বরগুনা প্রতিবেদক ॥ বরগুনা সদর উপজেলায় ছয় বছরের এক শিশুকে পানিতে চুবিয়ে হত্যার পর লাশ নদীতে ভাসিয়ে দেয়ার ঘটনা ঘটেছে। এছাড়া নিহতের আরেক ভাইকে একই প্রক্রিয়ায় হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িত নিহতের ভগ্নিপতি মোসলেমকে আটক করে পুলিশে দিয়েছে স্থানীয় জনতা। নিহত ওই শিশুর নাম আবদুল্লাহ (৬)। এখনও পর্যন্ত তার লাশের খোঁজ মেলেনি। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ঢলুয়া ইউনিয়নের ডালভাঙা এলাকার বিষখালী নদীর তীরে এ ঘটনা ঘটে। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, আবদুল্লাহর মৃত্যু নিশ্চিতের পর বিষখালী নদীতে ভাসিয়ে দেয় মোসলেম। পরে তার ছোট ভাই দেড় বছরের আফসানকেও একই প্রক্রিয়ায় হত্যার চেষ্টা করে। এ সময় ঘাতককে হাতেনাতে আটক করা হয়। এখনও পর্যন্ত শিশু আবদুল্লাহর খোঁজ মেলেনি। হত্যার কথা মোসলেম স্বীকার করেছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। প্রত্যক্ষদর্শী আবদুর রহিম নামের এক ব্যক্তি জানান, ডালভাঙা এলাকার নদীসংলগ্ন একটি দীঘিতে শিশু আফসানকে পানিতে চুবিয়ে হত্যার চেষ্টা করছিলেন মোসলেম। বিষয়টি দেখতে পেয়ে তিনি দ্রুত সেখানে গিয়ে ওই শিশুটিকে উদ্ধার করেন। পরে স্থানীয়রা মোসলেমকে আটক করে পুলিশে খবর দেয়।
নিহতের বাবা ছগীর জানান, তিন মাস আগে অসুস্থ হয়ে আমার স্ত্রীর মৃত্যু হয়। আবদুল্লাহ ও আফসানকে আমার মেয়েরা দেখাশোনা করতো। জামাতা মোসলেমের বাড়ি সিরাজগঞ্জ এলাকায়। সে ঢাকায় রিকশা চালায়। সপ্তাহখানেক আগে বরগুনায় বেড়াতে আসে। বৃহস্পতিবার বিকালে ডালভাঙা এলাকায় নানাশ্বশুর বাড়িতে বেড়াতে এসে শিশু আবদুল্লাহ ও আফসানকে নিয়ে ঘুরতে বের হয় মোসলেম। সন্ধ্যার পর তিনি জানতে পারেন তার বড় ছেলে আবদুল্লাহকে পানিতে চুবিয়ে হত্যার পর লাশ বিষখালী নদীতে ভাসিয়ে দিয়েছে মোসলেম। ছোট ছেলে আফসানকে একই প্রক্রিয়ায় হত্যার সময় স্থানীয়রা তাকে হাতেনাতে আটক করে।
সগীর আরও জানান, ঢাকায় থাকা অবস্থায় স্ত্রী ও সন্তানকে ঠিকমত ভরণপোষণ না দিলে মাসখানেক আগে তার মেয়ে সন্তান নিয়ে বাড়িতে চলে আসে। মোসলেমও সপ্তাহখানেক আগে এসে তার বাচ্চাকে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। কিন্ত আমরা মোসলেমের কাছে আমার নাতিকে দিতে রাজি হইনি। এর জেরে আমার ছেলেকে নিয়ে হত্যা করেছে সে। ঘাতক মোসলেম হত্যার বিষয়টি স্বীকার করে বলেছেন, ‘আমার ছেলেকে নিয়ে যেতে এসেছিলাম। কিন্ত আমার স্ত্রী ও শ্বশুর নিয়ে যেতে দেয়নি। এ কারণে ক্ষুদ্ধ হয়ে আবদুল্লাহ ও আফসানকে হত্যার পরিকল্পনা করে বেড়াতে নিয়ে যাই। প্রথমে আবদুল্লাহকে দীঘিতে ফেলে চুবিয়ে হত্যা করি। পরে মৃত্যু নিশ্চিত করে লাশ নদীতে ভাসিয়ে দেই। এরপর আফসানকেও একই প্রক্রিয়ায় হত্যার চেষ্টা করি।’ বরগুনা সদর থানার ওসি কেএম তারিকুল ইসলাম বলেন, নিহত শিশুটিকে উদ্ধারের চেষ্টা চলছে। ঘাতক মোসলেমকে আটক করে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে হত্যা মামলা প্রক্রিয়াধীন।
Leave a Reply