নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ জীবন বড় না সম্পত্তি বড় এভাবেই ডা: আমিনুল হকের পরিবারকে সন্ত্রাসীরা অব্যাহত হুমকী প্রদান করে আসছে। এতে জীবনের চরম নিরাপত্তাহীনতায় বসবাস করছেন ডা: এ.কে, এম আমিনুল হক ও তার পরিবার। এরআগে বরিশাল নগরীর বাসভবনে ঢুকে ডা : আমিনুলের পুত্র বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের ব্যারিষ্টার প্রমিথ আমিনূল পরশকে হত্যার উদ্দেশ্যে কুপিয়ে জখম করে। এ ঘটনায় বরিশাল কোতয়ালী মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। যার মামলা নং ৮২,জিআর ৬৯১/২০২০। এ বিষয়টি পুলিশ কমিশনার মোঃ শাহাবুদ্দিন খাঁনকে অবহিত করার পর যেন সেই হামলাকারী সন্ত্রাসীদের দাপট যেনো আগের চেয়ে আরো দিগুন বেড়েছে। ভুক্তভোগী ডা: আমিনুল হকের সম্পত্তি দখল নেয়ার মিশনে মত্ত রয়েছে হামলাকারীরা। এতে কেউ বাধা হয়ে দাড়ালেই তার প্রাণ কেড়ে নেয়ার হুমকি দিচ্ছে সন্ত্রাসীরা। ভুক্তভোগী পরিবার ডা: আমিনুল হকের অভিযোগ, মের্সার্স হাবিব স্টোরের স্বত্তাধিকারী ইউনুছ আমার ক্রয়কৃত শাজাহান চৌধুরীর বাড়ির সম্পত্তি জোরপূর্বক দখল করার অংশ হিসেবে গত ২৩ অক্টোবর রাতে আমার পুত্র ব্যারিষ্টার প্রমিথ আমিনূল পরশের ওপর বর্বর হামলা চালায়। সন্ত্রাসীদের ব্যাপারে ডা: আমিনুল হক বলেন, ইউনুছই সন্ত্রাসী দখলবাজের ভূমিকায় রয়েছে। এই ইউনুছ ও তার সাঙ্গপাঙ্গরা এখনও আমাকেসহ আমার পরিবারকে নানান কায়দায় হুমকি দিয়ে আসছে। এমনকি ইউনুছ আমার কাছে ৩০ লাখ টাকা চেয়েছে। পাশ্ববর্তী দোকানদার খোকন ৩ লাখ টাকা চেয়েছে, দোকানদার বাকী চেয়েছে ৩ লাখ টাকা। তাদের নির্ধারিত টাকা দিলে দোকান ঘর ছেড়ে দেয়ার কথা বলে।
ডা: আমিনুল হক বলেন, ২০১৮ সালের ফেব্রয়ারী মাস থেকে শাজাহান চৌধুরীর বাড়ির সম্পত্তি ক্রয় করি। সম্পত্তি ক্রয়ের পর থেকে ইউনুছসহ অন্যন্য দোকানদাররা আমার সাথে কোন ধরণের চুক্তিতে আবদ্ধ হয়নি। এবং তারা কোন ভাড়া টাকাও দেয়নি। তারা জোরপূর্বক আমার ক্রয়কৃত সম্পত্তিতে থেকে নানান ধরণের ষড়যন্ত্র করে আসছে। ওদিকে, ইউনুছ সম্পত্তির মালিক দাবী করলেও তার কাছে সংবাদকর্মীরা কাগজপত্র দেখতে চাইলে তিনি কাগজপত্র দেখাতে ব্যর্থ হন।
প্রসঙ্গত : বরিশাল নগরীর প্রাণকেন্দ্র সদর রোড লাগোয়া শাজাহান চৌধুরীর বাড়ির বাসিন্দা বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজের সাবেক প্রফেসর ও সেভ হেলথ হসপিটাল ইনস্টিউিট’র চীফ কনসালটেন্ট ডা: এ.কে, এম আমিনুল হকের পুত্র ব্যারিষ্টার প্রমিথ আমিনূল পরশ। ডা: এ,কে, এম আমিনুল হকের পুত্রের ওপর সন্ত্রাসী হামলার ঘটনার অভিযোগে হামলাকারীদের হোতা হিসেবে ব্রাউন কম্পাউন্ড’র মৃত: আলহাজ্ব নাজির আহমেদ এর পুত্র ইউনুছ মিয়াকে চিহিৃত করা হয়। অপর হামলাকারীদের মধ্যে রয়েছে মো: নুরে আলম খোকন, নীরব হোসেন,বাকী, মো: তৌহিদুল ইসলাম, মো: রহমান,তানভীরসহ অজ্ঞাতনামা ১০/১২ জন। সন্ত্রাসী হামলার শিকার ব্যারিষ্টার প্রমিথ আমিনূল পরশ এর পিতা ডা: এ.কে, এম আমিনুল হক অভিযোগে বলেছেন, ২০১৮ সালের ২২ই ফেব্রয়ারী শাজাহান চৌধুরীর বাড়ির স্বত্তাধিকারী ফজলে মাশরুর খানের কাছ থেকে এওয়াজ বদল করে কোতয়ালী থানাধীন সদর রোডস্থ জেএল নং ৪৯,খতিয়ান ১২১৪,দাগ নং ১২৬৭ এর হাবিব স্টোর,মধুবন ট্রেডার্স এবং মেটাল বাজার দোকান ও গোডাউনের এসএ,বিএস রেকর্ডের মালিক হয়ে সরকারি খাজনা পরিশোধ করে আসতেছি। ইউনুছ মিয়া ও বাকী পূববর্তী মালিক ফজলে মাশরুর খানের কাছ থেকে ২০১৪ সালের ১ ডিসেম্বর এক বছরের চুক্তি করে উপরোক্ত দোকান ঘর উচ্ছেদযোগ্য মাসিক ভাড়া নেয়। এবং চুক্তির মেয়ার শেষ হয়। উক্ত চুক্তির মেয়াদ শেষ হলে নতুন করে কোন চুক্তিপত্র করেনি। আমি উল্লেখিত জমির মালিক হওয়ার পর হতে ইউনুছ, মো: নুরে আলম খোকন, নীরব হোসেন,বাকীকে নোটিশ প্রদান করলে তারা কোন দোকান ঘর খালি না করে জোরপূর্বক দখল করে আছে। আমি বিভিন্ন তারিখ ও সময়ে আমার মালিকাধীন দোকান ঘরে উপস্থিত হয়ে বহুতল দালান তৈরি করার জন্য দোকান ঘর, গোউাউন ছেড়ে দেয়ার জন্য বললে ইউনুছসহ অন্যান্য আসামীরা ভাড়ায় সন্ত্রাসী এনে আমাকে বিভিন্ন ভয়ভীতি ও খুন জখমের হুমকি প্রদান করে আসছে। এজন্য এর আগে থানায় একটি সাধারন ডায়েরি করি। যার নং ১২৬৩,তারিখ : ২৩-১০-২০২০ ইং। এরইধারাবাহিকতায় ২৩ অক্টোবর সন্ধ্যায় ইউনুছের নেতৃত্বে আসামীরা রড, লাঠি-সোটাসহ সদর রোডস্থ শাজাহান চৌধুরীর বাড়িতে বেআইনি জনতাবদ্ধে উপস্থিত হয়ে আমার মালিকানাধীন সাইনবোর্ড ভাঙচুর করে নিয়ে যায়। পরবর্তীতে রাত ৮টার দিকে ওই আসামীরা ঘটনাস্থলে এসে আমাকে এবং আমার স্ত্রীকে উদ্দেশ্যে করে কূরুচিপূর্ণ ভাষায় গালিগালাজ কর। একইসঙ্গে আমাদেরকে বাসা থেকে নেমে যেতে বলে সন্ত্রাসীরা। এতে আমার ছেলে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের ব্যারিষ্টার প্রমিথ আমিনূল পরশ প্রতিবাদ করলে ইউনুছ ইট ও রড দিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে তাঁর দিকে অগ্রসর হয়। যার ভিডিও ফুটেজ সিসিটিভি ক্যামেরায় রেকর্ড হয়। ভাড়াটিয়া ইউনুছের হামলায় আমার পুত্র ব্যারিষ্টার প্রমিথ আমিনূল পরশ’র মাথার তালুর পিছনে আঘাত লাগে। অপর আসামীরা ইট ও লোহার রড দিয়ে আমার পুত্রের ডান পার্শ্বের ঘারে এবং ডান হাতের বাহুসহ শরীরের বিভিন্নস্থানে আঘাত করে ফাটা ও ফুলা জখম করে। এছাড়া অন্যান্য আসামীসহ অজ্ঞাতনামা আসামীরা আমার পুত্রের ওপর হামলা করে। একই সময়ে আসামীদের মধ্যে কেউ আমার পুত্রের পকেট থেকে তাঁর ব্যবহৃত আইফোন এক্স ম্যাক্স ( যার মূল্য ১ লাখ ১০ হাজার টাকা) কেড়ে নেয়। হামলার সময়ে আমার পুত্রের ডাকচিৎকারে আমিসহ কয়েকজন ঘটনাস্থলে জড়ো হলে আসামীরা হুমকী প্রদর্শন করে প্রকাশ করে যে, ভবিষ্যাতে যদি আমাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করে সেক্ষেত্রে আমাকে ও আমার পুত্রের প্রাণ কেড়ে নিবে।