ঝালকাঠি প্রতিনিধি ॥ ব্যবহারের অনুপযোগী ও ঝুকিপূর্ণ হওয়ায় অব্যবহৃত এবং পরিত্যক্ত অবস্থায় রয়েছে ঝালকাঠি সরকারী কলেজ অধ্যক্ষের বাসভবন। এনিয়ে কলেজ কর্তৃপক্ষ শিক্ষাপ্রকৌশল অধিদপ্তরে বারবার চিঠি দিলেও কোন ব্যবস্থা নিচ্ছে না তারা। অথচ বাসভবন বাবদ অধ্যক্ষের বেতন থেকে প্রতিমাসে প্রায় ২৫ হাজার টাকা ভাড়া বাবদ কেটে নেয়া হচ্ছে। অপরদিকে বাসা ভাড়া করে থাকায় দুদিকেই আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হওয়ায় অধ্যক্ষের গলার কাটা হয়ে দাড়িয়েছে বাসভবনটি। কলেজসূত্রে জানাগেছে, ঝালকাঠি সরকারী কলেজ অধ্যক্ষের জন্য ১৯৯৩ সালে নির্মিত ডরমিটরি ভবনের কক্ষগুলো অত্যন্ত সরু এবং পাশের চলাচলের রাস্তার চেয়ে নিচু হওয়ায় তা শুরু থেকেই ব্যবহারের অযোগ্য হয়ে পড়ে। এক অধ্যক্ষ (প্রফেসর রুস্তম আলী) ২ বছর ছিলেন তবে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের সাথে সংস্কার করা না হলে বাড়ি ভাড়া কাটতে পারবে না বলে তিনি চিঠি দিয়েছিলেন। একারণে ওই অধ্যক্ষের কাছ থেকে ডরমিটরিতে বসবাসের জন্য বাড়ি ভাড়া কর্তন করতে পারেনি কর্তৃপক্ষ। এছাড়া প্রতিষ্ঠার পর থেকেই প্রত্যেক অধ্যক্ষের বেতন থেকে ডরমিটরি ভাড়া বাবদ মোটা অংকের টাকা কেটে নেয়া হয়। অধ্যক্ষের বাসভবন ব্যবহারের এতোটাই অনুপযোগী যে, নির্মাণের পর থেকে সঠিকভাবে কোন অধ্যক্ষই ওই ডরমিটরিতে বসবাস করতে পারেনি। বর্তমানে ওই ডরমিটরি ভবনের ফ্লোর নিচু হওয়ায় একটু বৃষ্টি হলে বা পানি বৃদ্ধি পেলে ফ্লোর তলিয়ে যায়। ভবনের পাশেই পুকুর থাকায় অনেক সময় সাপের উপদ্রবও দেখা যায় ভবনটিতে। সেখানে অনুপযোগী পরিবেশের কারণে কোন কর্মচারীও থাকতে না চাওয়ায় অব্যবহৃত এবং পরিত্যক্ত অবস্থায়ই রয়েছে।
কিন্তু কলেজের বর্তমান অধ্যক্ষ প্রফেসর মোঃ আনছার উদ্দিনের মাসিক বেতন থেকে প্রায় ২৫ হাজার টাকা ডরমিটরি ভাড়া বাবাদ কেটে নেয়া হচ্ছে। এব্যাপারে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরে একাধিক চিঠি দেয়া হলেও কোন ব্যবস্থা নেয়নি অধিদপ্তর। সরকারী কলেজ শিক্ষক সমিতির সাধারন সম্পাদক আঃ ছালাম (সহযোগী অধ্যাপক), যুগ্ম সম্পাদক আসাদুজ্জামান রুবেল (সহকারী অধ্যাপক)সহ শিক্ষক মন্ডলী জানান, সরকারী কলেজ অধ্যক্ষের জন্য মানসম্মত ডুপ্লেক্স ভবন নির্মাণ করা প্রয়োজন। পুরাতন ভবনটি ব্যবহারে অত্যন্ত অনুপযোগী হওয়ায় এখানে কেউই বসবাস করছে না। একারণে বর্তমানে ভবনটির বাইরে বিভিন্ন লতাপাতা জড়িয়ে এবং ভিতরের আস্তর খসে পড়ে ভুতুরে পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। অধ্যক্ষের বেতন থেকে প্রতিমাসে ২৫হাজার টাকা কেটে নেয়া হচ্ছে অপরদিকে তিনি বাসা ভাড়া করে থাকায় উভয় দিকেই আর্থিক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। এমন অবস্থায় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেন তারা। কলেজ অধ্যক্ষ প্রফেসর মোঃ আনছার উদ্দিন জানান, বাসের অনুপযুগি হওয়ায় অধ্যক্ষের বাসভবনে আমি থাকছিনা। তবুও আমার বেতন থেকে এ পর্যন্ত সাড়ে সাত লক্ষ টাকা বাড়ি ভাড়া বাবদ কেটে নেয়া হয়েছে। শিক্ষাপ্রকৌশল অধিদপ্তরকে একাধিকবার চিঠি দিয়ে অধ্যক্ষ ডরমিটরি ভবন সম্পর্কে অবহিত করা হলেও তারা কোন ব্যবস্থা নেয়নি। জেলা প্রশাসককে বিষয়টি অবহিত করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট দপ্তরের দ্রুত হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনি। তিনি আরো জানান, অনার্স কোর্স চালু আছে এমন কলেজ অধ্যক্ষের জন্য ২২শ স্কয়ার ফুট মাপে ডুপ্লেক্স দ্বিতল ভবন করার নিয়ম রয়েছে। কিন্তু ঝালকাঠি সরকারী কলেজ অধ্যক্ষের জন্য নির্মিত ডরমিটরি ভবনটি ১১শ স্কয়ার ফুটেরও কম। পারিপার্শিক অবস্থার কারণে ডরমিটরি ভবনটি ব্যবহারের সম্পুর্ণ অনুপযোগী বলেও ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
Leave a Reply