সোমবার, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০২:৩৯ অপরাহ্ন

উপ-সম্পাদক :: দিদার সরদার
প্রধান সম্পাদক :: সমীর কুমার চাকলাদার
প্রকাশক ও সম্পাদক :: কাজী মোঃ জাহাঙ্গীর
যুগ্ম সম্পাদক :: মাসুদ রানা
সহ-সম্পাদক :: এস.এম জুলফিকার
প্রধান নির্বাহী সম্পাদক :: মামুন তালুকদার
নির্বাহী সম্পাদক :: সাইফুল ইসলাম
ব্যবস্থাপনা সম্পাদক :: আবুল কালাম আজাদ
সংবাদ শিরোনাম :
গৌরনদী-আগৈলঝাড়ায় আওয়ামী লীগের হামলায় বিএনপি-যুবদলের ৮ নেতা-কর্মী আহত আজ বিকেলে বরিশালে আসবেন জহির উদ্দিন স্বপন কমিউনিটি ক্লিনিকের সিএইচসিপি ও ব্যাবস্থাপনায় সম্পৃক্ত প্রতিনিধিদের অংশগ্রহনে দিনব্যপি কর্মশালা ২৪ জুন বরিশাল বিভাগীয় তারুণ্যের সমাবেশ সফল করার লক্ষ্যে বরিশাল সদর উপজেলা বিএনপির প্রস্তুতি সভা অনুষ্ঠিত ২৪ জুন তারুণ্যের সমাবেশ সফল করতে কেন্দ্রীয় যুবদলের বরিশাল বিভাগীয় সহ-সভাপতি তসলিম উদ্দিনের নেতৃত্বে লাকুটিয়া ও ঝড়ঝড়িয়াতলা বাজারে পথসভা ও লিফলেট বিতরণ বাউফলে মাদ্রাসা কর্মচারী নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগ বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শিরিনের বিরুদ্ধে কটুক্তি মূলক, মিথ্যা ও বানোয়াট বক্তব্য দেয়ার প্রতিবাদে বরিশালে তৃণমূল বিএনপি নেতাকর্মীদের বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শিরিনের বিরুদ্ধে কটুক্তি মূলক, মিথ্যা ও বানোয়াট বক্তব্য দেয়ায় বরিশাল, পটুয়াখালী, বরগুনা, ভোলা, ঝালকাঠি ও পিরোজপুর বিএনপির প্রতিবাদ বরিশাল জেলা দক্ষিণ বিএনপির সদস্য সচিব আবুল কালাম শাহীনের শশুর ইন্তেকাল করেছেন, বিলকিস জাহান শিরিনের শোক বরিশাল জেলা দক্ষিণ বিএনপির সদস্য সচিব আবুল কালাম শাহীন’র শশুর ইন্তেকাল করেছেন, সদর উপজেলা বিএনপির শোক 

প্রলয়

ফাইল ছবি

উড়ছে নীল মেঘ। পার্কের দূর্বা ঘাসগুলো বাতাসে দুলছে। স্নিগ্ধ বাতাসে ছুঁয়ে যাচ্ছে মন। বিরক্তির চোখে ‘অর্পিতা’ বারবার দেখছে ঘড়ি। বেলা ৬টা বাজে, কিছুক্ষণ পরেই সন্ধ্যা হয়ে যাবে। আমাকে বাসায় যাবার জন্য দৌঁড়াতে হবে। নইলে আন্টি আমাকে বাসায় ঢুকতেই দিবেনা। ওহ, কেন যে প্রলয় এখনো আসছেনা। এতো দেরি করলে আমায় বাসায় ফিরবো কখন।

পার্কের লেকের পাড়ে বসে আছে অর্পিতা। হঠাৎ পেছন থেকে কে যেন তার ঘন কালো চুলে বুলাতে লাগল মমতার স্পর্শ।
অর্পিতা- খবরদার তুমি আমার চুল স্পর্শ করবে না। এতো দেরি করে কেন আসলা? তুমি জানোনা, আন্টি আমার সাথে খুব খারাপ আচরণ করে।

অর্পিতাকে বিয়ে দিতে চায় তার আন্টি (সৎ মা)। সৎমায়ের সাথে অর্পিতার বাবাও রাজি হন। এলাকার বিশিষ্ট ব্যবসায়ীর সাথে ঠিক হয় বিয়ে। প্রলয় দায়িত্ব নিতে চায় না

দুই হাত জোড় করে ক্ষমা চাইলো প্রলয়। প্রলয়ের জোড়া হাতের কাছে হার মানল অর্পিতার অভিমান।
অর্পিতা- তুমি এতো দেরি করলে কেন?
প্রলয়- বিসিএস পরীক্ষার জন্য টাকা জমা দিতে গেছিলাম।
– কত টাকা লাগবে?
– ত্রিশ হাজার।
– সরকারী পরীক্ষা দিতে কি ত্রিশ হাজার টাকা লাগে।
– তুমিতো জানোনা, এখন সব কিছুর খরচ বেড়ে গেছে। একেকবার একেক সরকার আসে। আর নূতন নূতন খরচ বাড়ায়। তুমি কি চাওনা যে, আমি বিসিএস ক্যাডার হই?
– অবশ্যই চাই। আমি জাানি তোমার টাকার সমস্যা। তাই আমার হীরার এই নাম ফুলটা এনেছি। মারা যাবার আগে আম্মা আমাকে এটা দিয়েছিল।
– তুমি আমাকে এত দুর্লভ স্মৃতির জিনিসটা দিয়ে দিলা। তোমার কষ্ট হবে না।
– তুমি ভালো একটা চাকরি পেলে তো, আমারই সুবিধা। তাড়াতাড়ি আমরা জীবন শুরু করবো। মায়ের শেষ স্মৃতির থেকে আমার কাছে তোমার প্রতিষ্ঠা অনেক বেশি জরুরি। আমি তোমাকে ভালোবাসি।
প্রলয়ের নিজেকে খুব ছোট মনে হতে লাগলো। অর্পিতা মায়ের শেষ স্মৃতিটা পর্যন্ত তাকে দিয়ে দিচ্ছে। অথচ সে নানা ভাবে মিথ্যা বলে অর্পিতার কাছে টাকা নেয়। কিন্তু কি করবে প্রলয়? তার যে উপায় নাই।
প্রলয়- অর্পিতা তুমি যদি জানতে পারো যে, এই আমিটা আমি না, অন্যজন, তবে তোমার কেমন লাগবে?
– তোমার এই তুমি আর আমির প্রশ্ন শুনলে আমার কাছে অবাক লাগে! আমিটা আমি না এটা কোন ধরনের কথা? কি সব সাহিত্যের কঠিন কথা!
হঠাৎ সামনে হাজির ছোট্ট একটি মেয়ে। ধূলাতে জট বেঁধেছে তার চুলে। নোংরা কুঁচকে যাওয়া জামা আর দেহ ভরা ধূলা-বালি। করুণ কণ্ঠে চাইতে থাকে ‘৫টা টাকা’। প্রলয় মানি ব্যাগে হাত দিয়েই চিৎকার করে হায় হায়! আমার সব টাকা ছিনতাই হয়ে গেছে!
-ছোট্ট মেয়েটি প্রচণ্ড ভয় পেয়ে যায়। কান্নাভেজা কণ্ঠে বলে, স্যার আমি আপনার টাকা চুরি করিনি, বিশ্বাস করেন।
প্রলয়- নারে তোকে চোর ভাবছিনা। মনে হয়, পকেট থেকে পড়ে গেছে।

অর্পিতার খুব মায়া হলো। মেয়েটার হাতে গুঁজে দিলো ১০০ টাকা। চোখ ছলছল করে উঠল মেয়েটির। মাথা নিচু করে, দৌড়ে চলে গেল।

দুই.
পরের দিন দুপুর বেলা পাগল প্রায় হয়ে ছুটে এসেছে প্রলয়। দুচোখ ফোলা, সিঁদুর লালচে। মেডিকেলের কলেজের ওয়েটিং রুমে বসে আছে প্রলয়। কলেজের অফিস রুম থেকে ডেকে পাঠানো হলো তাকে।

অর্পিতা- একি প্রলয়, তোমাকে এমন বিধ্বস্ত দেখাচ্ছে কেন?
-আমার হোস্টেলের রুম থেকে মোবাইল ফোন, ল্যাপটপ, ক্যামেরা চুরি হয়ে গেছে। এই মাসের খরচ চালানোর ২০ হাজার টাকাও নাই হয়ে গেছে।
– কি বলছো তুমি!
– অর্পিতা, আমাকে এক লক্ষ টাকা ধার দিতে পারো?
– এতো টাকা! তুমি চিন্তা করো না, মার গহনা বিক্রি করে তোমাকে টাকা দিবো। আমি চাই তুমি ভালো থাকো।
– থ্যাংকস ডিয়ার, তুমি না থাকলে আমি পথে বসে যেতাম।
– প্রলয়, আমি তোমাকে ভালবাসি। আমি তোমাকে আলোর পথে নিয়ে যাবো।

৬ মাস পরের ঘটনা। মেডিকেলের ২য় বর্ষের ছাত্রী সে। অর্পিতাকে বিয়ে দিতে চায় তার আন্টি (সৎ মা)। সৎমায়ের সাথে অর্পিতার বাবাও রাজি হন। এলাকার বিশিষ্ট ব্যবসায়ীর সাথে ঠিক হয় বিয়ে। প্রলয় দায়িত্ব নিতে চায় না। বলতে থাকে তার অসহায়ত্বের কথা, বেকারত্বের কথা।

প্রলয় বলে- দেখো, আমরা দুজনেই এখনো ছাত্র, তোমার দায়িত্ব নেবার মতো যোগ্যতা এখনো আমার নায়। আমি প্রতি মাসে তোমার কাছে থেকে হাজার হাজার টাকা নিই। আমি কিভাবে তোমার দায়িত্ব নিবো?
অর্পিতা- আমরা দুইজনে টিউশনি করে সংসার চালাবো। অবস্থা বুঝে ব্যবস্থা হবেই।
ঘর বাঁধার স্বপ্ন আর প্রলয়কে হারানোর ভয়ে, অর্পিতা বাবার বাড়ি ছাড়ল। বিয়ের দুইদিন পূর্বে পালিয়ে গেল প্রলয়ের সাথে।

তিন.
সুসজ্জিত মনোরম একটি ফ্ল্যাট। ফ্ল্যাট ভর্তি কয়েকজন যুবতী মেয়েরা আধুনিক পোশাক আর উগ্র সাজে সজ্জিত সবাই। প্রতিটি কক্ষে নারী আর পুরুষ।

নম্বর দেয়া ৬টি কক্ষ। পছন্দমত তরুণীকে নিয়ে, টাকা জমা দিয়ে একেকজন পুরুষ ঢুকছে একেকটি কক্ষে। অর্পিতার মাথা ঘুরাতে থাকে।

তরুণীদের লিডার ভ্রূ উঁচু করে প্রশ্ন করে, গাধা তুমি, মেডিকেলের ছাত্রী হয়েও ভয়াবহ মাদকাসক্তকে চিনতে পারোনি! নেশার লোভে তোমাকে বোকা বানাত, আর তুমি টাকা দিতা। তোমার প্রলয়, তোমাকে এখানে বিক্রি করে দিয়েছে।

এই কথা শুনে মূর্ছা যায় অর্পিতা। জ্ঞান ফিরে নিজেকে দেখে হাসপাতালের বিছানায়। জোরে পড়ে যাওয়ার জন্য মাথা ফেটে যায়। জ্ঞান ফিরেই চিৎকার করে ওঠে সে। হাসপাতালের ডাইরেক্টর অর্পিতার বাবার বন্ধু। তিনি অর্পিতাকে ফিরিয়ে আনেন, এই নোংরা জগৎ থেকে। কিন্তু অর্পিতাকে গ্রহণে অস্বীকার করে তার বাবা মা।
অর্পিতার অভিভাবক হয়ে যায় ডাইরেক্টর স্যার। ঢাকা মেডিকেল কলেজের পোস্ট মর্টেম ক্লাসে যায় অর্পিতা। জীবন যুদ্ধে হেরে গেলেও, লেখাপড়ার যুদ্ধে প্রথম হয় সে।

ছোট্ট বেলা থেকেই বড় ডাক্তার হবার স্বপ্ন অর্পিতার। কাটাছেড়া, সেলাই, ড্রেসিং-এ ভীষণ দক্ষ সে। স্যার এর পাশে দাঁড়ায় সে। বেওয়ারিশ একটি লাশ উল্টো হয়ে পড়ে আছে চাটাইয়ের উপর। ডোম লাশটিকে সোজা করতেই, মুহূর্তেই নাই হয়ে যায় তার পৃথিবী। পায়ের তলা থেকে সরতে থাকে মাটি। চোখের পানি গড়িয়ে পড়তে থাকে গাল বেয়ে।

চোখের সামনে টুকরা টুকরা করে ফেলা হয় প্রলয়কে। হাতুড়ি দিয়ে ফাটানো হয় মাথা। পোস্ট মর্টেমের জন্য মগজ বের হতে থাকে ছিটকে। সহ্য করতে পারে না অর্পিতা। আবারো অজ্ঞান হয়ে যায়।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..



Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




© All rights reserved © 2017 Dokhinerkhobor.Com
Desing & Developed BY ThemesBazar.Com