ইউরোর ফাইনালে স্পেন। শিরোপা দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে তারা। লামিন ইয়ামালের রেকর্ড গড়া গোলে ফ্রান্সকে রুখে দিয়েছে লুইস দে লা ফুয়েন্তের দল। বিপরীতে দারুণ লড়াই করলেও শেষ পর্যন্ত আক্ষেপ বুকে সেমিফাইনাল থেকেই বিদায় কিলিয়ান এমবাপ্পেদের।
ইউরোর প্রথম সেমিফাইনালে মঙ্গলবার রাতে মুখোমুখি হয় স্পেন ও ফ্রান্স। দর্শকে ভরপুর মিউনিখের অ্যালিয়াঞ্জ অ্যারেনা মাতিয়ে তুলে দুই দলের লড়াই। যেখানে প্রথমে গোল করেও শেষ হাসি হাসতে পারেনি ফ্রান্স। স্পেনের কাছে হেরে গেছে ২-১ গোলে।
নামে-ভারে সমৃদ্ধ তারকা ঠাঁসা দুই দলের লড়াই যে একটু বেশিই উন্মাদনা ছড়াবে তা জানাই ছিলো। ম্যাচের একদম শুরু থেকেই দেখা গেল যার উদাহরণ। উত্তেজনার পারদ বাড়তে থাকল মুহূর্তে মুহূর্তে। দুই দলই লড়েছে নিজেদের সেরাটা দিয়ে।
সেমিফাইনালের মঞ্চে প্রথমার্ধের ২৫ মিনিট না পেরোতেই ৩ গোল! স্কোরলাইন দেখেই বোঝা যাচ্ছে, কী দারুণ জমে উঠেছিল শুরুটা। আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণে দর্শকেরাও হয়ে উঠেছিল চাঙ্গা। হাইভোল্টেজ ম্যাচ বলে কথা।
আসর জুড়ে দূর্দান্ত খেলে সেমিফাইনালে ওঠা স্পেনকে শুরুতেই চমকে দিয়েছে ফ্রান্স। ম্যাচের অষ্টম মিনিটে কোলো মুয়ানির গোলে লিড পায় দিদিয়ের দেশমের দল।
কিলিয়ান এমবাপ্পের মাপা এক ক্রসে সহজেই মাথা ছুঁইয়ে গোল করেন মুয়ানি।
এগিয়ে যাবার আনন্দ অবশ্য দীর্ঘস্থায়ী হয়নি৷ পিছিয়ে পড়ে যেন ক্ষুধার্ত বাঘ হয়ে উঠে স্পেন। পরের ১৮ মিনিটেই দেখা যায় যার প্রতিফলন। পাল্টা আক্রমণে ৪ মিনিটের মাঝে জোড়া গোল করে দৃশ্যপট বদলে ফেলে সাবেক বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা।
প্রথমে ২০ মিনিটে সমতা ফেরানো গোল করেন লামিন ইয়ামাল। ২৫ মিটার দূর থেকে দুর্দান্ত এক শটে স্কোর ১-১ করেন বার্সেলোনার এই তরুণ। তাতে তিনি বনে গেছেন ইউরো ইতিহাসের সর্বকণিষ্ঠ গোলদাতা। ১৬ বছর ৩৬২ দিন বয়সে গোল করে এই রেকর্ড গড়লেন ইয়ামাল।
গোল খাওয়ার পর ফ্রান্সকে সামলে ওঠারও সুযোগ দেয়নি স্পেন। ২৪ মিনিটে হেসুস নাভাসের বাড়ানো বল ক্লিয়ার করতে ব্যর্থ হন ফ্রান্সের ডিফেন্ডাররা, ফাঁকায় বল পেয়ে জালে জড়ান দানি ওলমো। গোল খাওয়ার চার মিনিটের ব্যবধানে লিড নিয়ে নেয় স্পেন।
এরপর আক্রমণ – পাল্টা আক্রমণ চললেও প্রথমার্ধে আর গোল আসেনি। এগিয়ে থেকেই স্বস্তি নিয়ে বিরতিতে যায় স্পেন। কয়েকবার বিপজ্জনক জায়গা থেকে ফ্রি-কিক পেলেও কাজে লাগাতে পারেননি এমবাপ্পেরা।
বিরতির পর সময়ের সাথে সাথে অনেকটা ডিফেন্সিভ হয়ে আসে স্পেন। তবে একের পর এক আক্রমণ চালিয়ে যায় ফ্রান্স। সমতায় ফিরতে মরিয়া হয়ে উঠে তারা। কিন্তু কিছুতেই কিছু হচ্ছিল না। গোলটা অধরাই থেকে যাচ্ছিল বারবার। ৬০ মিনিটে দেম্বেলের শট কোনোরকমে ফেরান স্পেন গোলরক্ষক উনাই সিমন।
৮৬ মিনিটে দারুণ এক আক্রমণে সুযোগ নষ্ট করেন এমবাপ্পে। ম্যাচের বাকি সময়েও চেষ্টা করে আর সমতায় ফিরতে পারেনি ফ্রান্স। দারুণ জয়ে ফাইনালের টিকিট নিশ্চিত করে স্পেন। টানা ছয় ম্যাচে অপরাজিত থেকে ফাইনালে খেলবে তারা।
Leave a Reply