রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:২৩ পূর্বাহ্ন

উপ-সম্পাদক :: দিদার সরদার
প্রধান সম্পাদক :: সমীর কুমার চাকলাদার
প্রকাশক ও সম্পাদক :: কাজী মোঃ জাহাঙ্গীর
যুগ্ম সম্পাদক :: মাসুদ রানা
সহ-সম্পাদক :: এস.এম জুলফিকার
প্রধান নির্বাহী সম্পাদক :: মামুন তালুকদার
নির্বাহী সম্পাদক :: সাইফুল ইসলাম
ব্যবস্থাপনা সম্পাদক :: আবুল কালাম আজাদ
সংবাদ শিরোনাম :
দুই দিনের সফরে আজ বরিশাল আসছেন অতিথি গ্রুপ অব কোম্পানির এমডি লায়ন সাইফুল ইসলাম সোহেল  পিরোজপুর ভান্ডারিয়ার যুব মহিলা লীগ নেত্রী জুথি গ্রেফতার গৌরনদীতে তিন দফা দাবি আদায়ে ছাত্রদলের বিক্ষোভ মিছিল উপজেলা প্রশাসনকে ১৫ দিনের আল্টিমেটাম গ্রেনেড হামলার মামলা থেকে তারেক রহমানসহ বিএনপি নেতারা খালাস পাওয়ায় গৌরনদীতে আনন্দ মিছিল বরিশালের বাকেরগঞ্জসহ চারটি থানা এবং উপজেলায় নাগরিক কমিটি গঠন   আওয়ামী লীগ ও শেখ হাসিনা বিহীন বাংলাদেশ শান্তিতে থাকবে, এটা অনেকেরই ভালো লাগেনা-এম. জহির উদ্দিন স্বপন তারেক রহমানের বিজ্ঞ নেতৃত্বের কারণে শেখ হাসিনাকে পালিয়ে যেতে বাধ্য করেছি-এম. জহির উদ্দিন স্বপন গৌরনদীতে দৈনিক যুগান্তরের বিরুদ্ধে বিড়ি শ্রমিক ও ব্যবসায়ীদের প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ মিছিল দুষ্টামিটাও ছিল যেমন স্পর্শকাতর, খেসারাতটাও দিতে হল তেমনি ভয়ঙ্কর বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী সাংস্কৃতিক দলের ৫ সদস্যের বরিশাল মহানগরে আহ্বায়ক কমিটি গঠন
দুর্গাসাগরে ঝুলন্ত সেতু নির্মাণ পরিবেশ-প্রকৃতিকে গলা টিপে হত্যার নামান্তর

দুর্গাসাগরে ঝুলন্ত সেতু নির্মাণ পরিবেশ-প্রকৃতিকে গলা টিপে হত্যার নামান্তর

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ বরিশালের ঐতিহ্যবাহী এবং ঐতিহাসিক দুর্গাসাগর দীঘি ঘিরে জেলা প্রশাসন ও পরিবেশবাদীরা মুখোমুখি অবস্থানে রয়েছে। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে দুর্গাসাগরের মাঝখানে অবস্থিত টিলার সাথে কাঠের ঝুলন্ত ব্রীজ নির্মাণকে ‘দৃষ্টিনন্দন’ উল্লেখিত করা হলেও আপত্তি জানিয়েছেন পরিবেশবাদীরা। পরিবেশবাদীরা দাবী করেছেন, প্রাকৃতিক সৌন্দর্য বিনষ্ট করে কৃত্রিম সেতু নির্মাণ হবে দুর্গাসাগরের পরিবেশের সাথে শত্রুতা। জেলা প্রশাসনের গৃহিত উদ্যোগের অনেকগুলো ভালো। আবার অনেকগুলো বাণিজ্যিক চিন্তার পরিকল্পনা বলে মনে হচ্ছে।
(০৮ নভেম্বর) রবিবার পরিবেশবাদী সংগঠনগুলোর বরিশালের প্রতিনিধিবর্গ দূর্গাসাগর দীঘি পরিদর্শণ শেষে এসব কথা বলেন। তারা জানিয়েছেন, শীঘ্রই দুর্গাসাগরের টিলার সাথে পাড়ের সংযোগে কাঠের সেতু নির্মাণ পরিবেশগত দিক থেকে বিবেচনা করে দেখার জন্য স্মারকলিপি প্রদান করা হবে। দুর্গাসাগরের জীববৈচিত্র নষ্ট করে সেতু নির্মাণ এবং বাণিজ্যিক স্থাপনার বিরোধিতা করে আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণা করবেন বলেও জানান।
তবে জেলা প্রশাসন থেকে জানানো হয়েছে, দুর্গাসাগরকে আরও আকর্ষণীয় পর্যটন জোন হিসেবে গড়ে তুলতে পর্যটন কর্পোরেশনের মাধ্যমে উন্নয়ন পরিকল্পনা গহণ করা হয়। যার মধ্যে বিশ্রামাগার, পর্যবেক্ষণ টাওয়ার, ফুল বাগান, পিকনিক সেড ও শপিং কমপ্লেক্স। ২৫০ কেভিএ সাবস্টেশন স্থাপন এবং সংযোগ লাইটিং সাবস্টেশন, সোলার সিস্টেম স্থাপন, ওয়াইফাই স্থাপন, ম্যুরাল/ভাস্কর্য স্থাপন, কার পার্কিং ও সংস্কার, নতুন পার্কিং এরিয়া নির্মাণ, সীমানা প্রাচীর পুনঃনির্মাণ, প্রবেশ গেট পুনঃনির্মাণ, ড্রেনেজ ব্যবস্থা, স্যানিটারি ও পানি সরবরাহ, ক্ষতিগ্রস্ত পুকুর ল্যান্ডিং সংস্কার, ডাক হাউজ নির্মাণ, নিরাপত্তা কক্ষ নির্মাণ, কৃত্রিম ফোয়ারা স্থাপন, থ্রিডি মুভি থিয়েটার স্থাপন, ক্যাবল কার স্থাপন করার পরিকল্পনাও রয়েছে। এসব প্রস্তাবনা বাস্তবায়ন হলে দুর্গাসাগরে পর্যটকদের বেশি আকর্ষণ করবে। তবে নদী খাল বাঁচাও আন্দোলন কমিটির বরিশালের সদস্য সচিব কাজী এনায়েত হোসেন শিবলু মনে করেন, চারদিকে এতো সোলার লাইট, পিকনিক পার্টি, ইভেন্ট। তাতে তো আর অতিথি পাখি থাকবে না। তিনি বলেন, যে স্থান থেকে ব্রিজ করার পরিকল্পনা নিয়েছে সেটা বাস্তবায়ন হলে দুর্গাসাগরের প্রাকৃতিক পরিবেশের সর্বনাশ হবে। এটা কোনভাবে চান না পরিবেশবাদীরা। দীঘির মধ্যে ব্রিজ করার এমন পরিকল্পনাবিদদের সরে যেতে হবে। এটা বিনোদন কেন্দ্র নয়, প্রকৃতি ও পরিবেশের অভয়াশ্রম। তিনি বলেন, দুর্গাসাগরকে রক্ষায় চলতি সপ্তাহেই তারা প্রধানমন্ত্রীর দ্বারস্থ হবেন।
সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক) বরিশালের সদস্য শুভংকর চক্রবর্তী বলেন, দুর্গাসাগরকে আকর্ষনীয় করার নামে যেসব ইট-পাথুরে পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে তা হলো প্রকৃতির অভয়ারন্য এই ঐতিহাসিক স্থাপনাকে ন্যাড়া করে কৃত্রিম উন্নয়ন চালানো হচ্ছে। বরিশালবাসী দুর্গাসাগরের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যকে ধ্বংস করে পাথরের স্থাপনা চায় না। সেখানকার টিলার গাছপালা কেটে ছাফ করা হয়েছে। অনেক স্থাপনা করা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে হৈচৈ পড়েছে। সরেজমিনে দেখে মনে হলো দুর্গাসাগরের বুক চিরে ব্রিজ করা মোটেই যুক্তিযুক্ত নয়।
গ্রীন মুভমেন্টের জেলা সমন্বয়ক কাজী মিজানুর রহমান ফিরোজ বলেন, উন্নয়নের নামে দুর্গাসাগরের পরিবেশ ধ্বংস করে যা করা হচ্ছে তা দেখে আমি হতভম্ব হয়ে গেছি। এটা উন্নয়ন নয়, পরিবেশকে গলা কেটে হত্যার চেষ্টা। দীঘির মাঝখানে টিলার গাছ, বনজঙ্গল সাফ করে জীববৈচিত্র ধ্বংস করা হয়েছে। টিলায় তো মানুষ নয়, জীবজন্তু থাকবে। সেখানে কেন গোলঘর করতে হবে? তিনি বলেন, এতো কিছুর পর দুর্গাসাগরের বুক চিরে ব্রিজ করলে এর নৈঃস্বর্গিক সৌন্দর্য বিনষ্ট হবে। এটি বন্ধ করা উচিত।
বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের জেলা সভাপতি রনজিৎ দত্ত বলেন, দুর্গাসাগরে উন্নয়নের নামে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য নষ্ট করার মহা আয়োজন চলছে। ব্রিজ হলে এটি বাণিজ্যিক কেন্দ্র হবে। তাতে প্রকৃতির লাভ কি? আমরা চাই না প্রকৃতি ধ্বংস করে বাণিজ্যিক কিছু গড়ে উঠুক।
বরিশালে দর্শনীয় স্থাপনার মধ্যে যে কয়টি স্থান রয়েছে তার মধ্যে অন্যতম দুর্গাসাগর দীঘি। ২৪০ বছরের পুরানো এই দীঘিকে ঘিরে অজস্র কিংবদন্তি চালু রয়েছে। প্রাকৃতিক ও পরিবেশের অপার মেলবন্ধনে দুর্গাসাগর হয়ে উঠেছে বরিশালের প্রতীক। দুর্গা সাগরের মূল আকর্ষণ মূল দীঘির মাঝখানে উচু টিলা। যে টিলার সাথে পাড়কে সম্পৃক্ত করতে সম্প্রতি কাঠের সেতু নির্মাণে উদ্যোগ নিয়েছে জেলা প্রশাসন। সেই খবর জানাজানি হলে সামাজিক মাধ্যমে সমালোচনার ঝড় ওঠে। আপত্তি জানান পরিবেশবাদীরা। উল্লেখ্য, বরিশাল শহরের উপকণ্ঠে স্বরূপকাঠি-বরিশাল আঞ্চলিক সড়কের মাধবপাশায় দুর্গাসাগরটি অবস্থিত। এর জলাভূমির আকার ২৭ একর। পার্শবর্তী পাড় ও জমিসহ মোট আয়তন ৪৫.৪২ একর। ১৭৮০ সালে চন্দ্রদ্বীপের পঞ্চদশ রাজা শিব নারায়ন এই বিশাল জলাধারটি খনন করেন। তার স্ত্রী দুর্গামতির নামানুসারে এর নামকরণ করা হয় দুর্গাসাগর। ১৯৭৪ সালে তৎকালিন সরকারের উদ্যোগে দিঘীটি পুনরায় সংস্কার করা হয়। বর্তমানে ‘দুর্গাসাগর দিঘীর উন্নয়ন ও পাখির অভয়ারন্য’ নামে একটি প্রকল্পের অধিনে বরিশাল জেলা প্রশাসন দিঘীটির তত্ত্বাবধায়ন করছে।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..



Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




© All rights reserved © 2017 Dokhinerkhobor.Com
Desing & Developed BY ThemesBazar.Com