বুধবার, ০১ মে ২০২৪, ০৮:১৪ অপরাহ্ন

উপ-সম্পাদক :: দিদার সরদার
প্রধান সম্পাদক :: সমীর কুমার চাকলাদার
প্রকাশক ও সম্পাদক :: কাজী মোঃ জাহাঙ্গীর
যুগ্ম সম্পাদক :: মাসুদ রানা
সহ-সম্পাদক :: এস.এম জুলফিকার
প্রধান নির্বাহী সম্পাদক :: মামুন তালুকদার
নির্বাহী সম্পাদক :: সাইফুল ইসলাম
ব্যবস্থাপনা সম্পাদক :: আবুল কালাম আজাদ
সংবাদ শিরোনাম :
ফুলকুঁড়ি আসর এর ফাইনাল ক্রিকেট টুর্নামেন্টের অনুষ্ঠিত আওয়ামী ঘরানার বিতর্কিত লোকদের দিয়ে উজিরপুর উপজেলা শ্রমিক দলের কমিটি গঠন করার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন সান্টু খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি ও তারেক রহমানের সুস্থতা কামনায় গৌরনদীতে দোয়া ও ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত গৌরনদীতে এতিমখানা ও মাদ্রাসার দরিদ্র, অসহায় শিক্ষার্থীদের মাঝে ঈদ বস্ত্র বিতরণ ও ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত বরিশালে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের কারাবন্ধী ও রাজপথে সাহসী সৈনিকদের সম্মানে ইফতার দোয়া মোনাজাত অনুষ্ঠিত আদালতে মামলা চলমান থাকা অবস্থায়, দখিনের খবর পত্রিকা অফিসের তালা ভেঙে কোটি টাকার লুণ্ঠিত মালামাল বাড়িওয়ালার পাঁচ তলা থেকে উদ্ধার, মামলা নিতে পুলিশের রহস্যজনক ভূমিকা গলাচিপা উপজেলা প্রেসক্লাবের কমিটি গঠন, সভাপতি হাফিজ, সম্পাদক রুবেল চোখের জলে বরিশাল প্রেসক্লাব সভাপতি কাজী বাবুলকে চির বিদায় বিএনপি নেতা জহির উদ্দিন স্বপন কারামুক্ত উচ্চ আদালতে জামিন পেলেন বরিশাল মহানগর বিএনপির মীর জাহিদসহ পাঁচ নেতা
নেতারা মালিক, কর্মীরা গোলাম, এ হলো অবস্থা!

নেতারা মালিক, কর্মীরা গোলাম, এ হলো অবস্থা!

সোহেল সানি : বঙ্গবন্ধু নিহত হওয়ার মাত্র ক’দিন আগে ক্ষুব্ধ হয়ে বলেন, “আমরা যারা ক্ষমতা ব্যবহার করতে শিখেছি তারাই মুরব্বিয়ানা দেখিয়েছি। যেন আমরা হলাম মালিক, তোমারা আমাদের গোলাম। তোমরা এসে আমাদের বাড়ির দরজায় দাঁড়িয়ে থাকো, আমাদের হুকুম নাও, হুকুম মতো কাজ করো। না, এই মনোভাব কোন স্বাধীন দেশে চলতে পারে না।”
বঙ্গবন্ধু আঁচ করতে পেরেছিলেন দলের সঙ্গে সরকারের দুরত্ব। বঙ্গবন্ধু হত্যার পর নেতারা খুনী মোশতাকের মন্ত্রীত্ব গ্রহণ করায় কর্মীরা কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে পড়ে। নইলে “মুজিব হত্যার পরিণাম, বাংলা হবে ভিয়েতনাম” এই শ্লোগান মুখে নয় বাস্তবেই হতো। অবস্থাদৃষ্টে মনে হয়, শেখ হাসিনার মন্ত্রীরা একগ্রহের বাসিন্দা আর দলের কর্মীরা আরেক গ্রহের বাসিন্দা। কেউ কাউকে দেখতে পান না। নেতারা কথায় কথায় মুখে ফেনা তুলছেন, নিজেদের বঙ্গবন্ধুর আদর্শিক সৈনিক পরিচয় দিয়ে। কিন্তু কর্মীবান্ধব নেতাও নেই মন্ত্রীও নেই। অথচ, বঙ্গবন্ধুর কথা-“এভরি পার্টি ওয়ার্কার অব মাইন ইজ লাইক মাই ব্রাদার, ইজ লাইক মাই সন। আই ক্রিয়েটেড এ ফ্যামিলি হোয়েন আই অরগানাইজড আওয়ামী লীগ, পলিটিকাল পার্টি মিনস এ ফ্যামিলি- যার ভেতরে আছে আইডিওলজিক্যাল এফিনিটি। উই আর ওয়ান ফর সাম পার্টিকুলার পারপাসেস, হোয়্যারেভার উই আর?” বঙ্গবন্ধুর কন্যা বাংলাদেশকে উন্নত শিখরে পৌঁছে দিয়েছেন। তাঁর জনপ্রিয়তাও বেড়েছে। কিন্তু দলের জনপ্রিয়তা বাড়েনি। নেতা-মন্ত্রীরা কর্মী থেকে বিচ্ছিন্ন। ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বরের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিজয় ছিলো ঐতিহাসিক। প্রকৃতপক্ষে ওটা ছিলো বিএনপি-জামাতের জঙ্গিবাদী দুঃশাসনের বিরুদ্ধে এক ‘ভোটবিপ্লব’। বিজয়ের নেপথ্যে কাজ করেছিলো, অবিচ্ছিন্ন আন্দোলন, কর্মীদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ, আত্মত্যাগ এবং শেখ হাসিনার ইস্পাত-দৃঢ় নেতৃত্ব।
মহাবিজয় না হলে শেখ হাসিনার পক্ষে দেশকে শেকড় থেকে শিখরে পৌঁছে দেয়া সম্ভব হতো না। নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা ছিলো বলেই সংবিধান সংশোধন বিল পাস করা সম্ভব হয়েছে।সুপ্রিমকোর্টের আদেশ বাস্তবায়ন হয়ে সংবিধানের মূলনীতিগুলো পুনঃপ্রতিষ্ঠালাভ করেছে। অতি স্বাচ্ছন্দ্যে ‘নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার পদ্ধতি’ বাতিলের পক্ষে দেয়া সুপ্রিমকোর্টের নির্দেশনাও বাস্তবায়ন করা গেছে।
মহাবিজয় যে সরকারের মানসিক শক্তিকে প্রবল করে তুলেছিলো, তার বড় প্রমাণ হচ্ছে, মানবতা বিরোধী যুদ্ধাপরাধের বিচার। মূলত নির্বাচনী ফলাফলেই বিএনপি-জামাতের মেরুদ- ভেঙ্গে যায়। বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার কবল থেকে ক্যান্টনমেন্টের বাড়ি অবমুক্ত করারও সম্ভব হয়। ষড়যন্ত্রের রাজনীতির অবসানে এবং রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা আনায়নে ক্যান্টনমেন্টের বাড়িটি বিএনপি চেয়ারপারসনের হাত থেকে উদ্ধার করার ঘটনা প্রধানমন্ত্রী হিসাবে শেখ হাসিনার বিরাট সাফল্য। উন্নয়নের ক্ষেত্রে বিশ্বের কাছে বাংলাদেশ যে আজ ‘রোল-মডেল’ তা কোনভাবেই সম্ভব হতো না রাজনীতির অদৃশ্য ষড়যন্ত্রের দুর্গটি ভেঙ্গে না দিলে। শেখ হাসিনার সরকারের সাফল্যের প্রশংসা দেশ ছাপিয়ে বিদেশের রাষ্ট্রপ্রধানদের মুখেমুখে। এ সাফল্যের কারণে আওয়ামী লীগের জনপ্রিয়তা তো আরও বেড়ে যাওয়ার কথা। ২০০৮ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে ফলাফলের জন্য অপেক্ষা করতে হয়েছে, কিন্তু পরবর্তী দুটি নির্বাচনে কেনো সেই অবস্থান থেকে সরে দাঁড়াতে হয়েছে? অর্থাৎ ফলাফলের জন্য অপেক্ষা নয়, আগেই ফলাফল তৈরি করতে হয়েছে। এ অভিযোগ বিএনপিসহ বিরোধীদের। একেবারে ফেলে দেয়া যায় না। সেনাসমর্থিত ফখরুদ্দিন সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে বিএনপি জোট ভরাডুবির পরেও কিন্তু এরকম অভিযোগ করতে পারেনি। কারণ তখন আওয়ামী লীগকে ফলাফলের জন্য অপেক্ষাই করতে হয়েছে। সরকারের সাফল্যে আওয়ামী লীগের জনপ্রিয়তা যদি ধস না নামবে, তাহলে অপেক্ষার নীতি থেকে সরে দাঁড়াতে হলো কেনো?
মন্ত্রিসভার চেহারায় স্পষ্ট হয়ে উঠেছে যে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগের তিন মেয়াদে তিন ক্যাটাগরির টিম নিয়ে তার সরকার পরিচালনা করার নীতি গ্রহণ করেন।
২০০৯ সালের সরকারটি পরিচালনা করেন দলের ‘বি’ টিম দিয়ে। ‘এ’ টিম সাইডলাইনে ফেলে রাখা হয়। দলীয় নেতৃত্ব থেকেও ‘এ’ টিমকে সরিয়ে দেয়া হয়। ‘এ’ টিমের আমু-রাজ্জাক, তোফায়েল-জলিল সুরঞ্জিত প্রমুখ ছিলেন দল ও সরকার থেকে দূরে। প্রথম মেয়াদ চালানো হয় ‘বি’ টিম দিয়ে। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি নির্বাচনের পর ‘বি’ টিমের সঙ্গে ‘এ’ টিমের সমন্বয় ঘটানো হয়। এভাবেই কাটানো হয় দ্বিতীয় মেয়াদ। বর্তমান তৃতীয় মেয়াদে পরিচালিত হচ্ছে ‘সি’ টিম দিয়ে। এদের মধ্যে বেশ কয়েকজন দক্ষতার পরিচয় দেয়। কিন্তু অধিকাংশ চরম ব্যর্থতার পরিচয় দিচ্ছেন। স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেকসহ অনেকের পদত্যাগের দাবি উঠেছে। মন্ত্রিসভা সম্প্রসারণের কথা শোনা যাচ্ছে। সবকিছু নির্ভর করছে প্রধানমন্ত্রীর ওপর। সরকার টিকে আছে শেখ হাসিনার একক জনপ্রিয়তার ওপর ভর করে। কর্মীরা হতাশ। দলের সাংগঠনিক নেতৃত্ব বলে কিছু নেই। সর্বত্র অনুপ্রবেশকারীদের রামরাজত্ব। এরা সরকারের সাফল্য ম্লান করে দিচ্ছে। অসংখ্য এমপির বিরুদ্ধেও অভিযোগ লুটপাটসহ জনহিতকর কর্মকা-ের। প্রকৃত কর্মীরা যেমন ছিলেন তেমনই আছেন। ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটেনি তাদের। নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বঙ্গবন্ধুর আরও একটি কথা উদ্ধৃত করছি। তিনি বলেছিলেন, ‘মবিলাইজ দি পিপল এন্ড ডু গুড দি হিউম্যান বিইংস অব বাংলাদেশ। দীজ আনফরচুনেট পিপল হ্যাভ সাফার্ড লং জেনারেশন আফটার জেনারেশন।”
লেখকঃ সিনিয়র সাংবাদিক ও কলামিস্ট।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..



Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




© All rights reserved © 2017 Dokhinerkhobor.Com
Desing & Developed BY ThemesBazar.Com