লালমোহন প্রতিবেদক ॥ ভোলার লালমোহনে মেঘনা ও তেঁতুলিয়া নদীতে দেখা মিলছে না ইলিশের। ইলিশ না পেয়ে সংসার চালানো নিয়ে দুশ্চিন্তায় জেলেরা। তার ওপর ১৪ অক্টোবর থেকে ৪ নভেম্বর পর্যন্ত মোট ২২ দিনের জন্য আসছে মেঘনা ও তেঁতুলিয়া নদীতে মা ইলিশ শিকারে নিষেধাজ্ঞা। নিষেধাজ্ঞার আগ মুহূর্তেও চাহিদানুরুপ মাছ না পেয়ে লালমোহনের জেলেদের মাঝে দেখা দিয়েছে চরম হতাশা। তাই জেলেরা দাবি করছেন নিষেধাজ্ঞা চলাকালে সরকারী সকল সহায়তা সঠিকভাবে পৌঁছে দেওয়ার।
জেলেরা বরিশালটাইমসকে জানান, নদীতে ইলিশ শিকার করতে না পেরে বিভিন্ন এনজিও এবং মহাজনের কাছ থেকে ধারদেনা করে মানবেতর জীবন-যাপন করছেন তারা। অনেক জেলে নদীতে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছেন। বাতিরখাল মৎস্য ঘাটের আড়ৎদার আইয়ুব বরিশালটাইমসকে জানান, সেপ্টেম্বর থেকে ভরা মৌসুম থাকার কথা ইলিশের। কিন্তু মেঘনা নদীতে ইলিশের দেখা মিলছে না। জেলেরা ১০ থেকে ১২ জন করে ট্রলার নিয়ে নদীতে নেমে ২/৩ হালি করে ইলিশ নিয়ে ফিরে আসছে। তবে সাগরে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ ধরা পড়ছে। কিন্তু সাগর উত্তাল থাকায় ভয়ে মাছ শিকারে যাচ্ছেন না জেলেরা। গত মাসে সাগরে মাছ ধরতে গিয়ে ট্রলার ডুবে লালমোহনের দুই জেলে ট্রলারসহ সলিল সমাধি হয়। তাদের লাশও আর পাওয়া যায়নি। যার কারণে ভয়ে অনেকে সাগরে যাচ্ছেন না। ফলে কষ্ট করে দিন কাটাচ্ছেন তারা। এদিকে ১৪ অক্টোবর থেকে ৪ নভেম্বর পর্যন্ত মেঘনা ও তেঁতুলিয়া নদীতে বন্ধ থাকবে ইলিশ আহরণ, বিপণন ও ক্রয়-বিক্রয়। নিষেধাজ্ঞার আগে নদীতে পর্যাপ্ত মাছ না পেয়ে লালমোহনের জেলেরা অবরোধ চলাকালে পরিবার পরিজন নিয়ে সংসার চালাবেন কিভাবে তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছেন। রাতদিন নদীতে নেমেও চাহিদা মোতাবেক ইলিশের দেখা মিলছে না। ইলিশ না পাওয়ায় জেলেদের নদীতে নামার খরচও উঠছে না। তার ওপর অনেকের ঋণের কিস্তি নিয়েও আছেন দুশ্চিন্তায়। উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা সুদিপ্ত মিশ্র বরিশালটাইমসকে জানান, লালমোহনে মোট নিবন্ধিত জেলের সংখ্যা প্রায় ১৫ হাজার। তবে প্রকৃত জেলের সংখ্যা আরও বেশি। ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা চলাকালে জেলেদের জন্য বরাদ্দকৃত ২০ কেজি করে চাল ১৫ হাজার জেলেদের মাঝে সঠিক সময়ে বিতরণ করা হবে। এছাড়া এসময়ে জেলেদের সকল এনজিও এবং ব্যাংকের ঋণের কিস্তি বন্ধ থাকবে।’
Leave a Reply