ্যা ২ টিই রয়েছে। তবে ২৫ জুলাই থেকে কার্যক্রম শুরুর আগে অস্থায়ী হাটের কোন আবেদন জমা পড়লে অনুমোদনের বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বিবেচনা করবে বলে তিনি জানান।
এদিকে হাটের সংখ্যা কমে গেলে পশুর দাম বৃদ্ধির আশঙ্কা করছেন ক্রেতারা। ক্ষেত্র কমে যাওয়ার এই সুযোগটিকে ব্যবসায়ীরা কাজে লাগাতে পারেন বলে ধারণা তাদের। নগরীর রুপাতলীর বাসিন্দা শাহীন মৃধা বলেন, হাটের সংখ্যা কমে যাওয়া মানে যাচাই বাছাইয়ের সুযোগ কমে যাওয়া। বিগত বছরের অভিজ্ঞতায় তারা এমনটাই দেখেছেন। তবে স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণে সংশ্লিষ্টদের এমন সিদ্ধান্তকে সাধুবাদও জানিয়েছেন তিনি।
জেলা প্রশাসক এস এম অজিয়র রহমান বলেন, এ বছর হাট অনুমোদনের ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যবিধিকেই সর্বাধিক গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। এ কারণে হাটের সংখ্যা কমে যাবে। তবে সংখ্যা যাই হোক অবশ্যই স্বাস্থ্যবিধি মেনে পরিচালিত হবে পশুর হাট। আর বিষয়টি তদারকি করবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও স্থানীয় প্রশাসন।
প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের বরিশাল বিভাগীয় উপপরিচালক কানাই লাল স্বর্ণকার জানান, এ বছর ভিন্ন প্রেক্ষাপটে উদযাপিত হতে যাচ্ছে পবিত্র ঈদুল আজহা। তাই হাটবাজারেও অনেকটা ভিন্ন পরিস্থিতি দেখা যেতে পারে। তিনি বলেন, বরিশাল বিভাগের প্রতিটি হাটে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের ভেটেরিনারি টিম দায়িত্ব পালন করবে। রুগ্ন বা রোগাক্রান্ত পশু যাতে হাটে বিক্রি হতে না পারে সেবিষয়ে লক্ষ্য রাখবেন টিমের সদস্যরা। ৩৪ টি দলে ভাগ হয়ে বরিশাল নগরী এবং জেলার হাটগুলোতে কার্যক্রম পরিচালনা করবে ভেটেরিনারি টিম। প্রসংগত, গত বছর জেলার বিভিন্ন হাট থেকে মোট ১ লাখ ৫ হাজার ৩৩০ টি পশু বিক্রি হয়েছিল। বিপরীতে ৪০ হাজার ৪২৬ টি গরু-মহিষ এবং ৮ হাজার ৬৩২ টি ছাগল-ভেড়া অবিক্রিত ছিল বিভাগের বিভিন্ন হাটে।
Leave a Reply