লালমোহন প্রতিনিধি ॥ ভোলার লালমোহন হাসপাতালের স্যাকমো আবুল হোসেনের অপচিকিৎসায় পা হারাতে বসেছে এক রোগী। গত শনিবার (৩ অক্টোবর) রাতে উপজেলার কালমা ইউনিয়নের চরছকিনা এলাকা থেকে বজলুর রহমান নামের এক রোগী আসে হাসপাতালের ইমার্জেন্সিতে পায়ের ফোঁড়া অপারেশন করাতে। তখন ইমার্জেন্সিতে কর্তব্যরত মেডিকেল অফিসার উপস্থিত না থাকায় সেখানে থাকা স্যাকমো আবুল হোসেন রোগীর পা অপারেশনের জন্য ৯ শত টাকা চুক্তি করেন। অপারেশন করার পর রোগীর পরিবার অত্যন্ত গরীব হওয়ায় তারা দেড়শত টাকা দিতে চাইলে আবুল হোসেন ওই টাকা মাটিতে ফেলে দেন। এ নিয়ে আবুল হোসেন ও ওই রোগীর পরিবারের সাথে বাকবিত-া হয়। পরে অনেক বুঝিয়ে রোগীর পরিবার আবুল হোসেনকে দেড়শত টাকা দিয়ে বিদায় নেন হাসপাতাল থেকে। এদিকে সোমবার (৫ অক্টোবর) রোগীর পা ড্রেসিং করাতে হাসপাতালের ইমার্জেন্সিতে গেলে সেখানে কর্তব্যরত মেডিকেল অফিসার ডা. তানজিলা রোগীর স্বজনদের জানান অপারেশনের সময় রোগীর পায়ের রগ কেটে গিয়েছে। যার জন্য রোগীকে দ্রুত ভোলা অথবা বরিশাল নেয়ার পরামর্শ দেন। আবুল হোসেনের এমন অপচিকিৎসায় পা হারাতে বসেছে ভুক্তভোগী রোগী বজলুর রহমান। এরপর তারা বিষয়টি উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তাকে জানাতে গিয়ে তাকে অফিসে না পেয়ে হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. মো. মহিসন খানকে বিষয়টি জানান। পরে আরএমও মহসিন খান রোগীর পরিবারকে লিখিত অভিযোগ দেয়ার জন্য বলেন।
ভুক্তভোগী রোগীর বড় ভাই মো. কবির বলেন, ডাক্তার ভাইকে বরিশাল নিতে বলেছেন। আমাদের পরিবার অত্যন্ত গরীব। বরিশাল নিতে হলে অনেক টাকার প্রয়োজন। এখন আমাদের কাছে এতো টাকা নেই। এদিকে ভাই পায়ের যন্ত্রনায় চিৎকার করছে। আবুল হোসেনের এ কর্মকা-ের সঠিক বিচার ও ভাইয়ের পা পূণরায় অপারেশনের জন্য আমরা ক্ষতিপূরণ দাবী করছি। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আবুল হোসেন একজন স্যাকমো হয়েও ইমার্জেন্সিতে থাকাকালীন রোগীদের সাথে অসদাচারণ করে আসছেন। এছাড়াও কোনো রোগীকে টেস্ট করাতে দেয়ার নিয়ম না থাকলেও সে বিভিন্ন সময় টেস্ট দিয়ে থাকেন। আবুল হোসেনের এমন কর্মকা- দেখলে মনে হবে লালমোহন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স যেনো তার রাজত্ব। আবুল হোসেনের নানা অনিয়মের অভিযোগে তাকে কয়েক মাস আগে বদলি করা হলেও মধুর টানে ফের নানানভাবে লোভিং করে লালমোহন হাসপাতালে এসে যোগ দেন। প্রতিনিয়ত আবুল হোসেনের এমন কর্মকা-ে ক্ষোভ বিরাজ করছে হাসপাতালের ডাক্তার, নার্স থেকে শুরু করে স্টাফদের মধ্যেও। এর আগে নার্স ও স্টাফদের সাথে অসদাচারণের অভিযোগ মানববন্ধন করেন তারা। তবুও কিছুতেই কিছু হয়নি আবুল হোসেনের। এব্যাপারে লালমোহন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. মিজানুর রহমানের বক্তব্য নেয়ার জন্য বারবার কল করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ না করায় বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি। তবে কথা হয় লালমোহন হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. মো. মহসিন খানের সাথে। তিনি বলেন, রোগীর পরিবারের লোকজন মৌখিক অভিযোগ দিয়েছে। তাদের লিখিত অভিযোগ দেয়ার জন্য বলেছি। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
Leave a Reply