ভান্ডারিয়া প্রতিবেদক ॥ পিরোজপুরের ভান্ডারিয়া উপজেলার ধাওয়া ইউনিয়নের গ্রাম পুলিশ জামাল আকন (৪০) এর সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে অতিষ্ঠ প্রায় গ্রামবাসি। এক সময়ের পেশাদার চোর জামাল আকন গ্রাম পুলিশে চাকরি পাওয়ার পর গ্রামবাসির আতঙ্কের অন্যতম কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। পুলিশি প্রভাব খাটিয়ে গ্রামের নিরিহ মানুষদের নানাভাবে হয়রানিসহ ভয়ভিতি প্রদর্শন করে আসছে।
শুধু তাই নয়, ‘গ্রাম পুলিশের ছাত্র ছায়ায় গ্রামের মধ্যে ভূমি দস্যুতা, মাদক কারবারি, চাঁদাবাজি এবং সরকারি ত্রাণ আত্মসাতসহ নানা অপকর্মের অনুঘটক হিসেবে নিজেকে তুলে ধরেছেন এই গ্রাম পুলিশের সদস্য। এসব করে রাতারাতি অঢেল সম্পদের মালিক বনে গেছেন তিনি। এসব ঘটনায় তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এর কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছে গ্রামবাসি। এমনকি করা হয়েছে থানায় সাধারণ ডায়েরীও। যার নম্বর ১১৪৫। গ্রামবাসির পক্ষে ভান্ডারিয়ার ধাওয়া ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা এবং বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী মো. আতিকুল ইসলাম নাহিদ দুদকে অভিযোগ ও থানায় ডায়েরী করেন। তবে ডায়েরী করার পরে উল্টো হয়রানির শিকার হচ্ছে তাকে। এক প্রকার তিনি পালিয়ে বেড়াচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
ডায়েরী এবং দুদকে দেয়া অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘ধাওয়া ইউনিয়নের গ্রাম পুলিশ জামাল আকন একসময় ছিলেন এলাকার চিহ্নিত চোর। গত ৫-৬ বছর পূর্বে গ্রাম পুলিশে নিয়োগ পান তিনি। গ্রাম পুলিশে চাকরি পাওয়ার থেকে সরকারি ক্ষমতার অপব্যবহার করে বিভিন্ন অপরাধ কর্মকন্ডে জড়িয়ে পড়ে সে।
অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, ‘ইউনিয়ন পরিষদের ত্রাণ দেয়ার নাম করে এলাকার বিভিন্ন লোকেদের কাছ থেকে মোটা অংকের অর্থ হাতিয়ে নিয়েছে গ্রাম পুলিশ জামাল আকন। মাদক দিয়ে পুলিশের হাতে ধরিয়ে দেয়ার ভয় ভীতি দেখিয়ে নিরিহ মানুষের কাছ থেকে চাঁদা আদায় তার নীত্য দিনের ব্যাপারে পরিনত হয়েছে। কিন্তু তার বিরুদ্ধে কেউ মুখ খোলার সাহস পাচ্ছে না। কেউ মুখ খুললে তাকে নানাভাবে হয়রানি করছেন তিনি।
সম্প্রতি এমন একটি ঘটনায় ভান্ডারিয়া থানায় সাধারণ ডায়েরী করেছেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আতিকুল ইসলাম নাহিদ। ডায়েরীতে তিনি বলেছেন, ‘জামাল আকনদের সঙ্গে তাদের জমি নিয়ে বিরোধ চলছে। গত ২৭ মে বিরোধীয় ওই জমিতে বালু ভরাট করে জামাল আকন ও তাদের লোকেরা। এতে বাধা দিলে তারা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীকে নানাভাবে হুমকি দেয়। পরে স্থানীয়দের কাছে বিচার দিলে আরও ক্ষিপ্ত হয় জামাল আকন। এমনকি ২৮ জুলাই দ্বিতীয় দফায় জমিতে বালু ভরাট করতে যায় তারা। এসময় বাধা দিলে জামাল আকনের নেতৃত্বে রাসেল আকন, এখলাজ আকন, মিরাজ আকন, পারভিন বেগম ও মমতাজ বেগমসহ তাদের সহযোগিরা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে। এই ঘটনায় তিনি সাধারণ ডায়েরী করায় আরও ক্ষিপ্ত হয় প্রতিপক্ষরা। আর তাই ওই সন্ত্রাসীদের ভয়ে পালিয়ে বেরাচ্ছে হচ্ছে আতিকুল ইসলাম নাহিদকে। তাই নিরুপায় এলাকাবাসি তার সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজি, মাদক ব্যবসা এবং দুর্নীতির লাগাম টেনে দিয়ে দুদুকের কাছে লিখিত অভিযোগের পাশাপাশি থানায় সাধারণ ডায়েরী করেছেন।
Leave a Reply