কৃষ্ণ কান্ত দাশ, স্বরূপকাঠি ॥ সমুদয়কাঠীর চেয়ারম্যান মোঃ সবুর তালুকদারের আপন ভাতিজা রাজু’র বিরুদ্ধে কথা বলা সহ সয়ং চেয়ারম্যানের নানান অনিয়মের বিষয়ে সাহসী উচ্চারন করার কারণে কাল হয়ে দাঁডায় এম কে জাকিরের(৩২)। স্থানীয় সূত্র জানায় গত মংগলবার জুলুহার বাজারে চেয়ারম্যান মোঃ সবুর তালুকদারের বিরুদ্ধে এলাকার বেশীরভাগ লোকজন মানব বন্দনের আয়োজন করে। বিকাল ৫ টার সময়ে মানব বন্দন হওয়ার সব আয়োজন চূড়ান্ত ছিলো। কিন্তু স্থানীয় প্রশাসনের সুদৃষ্টি ও চৌকস চিন্তা ভাবনা দিয়ে প্রতিবাদী লোকজনদের মানব বন্দন না করার আহবান জানান। প্রশাসন ও প্রতিবাদী লোকজনের মধ্যে সুন্দর সমন্বয়ের আশ্বাসের ফলে মানব বন্দন আপাতত স্থগিত ঘোষণা করেন জুলুহার বাজারে। স্থানীয় সূত্র আরও জানায়, আওয়ামী লীগের নেতা মোঃ হুমায়ুন বেপারি, ইউনিয়ন যুব লীগের সভাপতি মোঃ জসিম তালুকদার সহ ইউনিয়নের কয়েক শত লোকজন মানব বন্দন করার সকল প্রস্তুতি নিয়েছিল। এদিকে সাগরকান্দা গ্রামের প্রতিবাদী যুবক ও উদীয়মান সমাজ সেবক এম কে জাকিরও মানব বন্দনে সক্রিয় ভূমিকা ছিলো। বিগত সময়ে চেয়ারম্যানের আপন ভাতিজা রাজু’র মাদক সেবন সহ বিক্রির বিরুদ্ধে গঠন মূলক প্রতিবাদ করে আসছে প্রতিবাদী এম জাকির হোসেন। পাশাপাশি বর্তমান চেয়ারম্যান মোঃ সবুর তালুকদারের নানান কাজের অনিয়মের বিষয়েও সাহসী উচ্চারন সহ প্রতিবাদ করেন। সমাজ সেবার নামে সবুর তালুকদারের মনগড়া ও একক সিদ্ধান্ত নেওয়ার বিষয়ে সাহসী উচ্চারন করেন প্রায়ই এম কে জাকির হোসেন। আর সেই প্রতিবাদই কাল হয়ে দাঁডায় বলে এলাকার বেশীরভাগ লোকজন গণ মাধ্যম কর্মীদের বলেন।
স্থানীয় সূত্র আরও জানায়, মানব বন্দন স্থগিত হওয়ার পর এম জাকির হোসেন সন্ধ্যার পর স্বরূপকাঠি উপজেলায় আসেন বিশেষ জরুরী কাজে। উপজেলার কাজ কর্ম সেরে আনুমানিক রাত্র ৯ ৪৫ মিনিটের সময়ে মোটর সাইকেল যোগে স্বরূপকাঠি থেকে শশীদ মন্ডল বাড়ী পৌছান। মোটর বাইক ছেড়ে দেওয়ার সাথে সাথে দু দুইটি বাইক আসে জাকিরের কাছে। সোলার ও বিদুৎএর সুস্পষ্ট আলোর মধ্যে সব কিছু দেখাচ্ছিল। কিন্তু কোন কিছুর আছ করার আগেই মুহুর্তের মধ্যে ঐ দুটি বাইক থেকে সয়ং চেয়ারম্যান সবুর তালুকদার তার ভাতিজা রাজু ও তরিকুল চৌকিদার সহ আর তিনজনে মিলে অপহরণের কায়দায় অন্যত্র নেওয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু জাকির বিষয়টি আচ করার সাথে সাথে জোরে জোরে চিৎকার দিতে থাকে। আর সেই সময়ে মুখ চেপে ধরার চেষ্টা করে চেয়ারম্যানের গুন্ডা বাহিনীর লোকজনরা। জামাত শিবিরের ক্যাডার মোঃ শাহ রিয়ার তালুকদার ঘটনা স্থলে চেয়ারম্যানের অন্যতম ক্যাডার হিসেবে অগ্রনী ভূমিকা পালন করেন। এলোপাতাড়ি কিল ঘুশি দিতে থাকে চেয়ারম্যান ও তার গুন্ডা বাহিনীরা। ঘটনার এক পর্যায়ে চেয়ারম্যান একটি ছুরি বের করেন। ছুরি দিয়ে গলায় পোচ দেওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু জাকির মুহুর্তের মধ্যে দৌড় দেওয়ার চেষ্টা করলেও পরবর্তী কোপ মাথার পিছনে লাগে। মুহূর্তের মধ্যে জাকিরের চিৎকারে দুই এক লোক ছুটে আসেন। উপস্থিত লোকজন রক্তাক্ত অবস্থায় জাকিরকে উদ্ধার করেন। তাৎক্ষণিক ভাবে রক্ত ক্ষরণ বন্ধ করার চেষ্টা করেন উপস্থিত লোকজনরা। ভাগ্য ভালো বিদায় ছুরির পোচ গলায় না লেগে মাথার পিছনে লাগে। এদিকে লোকজনের আনাগোনা টের পাওয়া মাত্র চেয়ারম্যান ও তার গুন্ডাবাহিনীর লোকজন মুহুর্তের মধ্যে ছিটকে পড়ে। তবে স্থানীয় লোকজন পরবর্তী সময়ে জরুরী ভাবে উন্নত চিকিৎসার জন্য উপজেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করান।
এ ব্যাপারে হাসপাতালের বেডে শুয়ে থাকা উদীয়মান সমাজ সেবক এম কে জাকির হোসেন জেলার ও স্থানীয় গণ মাধ্যম কর্মীদের বলেন, চেয়ারম্যান মোঃ সবুর তালুকদার ও তার গুন্ডা বাহিনীর লোকজন আমাকে হত্যার চেষ্টা করে। ভাগ্য ভালো বিদায় মহান আল্লাহর নাম নিয়ে বেচে আছি। কান্নারত ভাষায় বলেন, আমি বরাবরই মাদক বিরোধী। চেয়ারম্যান মোঃ সবুর তালুকদারের আপন ভাতিজা রাজু’র মাদক সেবন সহ বিক্রির বিরুদ্ধে অভিযোগে দেই চেয়ারম্যানের কাছে। পাশাপাশি চেয়ারম্যানের নানান অনিয়মের বিষয়ে সাহসী উচ্চারন করাই আমার জন্য কাল হয়ে দাঁডায়। তাছাড়া জুলুহার বাজারে চেয়ারম্যান মোঃ সবুর তালুকদারের বিরুদ্ধে মানব বন্দনে সহোযোগিতাও কাল হয়ে দাঁডায়। যদিও মানব বন্দন আপাতত স্থগিত হয় প্রশাসনের আশ্বাসের ফলে। আমি প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করি। পাশাপাশি আপনারা জাতির বিবেক তাই সঠিক কথা লিখুন জাতির কাছে। এদিকে এলাকার চেয়ারম্যান মোঃ সবুর তালুকদারের সাথে কথা হয়। তিনি গণ মাধ্যম কর্মীদের বলেন, আসলে জাকির হোসেন একজন মানষিক রোগী। তার পরিবারও বিষয়টি অবগত। আপনারা এলাকার মাধ্যমে খবর নিন তাহলে বিষয়টি পরিস্কার হয়ে যাবে। সর্বশেষ পর্যায়ে স্থানীয় প্রশাসনের শরণাপন্ন হন জেলা সহ স্থানীয় গণ মাধ্যম কর্মীরা। প্রশাসন মানব বন্দন আপাতত স্থগিতের বিষয়টি সত্যতা নিশ্চিত করেন। আর জাকিরের আহত হওয়ার অভিযোগ পেয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে তদন্তে আছেন স্থানীয় প্রশাসনের লোকজন। তবে এখনো পর্যন্ত কোন ধরনের মামলা হয়নি। এলাকার বেশীরভাগ শীর্ষ নেতারা বিষয়টি নিয়ে চিন্তিত। বেশির ভাগ লোকজন বলেন, আসলে এটা চেয়ারম্যান মোঃ সবুর তালুকদারের পরিলক্ষিত। এম কে জাকির মানষিক রোগী নয় বরং সমুদয়কাঠীর মধ্যে একজন পাকাপোক্ত প্রতিবাদী যুবক। সরকারি দলের রাজনীতির সাথে জড়িত। কিন্তু সবুর তালুকদারের হাইব্রিড নব্য আওয়ামী লীগের নেতা। সর্বপরি সাগরকান্দা এলাকায় টান টান উত্তেজনা বিরাজ করছে সর্ব মহলে। প্রশাসনের সুদৃষ্টি দেওয়া অতীব জরুরী বলে মনে করেন সুশীল সমাজের লোকজন।
Leave a Reply