বিদেশ ডেস্ক ॥ পাকিস্তানের দক্ষিণাঞ্চলে এক রেল দুর্ঘটনায় অন্তত ৪০ জন নিহত হয়েছে এবং আহত হয়েছে কয়েক ডজন মানুষ। আরও বহু যাত্রী ধ্বংসাবশেষের মধ্যে আটকা পড়ে আছে বলে কর্মকর্তারা বলছেন। সিন্ধু প্রদেশের একটি ট্রেন লাইনচত্যু হয়ে অন্য একটি ট্র্যাকে চলে আসে। যাত্রীবাহী ট্রেন দুটির একটি করাচী থেকে সারগোদা যাচ্ছিল। সেই রেলের সাথে তখন যাত্রী বোঝাই আরেকটি ট্রেনের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। উদ্ধারকর্মীরা আহতদের স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে বেশ কয়েকজনের অবস্থা সংকটজনক বলে বলা হচ্ছে। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের হিসেব অনুযায়ী, পাকিস্তানে ২০১৩ থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে বেশ কিছু রেল দুর্ঘটনায় অন্তত ১৫০ মানুষ নিহত হয়েছে। ঘোটকি জেলার একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ওসমান আবদুল্লাহ বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেছেন, ট্রেনের বিধ্বস্ত কামরাগুলোর মধ্যে কতজন যাত্রী এখনও আটকা পড়ে আছেন তাদের সংখ্যা এখনও জানা যাচ্ছে না। “মোট ছয়টি কামরা পুরোপুরি বিধ্বস্ত হয়েছে। এটা ছিল একটি স্লিপার ট্রেন। ধারণা করা হচ্ছে ৪৭-৫০ জন যাত্রী এই ট্রেনের আটকে রয়েছে। অন্য ট্রেনটিতে ৫০-৬০ জন রয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। দুর্ঘটনাস্থল থেকে পাওয়া ভিডিও ফুটেজে দেখা যাচ্ছে, বেশ কয়েকটি কামরা কাত হয়ে পড়ে আছে। এই দুর্ঘটনা কী কারণে ঘটেছে তা এখনও পরিষ্কার না। প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান বলেছেন, এই ঘটনায় তিনি হতবাক। কীভাবে এই দুর্ঘটনা ঘটলো সে সম্পর্কে তিনি পূর্ণাঙ্গ তদন্তের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। যাতায়াতের মাধ্যম হিসেবে রেল পাকিস্তানে খুবই জনপ্রিয়। কিন্তু এগুলোর রক্ষণাবেক্ষণ তেমন একটা হয়না। সেই সাথে রেল লাইন, সিগনালিং ব্যবস্থা এবং ইঞ্জিনগুলোও বেশ পুরনো। এছাড়া, অরক্ষিত লেভেল ক্রসিংয়েও প্রায় যাত্রী-বোঝাই ট্রেনে দুর্ঘটনা ঘটে। এসব কারণে গত ২১শে জুলাই পাঞ্জাব প্রদেশের শেখুপুরায় করাচী থেকে লাহোর-গামী এক ট্রেন শিখ তীর্থযাত্রী বহনকারী একটি ভ্যানকে ধাক্কা দিলে ২১ ব্যক্তি প্রাণ হারান। দু’হাজার উনিশ সালের অক্টোবরে করাচী থেকে রাওয়ালপিন্ডি-গামী ট্রেনের একটি গ্যাস সিলিন্ডার ফেটে আগুন ধরে গেলে ৭০ জন যাত্রী মারা যান। পাকিস্তানের রেল বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, ২০১২ থেকে ২০১৭ সালের মধ্যে সে দেশে মোট ৭৫৭টি রেল দুর্ঘটনা ঘটেছে। অর্থাৎ, গড়ে প্রতিবছর ১২৫টি দুর্ঘটনা হয়েছে।
Leave a Reply