নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ ঢাকায় চিকিৎসা নিতে গিয়ে হাসপাতাল কর্মীদের মারধরে নিহত মো. আনিসুল করিমের বিষয়ে পুলিশের ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি হাবিবুর রহমান বলেছেন, মানসিক সমস্যা হওয়ায় তাকে প্রথমে সরকারি মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটে নেয়া হয়েছিল। সেখানে তাদের কাছে পরিবেশ-পরিস্থিতি মানসম্মত মনে না হওয়ায় ভালোমানের প্রাইভেট হাসপাতালে চিকিৎসার প্রত্যাশায় ওই হাসপাতালে গিয়েছিল। সেখানে নেয়ার পরবর্তীতে বাস্তবতা ভিডিওতে দেখা গেছে। সবাই জানে। আনিসুল করিমের পদোন্নতি না হওয়াও তার মানসিক সমস্যার একটি কারণ কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিভাগীয় কোনো কারণে তার মানসিক সমস্যা হয়নি। পদোন্নতি না হওয়ার বিভিন্ন কারণ ছিল। চাকরিতে পদোন্নতি কারো আগে হয় কারো পরে হয়, এটি একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া, আইনি প্রক্রিয়া। এছাড়া পুলিশের নিজস্ব কোনো মানসিক হাসপাতাল নেই।
তাই পুলিশের যে কেউ যেকোনো হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে পারে। পরিবারটির পাশে দাঁড়ানোর বিষয়ে তিনি বলেন, তার স্ত্রীকে যাতে সম্মানজনক পেশা বা কর্মের সঙ্গে নিয়োজিত করা যায় সেটা পুলিশের আইজিপি মহোদয় চিন্তা করেছেন এবং আমাদের নির্দেশ দিয়েছেন। আনিসুল করিমের বাসায় আসার পর সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেছেন। এর আগে তিনি নিহত হওয়া গাজীপুরের কৃতীসন্তান বরিশালের সিনিয়র সহকারী সুপারের গাজীপুরের বাসায় এসে নিহতের স্ত্রী শারমিন সুলতানা, বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধা ফাইজ উদ্দিন আহমেদসহ পরিবারের সদস্যদের বাংলাদেশ পুলিশ সার্ভিস এসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে সমবেদনা ও সহমর্মিতা জানান। এ সময় ডিএমপি’র অতিরিক্ত কমিশনার রেজাউল করিম, জিএমপি কমিশনার খন্দকার লুৎফুর কবির, নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার জায়েদুল আলম, নরসিংদীর পুলিশ সুপার প্রলয় কুমার জোয়ারদার, গাজীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রাসেল শেখ ও আমিনুল ইসলামসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।
নিহত আনিসুল করিম শিপনের শৈশব ও কৈশোর কেটেছে গাজীপুর জেলা শহরের বরুদা এলাকায়। ছোটবেলা থেকেই অত্যন্ত মেধাবী আনিসুল শহরের রানী বিলাসমনি সরকারি উচ্চ বালক বিদ্যালয়ে লেখাপড়া করেছেন। খেলোয়াড়ও ছিলেন তিনি। জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণ রসায়ন ও অনুপ্রাণ বিজ্ঞানের ৩৩তম ব্যাচের মেধাবী শিক্ষার্থী ছিলেন। ৩১তম বিসিএস পরীক্ষার মাধ্যমে পুলিশ বিভাগে যোগ দেন জেলার কাপাসিয়া উপজেলার আড়াল গ্রামের এই কৃতী সন্তান। বরিশাল মহানগর ট্রাফিক পুলিশের সহকারী কমিশনার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। সেখানে কর্মরত থাকাবস্থায় মানসিক সমস্যায় ভুগছিলেন আনিসুল। এরপর তাকে চিকিৎসা দিতে নেয়া হয় রাজধানীর মাইন্ড এইড হাসপাতালে। সেখানে চিকিৎসা নিতে গিয়ে হাসপাতাল কর্মীদের মারধরে নিহত হন তিনি।
Leave a Reply